1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

এটাই কি জীবন! – সোয়েব মোহাম্মাদ

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৫ মে, ২০২২
  • ৭৩৭ বার পঠিত

“এই শুনছো,উঠো।বেলা হয়েছে,বাজারে যাবে না?”
স্ত্রীর অনেক ডাকের পর আমার ঘুম ভাঙলো।চোখ ঘুষতে ঘুষতে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,”কি হয়েছে বলোতো।এতো ডাকাডাকি কেনো করছো?”

কি গো ভুলে গেলে?আজ শুক্রবার। বাজারে যেতে হবে তো নাকি?

বিরক্তিকর মুখ করে ব্যাগ হাতে নিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত চাকুরীর পিছনে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত। শুক্রবারে যে একটু ঘুমাবো তা আর হয়ে উঠে না। অপর্যাপ্ত ঘুম রেখে ছুটে যেতে হয় বাজারে।

বাসা থেকে প্রায় এক কিলোমিটারের পথ কাঁচা বাজার। শহরের রাস্তায় আধা কিলোমিটার পথ কেউ পায়ে হাঁটতে চায় না। আমি সেখানে এক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বাজার করতে যাই।
কিন্তু আসার সময় আর পায়ে হেঁটে আসা সম্ভব হয় না। দুই হাত ভর্তি থাকে বাজার এজন্য দশ টাকা ভাড়ায় অটোরিকশা করে আসতে হয়।

প্রায় ষোলো মিনিট ফুটপাত ধরে হাঁটার পর পৌঁছে গেলাম কাঁচা বাজার এলাকায়। বাজারে ঢোকার মুখে একটি চায়ের দোকান পড়ে। লোকটি অসম্ভব রকমের ভালো চা বানাতে পারে। এখানে সস্তা মূল্যে তৃপ্তি সহকারে চা খাওয়া যায়।এমনিতেই শুক্রবার সকালে বাসায় চা খাওয়াটা বরাবর খুব কম হয়।ম্যানিব্যাগ বের করে খুচরো টাকা খুঁজতে লাগলাম,পেয়েও গেলাম। চিনির মূল্য চোখের পলকে যেহারে বাড়ছে বোধহয় বছর খানেকের মধ্যে চা খাওয়া ছেড়ে দিতে হয়।সকাল বেলার বাসি পেটে শুধু চা খাওয়া সম্ভব হয় না এতে নিশ্চিত বমি।তাই চায়ের সাথে পাঁচ টাকার দুই পিচ বড় সাইজের বিস্কুট নিলাম।

চা শেষ করে রওনা হলাম বাজার দর্শনে। আমাকে দেখতে পেয়ে এক সবজিওয়ালা হ্যাঁক পাড়লো,”এই যে রেজা ভাই এদিকে আসেন।”
তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,” কি খবর শহিদুল ভাই কেমন আছেন?”
জিজ্ঞেসের প্রতিউত্তর করলো,”আমি ভালো আছি।তা আপনার কি অবস্থা তাই বলেন?”

“হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি।”

“কি লাগবে বলুন তো রেজা ভাই?”

একটু অপেক্ষা করুন।এই বলে ম্যানিব্যাগ থেকে বাজারের লিস্ট বের করলাম। বাজার করতে এসে বহুবার অনেক কিছু ছেড়ে গেছি আবার যা প্রয়োজন নেই সাথে করে তা-ও নিয়ে গেছি। এজন্য স্ত্রী প্রতি শুক্রবার বাজারে আসার আগে হাতে লিস্ট ধরিয়ে দেয়।

লিস্ট হাতে নিয়ে সবার উপরে দেখতে পেলাম পটল।
পটলে হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম।সবজিওয়ালা বলে উঠলো,”আরে রেজা ভাই পটল দেখতে হবে না একদম পুক্ত, টাটকা।আজ সকালেই গাড়ি থেকে নেমেছে।

জিজ্ঞেস করলাম,”তো ভাই পটল কতো করে?”

