শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: বিদ্যুতের পাইকারি দাম এক লাফে ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১৬ পয়সা করা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। অর্থাৎ পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বাড়তে পারে।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে সরকার কি বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকি থেকে সরে আসছে? জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাইকারি বিদ্যুতে আর্থিক ঘাটতি প্রায় ৩০ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। এই ঘাটতি সমন্বয়ে সরকারি ভর্তুকি বিবেচনা করা হয়নি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) তো আরও বেশি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। বিপিডিবির প্রস্তাব ছিল পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩ টা ৩৯ পয়সা বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৬ পয়সা নির্ধারণের।
এ অবস্থায় বুধবার (১৮ মে) গণশুনানি করে বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট বিপিডিবির প্রস্তাবের চেয়ে ৪০ পয়সা কমিয়ে ৮ টাকা ১৬ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে বিইআরসি। অর্থাৎ বিইআরসির সুপারিশ সরকার কার্যকর করলে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বাড়বে। ফলে দাম বাড়বে খুচরা পর্যায়েও।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জেষ্ঠ্য সহসভাপতি ও ও জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম গণশুনানিতে উপস্থিত হয়ে বলেন, মূল্য হার ঘাটতি বিবেচনায় নিয়ে পাইকারি বিদ্যুতের রাজস্ব চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে এবং মূল্য হার ৮ টাকা ৫৮ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ঘাটতি সমন্বয়ে সরকারি ভর্তুকি বিবেচনা করা হয়নি।
শামসুল আলম প্রশ্ন তুলে বলেন, তার মানে যখন বিপিডিবি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তৈরি করে, তখন সরকার ভর্তুকি দিতে রাজি হয়নি? সরকার কি ভর্তুকি দিতে সম্মত না?
ক্যাবের এই জ্বালানি উপদেষ্টা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের বর্তমানে সরকারের যে ভর্তুকি রয়েছে, অব্যাহত থাকবে কিনা তা জানা দরকার। এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর বিপিডিবির কর্তারা দিতে পারেননি।
যদিও বিইআরসি’র চেয়ারম্যান আবদুল জলিল শুনানিকালে বলেন, কমিশন তার আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় প্রস্তাবের উপর গণশুনানি করছে। পাইকারি দাম বাড়লে খুচরাতেও প্রভাব পরবে। সরকার যদি ভর্তুকি দেয় তাহলে দামের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
জানা যায়, সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই তখন খুচরা পর্যায়েও দাম বেড়েছিল। তখন থেকে প্রতি ইউনিটে সরকার ৪৭ পয়সা ভর্তুকি দিচ্ছে।
গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষেদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ভর্তুকি আমরা অনেক ক্ষেত্রে দিচ্ছি। কিন্তু সেটা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।