1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

মৌলভীবাজার ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের মে দিবস পালন

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১ মে, ২০২২
  • ২০০ বার পঠিত

স্টাফর রিপোর্টার :: মহান মে দিবসের ঐতিহাসিক শিক্ষাকে সামনে রেখে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করার দৃপ্ত শপথ আর অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখা আন্তজাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস “মহান মে দিবস” পালন করে। ১ মে রবিবার সকাল ১১ টায় সংগঠনের চৌমুহনাস্থ(কোর্টরোড) কার্যালয়ে মহান মে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহবায়ক রতœাঙ্কুর দাস জহর। ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাসের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক দেলোয়ারা বেগম, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশ সুমন, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ চট্টঃ ২৪৫৩ এর সভাপতি মোঃ সোহেল মিয়া, চা-শ্রমিক সংঘের জেলা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক শ্যামল অলমিক, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘ রেজিঃ নং চট্টঃ ২৮৬৪ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ মতিউর রহমান, কমলগঞ্জ উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘ রেজিঃ নং মৌলঃ৩২ এর নেতা রমজান আলী, মৌলভীবাজার হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ খোকন, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, রাজনগর চা বাগানের চা-শ্রমিকনেতা দুলন অলমিক ও হেমরাজ লোহার, চাতলাপুর চা-বাগানের নারায়ন নাইড়–, হোটেল শ্রমিকনেতা মোঃ শাহিন মিয়া, জামাল মিয়া ও সোহেল আহমেদ সুবেল, রিকশা শ্রমিকনেতা মোঃ জসিমউদ্দিন প্রমূখ। আলোচনা সভা শেষে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন ১৮৮৬ সালে রক্তঝরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণি সামাজিক স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী ৮ ঘন্টা শ্রম, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম ও ৮ ঘন্টা বিনোদনের দাবি প্রতিষ্ঠিত করে। ৮ ঘন্টা শ্রম দিবস এবং মহান মে দিবসে ছুটি কারো দান নয় বরং শ্রমিক শ্রেণির রক্তস্নাত পথে অর্জিত অধিকার। বক্তারা শ্রমিক শ্রেণির মহান শিক্ষা গুরু কমরেড এঙ্গেলেসের বক্তব্য উদৃত করে বলেন ‘মে দিবসের সংগ্রাম শুধু মাত্র ৮ ঘন্টা শ্রম দিবসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, মে দিবসের সংগ্রাম শ্রমিক শ্রেণির মজুরি দাসত্ব ব্যবস্থার উচ্ছেদের অবিচ্ছেদ্য সংগ্রাম।’ তাই আজকে প্রতিক্রিয়াশীল মহলসহ বিভিন্ন মহলের উদ্দেশ্যমূলকভাবে মে দিবস পালনের বিপরীতে শ্রমিকশ্রেণিকে মে দিবসের বিপ্লবী চেনতাকে ধারণ করে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।
আলোচনা সভায় বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন চাল-ডাল, তেল-লবন-চিনি, মাছ-মাংস, ডিম-দুধ, শাক-সবজিসহ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে সরকারের মন্ত্রীরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে সাফাই গাইছেন ‘দেশের জনগণ নাকি ঘুমের মধ্যে বড়লোক হয়ে যাচ্ছে’ ‘মানুষ বেশি খাচ্ছে বলে চালের দাম বাড়ছে’ ‘মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে বলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে’ ইত্যাদি। সরকারে পশ্রয়ে সোয়াবিন তেলের রেকর্ড মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণের পকেট কাটছে, অথচ সরকার তারপরও তথাকথিত উন্নয়নের সাফাই গাইছে। সরকার ডিজেল, কেরোসিন, সিলিন্ডার গ্যাস, গাড়িভাড়া বৃদ্ধির পর এখন গৃহস্থালীতে ব্যবহার্যসহ সকল ক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের মূল্য ও নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি করে শ্রমিক, শ্রমজীবী, স্বল্প আয়ের মানুষ ও ব্যাপক জনগণের জীবন ও জীবিকাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আয় বাড়েনি। করোনাকালে যখন নতুন করে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে চলে গেছেন তখন সরকার জনগণের জীবন ও জীবিকাকে উপেক্ষা গ্যাস-বিদ্যুত-জ্বালানিসহ সকল ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রত্যাহার করতে চাচ্ছে। বক্তারা সরকারের ভর্তুকি প্রত্যাহারের নীতির সমালোচনা করে বলেন ভর্তুকি প্রত্যাহার নয়, বরং খেলাপি ঋণ আদায়, বিদেশে পাচার কৃত অর্থ ফিতর এনে এবং ভ্যাটের আওতা কমিয়ে উচ্চ বিত্তের উপর প্রত্যক্ষ করের হার বৃদ্ধি করে ভর্তুকির পরিমান বৃদ্ধি করতে হবে, জনগণের জন্য স্বল্প মূল্যে সর্বাত্মক রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
সভায় বক্তারা আরও বলেন সমগ্র পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা এক গভীর ও সামগ্রিক সংকট, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ, মুদ্রাযুদ্ধ, আঞ্চলিক ও স্থানিক যুদ্ধের প্রক্রিয়ায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে। বিশ্ব বাজার বন্টন পুনর্বন্টন নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো যে যুদ্ধ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে ধারাবাহিক তৎপরতা চালাচ্ছে তারই অংশ হচ্ছে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন। এই আগ্রাসনের লক্ষ্য হচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্ব গঠিত সামরিক জোট ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ নীতি মোকাবেলা করে স্বীয় লক্ষ্য হাসিল করা। অন্যদিকে তাইওয়ান স্বাধীনতার ইস্যু নিয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও বৃহত সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্যে অগ্রসরমান পুঁজিবাদী চীনের মুখোমুখি অবস্থান ও তাইওয়ান স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তাকে চীনের রেড লাইন ঘোষণা বিশ্ব পরিস্থিতিকে উত্তেজনাকর করে তুলেছে। আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে বিশ্বযুদ্ধের সম্ভবনা মূর্ত হয়ে উঠেছে। সাম্রাজ্যবাদীরা জোরদার করছে সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতিকে। তাদের এই যুদ্ধ প্রস্তুতি থেকে আমাদের দেশও মুক্ত নয়। ভূ-রাজনৈতিক ও রণনীতিগত গুরুত্বের প্রেক্ষিতে ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশকে নিয়েও আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব সুতীব্র। বক্তারা বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ উন্মদনার বিরুদ্ধে বিশ্ব শ্রমিকশ্রেণি ও জনগণের ন্যায় সঙ্গত সংগ্রাম বেগবান করার আহবান জানান।

 

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..