জবাবে উত্তর দিলো,”আশি টাকা কেজি।”

দাম শুনে চোখ কপালে উঠে গেল।বলে কি!গত সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজিতে নিয়ে গেলাম।এক সপ্তাহে এতো বাড়ালো!সবজিওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম,”গত সপ্তাহে ৬০ কেজিতে নিয়ে গেলাম আর এক সপ্তাহে এতো হলো কি করে?”

“কি বলবো ভাই। আমরা যা দামে কিনি তার থেকে পাঁচ দশ টাকা লাভ করি।উপর থেকে বাড়ালে আমি কি করবো বলেন তো?”

কিছু না বলতেই জিজ্ঞেস করলো তাহলে পটল দেই?

না থাক,দাম বেশি হচ্ছে।

আচ্ছা পাঁচ টাকা কম দিয়েন।

না না লাগবে না।

লিস্টের ২ নম্বরে বেগুন। আচ্ছা ভাই বেগুন কতো করে কেজি?

৭০ টাকা

বলেন কি এক সপ্তাহে দশ টাকা বাড়লো?

হ্যাঁ ভাই।

আলু কতো?

পৌত্রিশ টাকা কেজি।

সব কিছুর কি দাম বেড়েছে?

হ্যাঁ রেজা ভাই।

উপহাস করে প্রশ্ন করলাম,”কৃষকরা কি গ্ৰীষ্মকালে আলু লাগাই যে আলুর শেষ সময় বলে আলু সংকটে দাম বেড়ে গেছে?”

সবজিওয়া শহিদুল আমার প্রশ্নের কোন উত্তর খুঁজে না পেয়ে থতমত খেয়ে গেল।

জিজ্ঞেস করলাম,”কাঁচা মরিচ কতো করে?”

ওটা আশি টাকা ভাই।

মাথায় রাগ এসে চাপলো।শহিদুলকে উদ্দেশ্য করে বললাম,”ধূর মিয়া যেটা চাই সেটার দাম বেশি। তাহলে কিনবো কি?”

“আমার দোষ কোথায় বলেন? আমি সামান্য খুচরা বিক্রিতা।”

“লাউয়ের পিচ কতো করে?”

ওটা চল্লিশ হয় আপনি পৌত্রিশ দিয়েন।

আচ্ছা দিন।এ বলে লাউ ব্যাগে তুলে ম্যানিব্যাগ থেকে পঞ্চাশ টাকার নোট বের করে দিলাম। শহিদুল বিস্মিত চোখে জিজ্ঞাসা করলো,”একি ভাই আর কিছু লাগবে না?”
হ্যাঁ লাগবে। তবে আপনি যে দাম রাখছেন এ দামে আমি কিনতে পারবো না।

কি যে বলেন না রেজা ভাই। আপনি আমার পুরাতন কাস্টমার। আপনার থেকে দাম বেশি ধরে কাস্টমার হারানোর ইচ্ছে আমার নেই।অন্য দোকানে গেলে এর থেকে বেশি দামে কিনতে হবে।

আচ্ছা দেখা যাবে আপনি টাকা বুঝিয়ে নেন।

আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না তো গিয়েই দেখেন?
এই বলে মন খারাপ করে আমার হাতে পনেরো টাকা ফেরত দিল।

বগুড়া শহরে আসার দুই বছর কেটে গেল। কাঁচা বাজারের বেলায় শহিদুলের থেকে সব থেকে বেশি কিনি।আজ দামটা একটু বেশিই ধরছে এজন্য দোকান পাল্টাতে হবে।

পরের দোকানে গিয়ে দেখি তার থেকে ভয়ংকর অবস্থা। একেকটার দাম জিজ্ঞেস করতে লাফিয়ে উঠছি।ধীরে ধীরে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরলাম।সব খানে একয় দাম নয়তো শহিদুলের থেকে বেশি।বাধ্য হয়ে আবার শহিদুলের কাছে ফিরে আসতে হলো।তার কাছে আসতেই হাসি হাসি মুখ করে জিজ্ঞেস করলো,”কি ভাই দাম কমলো কিছু?”

