রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন
বিনোদন ডেস্ক : ঈদ মানেই সিনেমা হলগুলোতে নতুন সিনেমা মুক্তি ও দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। কারণ, এখনো বাংলাদেশে একশ্রেণির দর্শক আছেন, যারা ঈদের সময়টায় নতুন সিনেমা হলে বসে দেখতেই বেশি পছন্দ করেন। তবে করোনার কারণে গেল দুই বছর সেভাবে ঈদে মুক্তি দেওয়া হয়নি নতুন সিনেমা। এবার করোনা সংক্রমণ কমে আসায় আবারও সিনেমা হলগুলোতে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বিগ বাজেটের বেশ কিছু সিনেমা। দুই বছর পর আবারও সেই চিরচেনা রূপ ফিরে পাবে হলগুলো౼এমনটাই আশা করছেন হল মালিক ও পরিচালকরা।
সাধারণত সারা বছরের সেরা সিনেমাগুলোই ঈদ উপলক্ষ্যে মুক্তি দেওয়া হয়। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে নায়ক-নায়িকা ও পরিচালক বেশ খানিকটা প্রভাব ফেলে। বিগত বছরগুলোয় ঈদ উপলক্ষ্যে এমন অনেক সিনেমা মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আর দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করে সেই সিনেমাগুলো হয়েছিল ব্যবসাসফল। ঈদ উৎসবে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছিল সেসব সিনেমা। আজ কথা বলব সেসব সিনেমা নিয়ে, যেগুলো ঈদ উপলক্ষ্যে হয়েছিল ব্যবসাসফল।
কেয়ামত থেকে কেয়ামত
নব্বই দশকের জনপ্রিয় ও ব্যবসা সফল সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। একসঙ্গে প্রথম অভিনয় করে সে সময় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন নবাগত সালমান শাহ ও মৌসুমী। ঈদে মুক্তি দেওয়া এ সিনেমা সে সময় বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিল। সে সময়ের বোম্বের ব্লক বাস্টার ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’-এর কপিরাইট এনে পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান নির্মাণ করেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিটি। ১৯৯৩ সালের অন্যতম সেরা ছবি তো বটেই, এখনো অন্যতম জনপ্রিয় ছবি হয়ে আছে এই ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিটি।
দেনমোহর
শফি বিক্রমপুরী পরিচালিত ছবিটি সালমান-মৌসুমী জুটির শেষ ছবি ছিল। সালমান শাহ ও মৌসুমী জুটি অভিনীত প্রতিটি ছবিই সুপারহিট হয়েছে। তেমনি একটি ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘দেনমোহর’। এ সিনেমাটিও কপিরাইট নিয়ে বানানো হয়েছিল। দুই পরিবারের বিরোধের গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটি ১৯৯৫ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছিল। ঈদের ছবিগুলোর মধ্যে সর্বাধিক ব্যবসা করে ছবিটি।
স্বামী কেন আসামি
১৯৯৭ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছিল সেই বছরের সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল ছবি ‘স্বামী কেন আসামি’। মনোয়ার খোকন পরিচালিত এই ছবির শিল্পীতালিকায় রয়েছেন জসীম, শাবানা, ঋতুপর্ণা, চাঙ্কি পান্ডে ও আহমেদ শরীফ। শাবানার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা এসএস প্রোডাকসন্স প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় এই সিনেমাটি নির্মাণ করে। তবে সেবার ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় নির্মাণ করা হয়েছিল সিনেমাটি।
হঠাৎ বৃষ্টি
১৯৯৯ সালের ঈদুল ফিতরে বিটিভিতে প্রিমিয়ার করা হয় অভিনেতা ফেরদৌস ও কলকাতার প্রিয়াংকা ত্রিবেদী অভিনীত সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। টেলিভিশনে মুক্তির পরই ব্যাপক সাড়া পায় সিনেমাটি। সিনেমাটির এত জনপ্রিয়তা দেখে পরে সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়া হয় ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়ার পরও ছবিটি ব্যাপক ব্যবসাসফল হয়।
বিয়ের ফুল
১৯৯৯ সালের ঈদুল ফিতরের হিট ছবি রিয়াজ-শাবনূর-শাকিল খান অভিনীত ‘বিয়ের ফুল’। বলিউডের ‘দিওয়ানা’ ছবির গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এ সিনেমা পরিচালনা করেন মতিন রহমান। ছবিটি সে সময়ের ঈদে সুপারহিট ব্যবসা করে। রিয়াজ-শাবনূর জুটির আলোচিত এ সিনেমাটি ঈদের আরও অনেক বিগ বাজেট সিনেমার ভিড়ে ভালো স্থান করে নিতে সক্ষম হয়।
ব্যাচেলর
তারকাবহুল সিনেমা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’। টেলিভিশন থেকে শুরু করে বড় পর্দার অনেক তারকার উপস্থিতি ছিল এ সিনেমায়। ‘ব্যাচেলর’ প্রথমে ঈদ উপলক্ষ্যে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় টেলিভিশনের পর্দায়। পরে বলাকা হলে মুক্তি দেওয়া হলে টানা কয়েক মাস ধরে চলে সিনেমাটি এবং ব্যবসাসফল হয়। ছবিতে অভিনয় করে অপি করিম ২০০৩ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।
শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ
শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ সিনেমার মধ্য দিয়ে দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালনায় আসেন ২০০১ সালে। ঈদে ব্যাপক ব্যবসা সফলতা পায় রিয়াজ ও শাবনূর অভিনীত এ সিনেমা। সে বছরের আরও অনেক বিগ বাজেট সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এ সিনেমাটি সুপার হিট হয়।
এক টাকার বউ
‘এক টাকার বউ’ শাকিব খানের প্রথম কোনো সিনেমা, যা প্রচণ্ড ঢাকঢোল পিটিয়ে ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছিল। সে বছর এই ছবিতে শাকিব খান সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। মূলত শাকিব-শাবনূর জুটির ‘আমার প্রাণের স্বামী’র ছবির সফলতার পর ‘এক টাকার বউ’ নির্মাণ করা হয়েছিল। শিশুশিল্পী দীঘি অভিনীত ছবিটি মুক্তির আগেই বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। যার প্রভাব পরবর্তী সময়ে সিনেমা হলগুলোতে পড়েছিল এবং ব্যবসাসফল হয়েছিল।
নাম্বার ওয়ান শাকিব খান
২০১০ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’। নাম্বার ওয়ান কথাটির সঙ্গে শাকিব খানের পরিচিতি মূলত এখান থেকেই। এ ছবিতে শাকিবের বিপরীতে দেখা গেছে অপু বিশ্বাসকে।