আর্ন্তজাতিক ডেস্ক :: চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ের মানুষ এখন লকডাউনে বন্দি। তবে করোনা রুখতে সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপ মানতে পারছেন না নগরবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে হতাশা, ক্ষোভ আর প্রতিবাদের বিভিন্ন ধরনের ভিডিও।

আবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনে। নতুন করে প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘জিরো কোভিড’ নীতিতে ফিরে গেছে সে দেশের প্রশাসন।

২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের শহর সাংহাইতেও তাই নেমে এসেছে কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ। ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না কেউ। কারো করোনা ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে তাকে। সবার খাবার এবং চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। কিন্তু সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠছে প্রায় নিয়মিত।

পর্যাপ্ত খাবার এবং জরুরি চিকিৎসা নিয়ে অসন্তুষ্ট মানুষ তাই নানাভাবে তুলছেন মুক্তির দাবি, স্বাধীন জীবনে ফিরে যাওয়ার অধিকারের দাবি। সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নানাভাবে মনের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।

জনবহুল শহরের প্রযুক্তিবান্ধব জনগণের ছড়িয়ে দেয়া ভিডিও দেখামাত্র সরিয়ে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্ট করছে প্রশাসন। তারপরও ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন ভিডিও। চোখের পলকে ভাইরালও হচ্ছে সেগুলো।

এক ভিডিওতে এক নারীকে দেখা যায় লাউড স্পিকারে সবার প্রতি প্রতিবাদ না করার আহ্বান জানাতে। তিনি বলছিলেন, ‘সাংহাইতে লকডাউন দেয়ার বিষয়টি আসলে বহিঃশক্তির ষড়যন্ত্র। আশা করি সবাই ভুল আর ঠিক কাজের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন এবং তা বুঝে ঠিক উপায়ে সঠিক দাবিগুলো জানাবেন।’

‘ভয়েস অব এপ্রিল’ শিরোনামে একটা অডিও-ও ভাইরাল হয়েছে। চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তা কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নিলেও আন্তর্জাতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তা এখানো ভেসে বেড়াচ্ছে। অডিওতে শোনা যায়, বাবা-মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়া এক শিশুর কান্না আর অনেক মানুষের কণ্ঠে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ এবং চিকিৎসাসেবার দাবি।

গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেক ভিডিওতে অভিনব উপায়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংহাইয়ের এক এলাকার মানুষ। জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে থালাবাসনসহ রান্নার নানা সামগ্রী বাজাতে বাজাতে তারা বলছিলেন, ‘আমাকে আমার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিন।’