আমি কোন উত্তর না করে পুরো লিস্ট তার হাতে ধরিয়ে দিলাম।আলু,পটল,করলা,বেগুন,কাঁচা মরিচ,লাউ সহ আরো কিছু জিনিসে দাম আসলো
৪৭৫ টাকা।

কাঁচা বাজার শেষ করে রওনা দিলাম মুদির দোকানে। ফুটপাতের গা ঘেঁষে সেগুলো গড়ে উঠেছে।একটা দোকানে গিয়ে ঢুকলাম বেশ বড়সড় দোকান। লিস্ট খুলে দেখলাম চাল,তেল সহ বিভিন্ন মশলা জাতীয় দ্রব্যর কথা লিখা আছে।

তেলের দাম যে হারে বেড়েছে বছর খানেকের মধ্যে এক লিটারে একমাস চালাতে হবে বলে মনে হয়।তেলের মূল্য নিয়ে জনগণ বেশ সমালোচনা করলো।কই কমার তো কোন গন্ধ পেলাম না!

চালের কথা কি আর বলবো বুদ্ধি বয়েস থেকে শুনে আসছি মাছে ভাতে বাঙালি। চালের দাম যে হারে বছরের পর বছর বেড়ে চলছে বোধহয় এই প্রবাদ আর কয়েক যুগ পরে উঠে যাবে।

মুদির দোকানে চাল,মশরুরের ডাল,তেল সহ বিভিন্ন প্রকার মশলা কিনে গুণে গুণে ৫২১ টাকা দিয়ে বেরিয়ে আসলাম।এখনো কেনার শেষ হলো কই! বাড়িতে বউ বাচ্চা আছে সপ্তাহে দুই একদিন তাদের মুখে ভালো খাবার তুলে দিতে না পারলে কি চলে!মাংসের যে চওড়া মূল্য খাসির মাংসে হাত দেওয়া যায় না। গরুর মাংস তার থেকে কম কিসে?৬০০/৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি চলছে, গতবছর ৫০০ শতে ছিল। একবছরের ব্যবধানে ১০০ টাকা বেশি।

বাজার যে পরিমাণে বেড়েছে,এতো ওজন হাতে করে নিয়ে মাংস কেনা সম্ভব নয়।একটা অটোরিকশাকে ডাক দিলাম,কাছে আসতেই জিজ্ঞেস করলাম,”কালীবাড়ি যাবেন?”

“হ যামু”

“ভাড়া কতো?”

লোকটি আমার ব্যাগের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলো,”ত্রিশ টাকা দিয়েন।”

মেজাজ গরম করে বলে উঠলাম,”আপনারা সবাই কি আমাদের মারার চেষ্টা করছেন?দশ টাকার জায়গায় একবারে ত্রিশ!”

রিকশাওয়ালা উত্তর দিলো,”সব কিছুর দাম বাড়ছে আমার পেট চলবো কেমনে?আপনের মতো আমিও তো একজন মানুষ,আমারও পেটে ক্ষুধা আছে,যন্ত্রণা আছে।”এই বলে সে চলে গেল।

এরপর একটি অটোরিকশা ঠিক হলো ২০ টাকায়।যুক্তিসংগত ভাবে বললো,”দ্যাখেন স্যার আপনার জিনিস পত্র পুরো রিকশা দখল করছে।এখানে কি আর যাত্রী নিতে পারমু? আপনি দুই যাত্রীর ভাড়া দিয়েন।”
আমি কিছু না বলে উঠে পড়লাম। বললাম,”ভাই আপনি আমাকে সামান্য সময়ের জন্য মাংস হাটিতে থামিয়ে দিবেন।”

