বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আত্মসমর্পণের আবেদন করেছেন হাজী সেলিম। আবেদনে যে কোনো শর্তে জামিনের চেয়েছেন। আজ রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে এ আবেদন করেন হাজী সেলিমের আইনজীবী। দুপুর ২টার দিকে আদালতে সশরীরে উপস্থিত হবেন হাজী সেলিম। এরপর এ আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়ে আরও দুইটি আবেদন করেছেন। আবেদনে হাজী সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ উল্লেখ করেন, ‘২০১৬ সালে ওপেন হার্ট সার্জারির সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন যাবত বাক-শক্তিহীন অবস্থায় রয়েছেন হাজী সেলিম। তিনি দেশ ও বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। জেলে থাকলে চিকিৎসার অভাবে ও বাক-শক্তিহীনতার কারণে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ কারণে যে কোনো শর্তে তাঁর জামিন আবেদন করছি। জামিন পেলে তিনি পলাতক হবেন না। তাই আপিল শর্তে জামিন মঞ্জুর করা যেতে পারে।’
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাঁকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত-৭। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। আপীল শুনানি শেষে গত বছর ৯ মার্চ বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের কারাদণ্ড কমিয়ে ১০ বছর বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জুনের দায়ী এই সাজা দেওয়া হয়। তবে তথ্য গোপনের অভিযোগে বিচারিক আদালতে তাঁর যে তিন বছরের সাজা হয়েছিল তা বাতিল করা হয়।
বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। ওইদিন রায়ে বলা হয় রায় প্রকাশের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্টের ওই রায়ে বিচারকের স্বাক্ষরের পর তা এ বছর ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়। এরপর হাজী সেলিম আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করার আবেদন করলে গত ২৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ তা আবেদন খারিজ করেন। রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে তাঁকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই হিসেবে ২৫ মের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় ১৪ কোটি ৬৫ লাখ ৬২ হাজার ৫০৩ টাকার অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও আট কোটি ৭০ লাখ ৯ হাজার ৭৫৮ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাঁকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তাঁর সাজা বাতিল করেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।