1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩৫ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

সয়াবিন তেলের রেকর্ড দামবৃদ্ধির পরিস্থিতি কেন তৈরি হয়েছে?

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৬ মে, ২০২২
  • ৩১১ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট :: এবার ঈদের আগে বাজারে সয়াবিন তেল পর্যাপ্ত পাওয়া যাচ্ছিলো না।
বাংলাদেশে সয়াবিন তেলের মূল্য রেকর্ড ভেঙ্গে লিটার প্রতি ১৯৮ টাকা ধার্য হওয়ার পর থেকে ভোক্তা পর্যায়ে ক্ষোভ আর অসন্তোষ দেখা গেলেও বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ব বাজারে দামের রেকর্ড হওয়ার কারণেই এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।

তবে গত বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধির সাথে ইন্দোনেশিয়া পাম তেলে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকেই নিয়মিত দাম সমন্বয় করলে হুট করে লিটার প্রতি ৪০ টাকা বাড়তি দেয়ার ধাক্কা গ্রাহকদের ওপর পড়তো না বলেই মনে করছেন গবেষক ডঃ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

ব্যবসায়ী এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য করতে চাননি।

তবে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ঈদে মানুষের ব্যয়ের কথা চিন্তা করে ঈদের আগে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব সরকার অনুমোদন করেনি।

যদিও আগেই বেশি দামে বিশ্ব বাজার থেকে তেল সংগ্রহ করতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।

বিশ্ব বাজারে কেমন পরিস্থিতি
বিশ্ব বাজারে এক বছর ধরেই তেলসহ নিত্যপণ্যের অনেক কিছুর দাম বাড়তির দিকেই ছিলো।

বিশেষ করে ২০২০ সালের শেষ দিকে এসে সারা বিশ্বেই এই প্রবণতা দেখা যায়।

তবে এই পরিস্থিতির অবনতি হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর।

এই দুটি দেশ থেকে তেল সরবরাহে ঘাটতি হওয়ায় ব্যাপক চাপ পড়ে পাম ও সয়াবিন তেলের ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে পাম তেলের অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া গত ২৮শে এপ্রিল পাম তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।

অবশ্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আগে শেষ মুহূর্তে তিনটি জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পেরেছিলো।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, এসব তেল এখন হয়তো খালাস প্রক্রিয়া চলছে যা বাজারে এলে বাজারে তেল কিছুটা সহজলভ্য হবে।

তিনি বলেন, এপ্রিলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ২২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে এবং প্রতি মেট্রিক টন তেলের দাম রেকর্ড ১৪৯৭ ডলার পর্যন্ত উঠেছে। এপ্রিলের শেষ দিকে তেলের দাম ছিলো ১৯১৯ ডলার।

তবে প্রতি মেট্রিক টন ১৯১৯ ডলারে কেনা তেলের সাথে জাহাজভাড়াসহ নির্ধারিত অন্য খরচ যোগ করলে বাংলাদেশে লিটার প্রতি ১৯৮ টাকা নির্ধারণ অযৌক্তিক হয়নি বলেই মনে করেন এই গবেষক।

কতটা বাড়লো এবং বাজারে এখন দাম কত
নতুন দাম অনুযায়ী সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতলের দাম এখন ৯৮৫ টাকা। আগে এর দাম ছিল প্রায় ৭৬০ টাকা।

এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের দাম হবে এখন ১৮০ টাকা, যা এতদিন ১৪০ টাকা ছিল।

নতুন মূল্য তালিকা অনুযায়ী, পরিশোধিত পাম সুপার তেল প্রতি লিটারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ১৭২ টাকা, যা এতদিন ছিল ১৩০ টাকা।

সেই হিসাবে পাম তেলের দাম বেড়েছে ২৪%। আর সয়াবিনের দাম খুচরায় বেড়েছে ২৮%, বোতল জাতের ক্ষেত্রে ২৫%।

দাম বাড়লেও বাজারে তেল কম কেন?
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ব্যবসায়ীরা ঈদের আগেই দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

সরকার সেই প্রস্তাব গ্রহণ না করায় হয়তো তেল বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ করা হয়নি।

আবার বিশ্ব বাজারে দামের উত্থান পতনের সাথে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের মনোভাব বিবেচনা করে অনেক ব্যবসায়ী আমদানির জন্য এলসি খুলতে আগ্রহী হননি।

তবে এখন সরকার মোটামুটি যৌক্তিক দাম ঠিক করায় অনেকেই এলসি খুলতে উৎসাহিত হবেন এবং ইতোমধ্যে আসা সয়াবিন ও পাম তেল দু একদিনের মধ্যে বাজারে আসলে বাজারে তেলের যে সংকট সেটি আপাতত কাটবে বলে একজন ব্যবসায়ী মন্তব্য করেছেন।

তিনি তার নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

বাড়তি দাম দিয়েও তেল মিলবে তো?
মগবাজারের গৃহিনী দিলরুবা বেগম বলছেন, তেলের নতুন দাম শুনে তিনি রীতিমত আঁতকে উঠেছিলেন।

“বৃহস্পতিবার খবরটা শুনে অবিশ্বাস্য লাগছিলো। এক লিটারে ৪০ টাকা কেমনে বাড়ে। আমরা তো আর বিশ্ববাজার বুঝি না। পরিবারের আয় রোজগার বাড়ে নাই। এমনিতে সবকিছুর দাম বাড়তি গত কয়েক মাস। এর মধ্যে তেলের দামের এই অবস্থা,” বলছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

তেলের বদলে পানি খান- এমন হাস্যরসও করছেন অনেকে ক্ষোভ থেকে।

ডঃ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, যে দাম ঠিক করা হয়েছে সেই দামেও যেন অন্তত মানুষ তেল পায় সেটা নিশ্চিত করাই হবে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

“এখানে মনিটরিং ব্যবস্থা দুর্বল। আমদানি করা তেল যেন বাজারে থাকে এবং মানুষ যেন পায় সেটা প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারির মাধ্যমে সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে দ্রুততর সময়ে পণ্য বাজারে আনাও নিশ্চিত করতে হবে,” বলছিলেন তিনি।

মি. মোয়াজ্জেম বলছেন, সরবরাহ ঠিক থাকলে কেউ অযাচিতভাবে দাম বাড়াতে পারবে না।

যদিও ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলছেন যে তারা মনে করছেন দাম বাড়ার কারণে এখন বাজারে এমনিতেই চাহিদা কিছুটা কমে আসবে, যা বর্তমান সংকট মোচনে ভূমিকা রাখবে।

খরার কারণে সয়াবিন উৎপাদন কমে গেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনায়
বাংলাদেশে সয়াবিন তেল মূলত আমদানি করা হয় ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা থেকে। কিন্তু সেখানে খরার কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে রাতারাতি বেড়েছে সয়াবিনের দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের মূল্য দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গেছে। আগে টন প্রতি ৭৫০ ডলার করে খরচ পড়লেও এখন সর্বশেষ সেটি ১৯০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশে ভোজ্য তেল হিসাবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় সয়াবিন তেল। এই কারণে এই তেলের মূল্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সরকার নির্ধারণ করে থাকে।

এর বাইরে পাম অয়েল, সূর্যমুখী, জলপাই তেল বা সরিষার তেল ভোজ্য তেল হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

সূর্যমুখী তেলের অন্যতম উৎস রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় উন্নত দেশগুলো সূর্যমুখী তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।

ফলে সেখানে বিকল্প হিসেবে সয়াবিন বিক্রি বেড়েছে। এটিও সয়াবিন তেলের সংকট বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..