সে সম্মত হলো।

সপ্তাহে এক কেজি মাংস কেনার সামর্থ্য আমার নেই।আধা কেজি ৩২৫ টাকায় কিনে উঠে পড়লাম রিকশায়। সামান্য পথ চলতে রিকশাওয়ালাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম ভাই আর একটা জিনিস নিতে ভুলে গিয়েছি,যদি একটু দাঁড়ান খুব উপকার হতো।বেকারি থেকে বিস্কুট নিতে হবে।রিকশাওয়ালা কিছু না বলে গাড়ি থামিয়ে দিলো।

গাড়ি থেকে নেমে বিস্কুট কিনলাম ২০০টাকা কেজি দরে। জানুয়ারিতে ১২০-১৫০ টাকা কেজিতে সব ধরনের বেকারি বিস্কুট পাওয়া যেত।ময়দা এবং তেলের দাম বৃদ্ধির অযুহাতে একবারে ২০০ তে গিয়ে ঠেকেছে।বিস্কুট নিতেই মনে পড়লো আমার ছেলে রাজিবের জন্য দুধ কিনতে হবে।সামান্য দূরে দুধ বিক্রি হচ্ছে।খানিকটা দৌড়ে গিয়ে বোতলের দাম সহ ৭০ টাকা লিটারে দুধ কিনলাম। এখন না কিনলে বিকেলে আসতেই হতো তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে পাঁচ টাকা বেশিতে কিনে ফেললাম। রাকিব এবার ক্লাস সিক্সে পড়ে। তার জন্য বেশি কিছু কিনতে পারি না। টিভিতে কতো ধরনের এড দেখি হরলিক্স থেকে শুরু করে কতো ধরনের পুষ্টিকর খাবারের কথা তারা শুনায়। কিন্তু আমার পক্ষে রেগুলার ঐইসব কিনে খাওয়ানো সম্ভব হয় না।যে এক লিটার দুধ নিলাম এর পুরোটাই শুধু রাজিবকে খাওয়ানো হয়।

দুধের বোতল ও বিস্কুট হাতে নিয়ে উঠে পড়লাম অটোরিকশায়।অটোরিকশা চলছে যান্ত্রিক গতিতে। হিসেব করে দেখলাম আজ সতেরশো টাকার কাছাকাছি বাজার করা হয়ে গেল।মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে লাগলাম প্রতিমাসে যে হারে বাজার মূল্য বাড়ছে। আমার মতো সামান্য বেতনভুক্ত চাকুরী জীবির জীবন কেমন করে কাটবে?
অনার্স পাশ করার পর চাকুরী খুঁজতে খুঁজতে হয়রান ছিলাম।সরকারি চাকুরিকে বলা চলে সোনার হরিণ সেটা ভাগ্যে ক্রমে দুই হাজারে একজনের হয় নাকি সন্দেহ,ওরকম ভাগ্যে আমার নেই। খুঁজতে খুঁজতে দীর্ঘ এক বছর পর চাকুরী পেলাম গ্ৰামীণ ব্যাংকে। শুরুতে বেতন ছিল সাত হাজার পাঁচশ। বছরে পর বছর ধরে এসে এবং পদ উন্নতির ফলে এখন সেটি ১৪ হাজারে এসে ঠেকেছে।জন্মভূমি ছেড়ে এসে চাকুরী করছি একুশ কিলোমিটার দূরে।বাসা ভাড়া, কারেন্ট বিল,গ্যাস বিল, নিজেদের খাওয়া খরচ সহ বিভিন্ন খুঁটি নাটি খরচে মাস শেষে সাত হাজারের বেশি চলে যায়। এরকম বাজার অবস্থা থাকলে মাস শেষে খরচের খাতায় আট হাজারে গিয়ে ধাক্কা খাবে। বাড়িতে মা বাবা আছে।বাবা অসুস্থ,কোন কাজ করতে পারেন না। আগে ছোট একটি ফাক্টরির ম্যানেজার ছিলেন।তার এই চাকুরির উপর পুরো পরিবার চলতো। এখন তাদের জন্য আমাকে মাসে মাসে দুই হাজার করে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া লাগে।তার উপর ছেলের প্রাইভেট বেতন দিতে হয় পনেরশো।তিনজনে মিলে একটি ব্যাচ করেছে এজন্য প্রাইভেট খরচটা একটু কম।সরকার প্রাইভেট কোচিং এ অসুন্তষ্ট।ওদিকে স্কুলের এক গাদা শিক্ষার্থীর মধ্যে ভালো মতো পড়া শেখা অসম্ভব।একজন শিক্ষক প্রতিদিনের এক ঘন্টা ক্লাসে একগাদা শিক্ষার্থীদের পুরোটাকে কি আলাদাভাবে নজর দিতে পারবে?সবার বোঝার ক্ষমতা সেখানে থাকে না।ছেলের প্রয়োজনেই প্রাইভেটে দিতে হয়েছে।

