সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: খাগড়াছড়ির রামগড়ে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রামগড় থানায় যৌন নিপীড়নের দায়ে মামলা করেছে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. বেলায়েত হোসেন (৪২)। তিনি লামকুপাড়া এলাকার নুরুল হুদার ছেলে। তিনি ১নং রামগড় ইউনিয়নে থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুল ছুটির পর অভিযুক্ত শিক্ষক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং তার অপর বান্ধবীকে শ্রেণি কক্ষে অবস্থান করতে বলে। তার সহপাঠীকে শ্রেণিকক্ষের প্রথম সারিতে বসায় এবং ভুক্তভোগী পঞ্চম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে পেছনের সারিতে বসায়। পরে তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং শারীরিকভাবে যৌন হেনস্তা করে। এ সময় শিক্ষার্থী শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকায় অভিযুক্ত শিক্ষক তার হাতে ১০০ টাকা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বাড়িতে এসে ঘটনাটি তার মা কে জানায়। তখন তার মা স্থানীয়দের বিষয়টি অবহিত করলে আজ শুক্রবার রামগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
মামলার বাদী ছাত্রীর মা বলেন, ‘মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে কাঁদতে কাঁদতে তাকে ঘটনার বিষয়টি জানান।’ ছাত্রীর মা ওই শিক্ষকের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে জানান, স্কুলে বহিরাগত ছেলেদের আড্ডা, আশপাশে বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলে চার্জ দেওয়াতে বাধা দেওয়ায় ওই ছাত্রীকে দিয়ে ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসিয়েছে।
রামগড় উপজেলা ত্রিপুরা সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও রামগড় পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শ্যামল ত্রিপুরা বলেন, ‘ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবক বিষয়টি তাদের সংগঠনকে জানায়। সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সহায়তায় শুক্রবার ভুক্তভোগী ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তার মা রামগড় থানায় শিক্ষক বেলায়েতে হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী দেবী জানান, স্কুল ছুটির পর বাসায় এলে সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান তাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, তাদের স্কুলের প্রায় সব ছাত্রছাত্রীই ত্রিপুরা উপজাতি। এদিকে, ছাত্রী নিপীড়নের এ ঘটনায় স্কুল কেচ ম্যাপ এলাকার উপজাতীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না দিলে কোন ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠাবে না বলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসিরা জানিয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামগড় থানার ওসি মোহাম্মদ শামসুজ্জজামান জানান, এ ঘটনায় রামগড় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৪। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।