সব মিলিয়ে মাস কাটে বারো হাজার টাকায়। থাকার মতো থাকে মাত্র দুই হাজার। সার দিন পরিশ্রম করে যদি সামান্য খাওয়া পড়ার মাঝে জীবনের মানে খুঁজা হয়,তাহলে এটাকে কি মানুষের জীবন বলে কি মনে করা উচিত?পশু আর আমার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?ওরা সারাদিন খাদ্যর সন্ধান করে বেড়ায় আর সেইদিক দিয়ে আমি খাদ্যর জন্য টাকার সন্ধান করে বেড়ায়।আমার মতো মানুষের অবস্থা পশুর থেকেও করুণ।

এই দুই হাজারে কি ভাবে ভবিষ্যত গঠন হবে! ছেলে বড় হয়ে উঠছে,বছর চারেক পর তাকে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াতে হবে।তার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন।
তাছাড়া মানুষের জীবন যন্ত্রের থেকেও অপক্ক কখন কার কি হয় বলা যায় না, আমাদের মধ্যে কেউ যদি গুরুতর কোন অসুখে পড়ে যায় তখন কি করবো?
কিভাবে সামাল দিব হসপিটাল খরচ,ঔষধ খরচ!
ওদিকে বাবার করা টিনশেডের বাড়িতে বসবাস করি দুই ভাই।প্লাস্টারে ফাটল ধরেছে। দেড় শতকে তিনটি ঘর আর সেখানে৭ জন মানুষের বসবাস,ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। আমাদের জন্য না হোক ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একটা বাসা করার খুব প্রয়োজন,তার জন্য যায়গা কিনতে হবে।আমাদের এলাকায় শতক প্রতি সর্বনিম্ন দেড়লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। কমপক্ষে আড়াই শতক জায়গার উপর বাড়ি দাঁড় করাতে হবে।এতো টাকা কতোদিনে জোগাড় করতে পারবো আল্লাহ ভালো জানেন।

বর্তমান জেনারেশন বিয়ের পর থেকে বাবা মাকে ভুলে যায়। খাবার দাবারের কথা তো দূরেই থাকলো,দিন অন্তর খুঁজ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ টুকু পর্যন্ত থাকে না। আমাদের চারদিকে চোখ বুলালে এমন অজস্র ঘটনা চোখে পড়বে।এর সমাধান হিসেবে নিজের কাছে থাকা চাই অনেক টাকার সংরক্ষণ।যাতে সন্তান না দেখালেও নিজের টাকায় জীবনের শেষ পর্যন্ত চালানো যায়।যেখানে জীবন বাঁচাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে সেখানে এতো কিছু কিভাবে করবো?হায় আল্লাহ কোন দিকে সামলাবো!চারদিক থেকে চিন্তা এসে খামচে ধরছে বুকে, অথচ কোন সমাধান চোখের সামনে নেই।এটাই কি জীবন?
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলতেই বুকের বাঁ পাঁজরে ব্যথা অনুভব করলেন রেজা সাহেব।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..