1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

যে ইউনিয়নে এখনও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক নেই

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৯ মে, ২০২২
  • ৪৭২ বার পঠিত

জুড়ী প্রতিনিধি :: জুড়ীর দক্ষিণ পূর্ব পাশের অবস্থিত গোয়ালবাড়ি ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের শেষে রয়েছে ভারতের সীমান্ত। সীমান্তঘেষা এই ইউনিয়নের লাঠিটিলা, লালছড়া, ডোমাবাড়ী, লঙ্গর খানা, নালাপুঞ্জি, রুপাছড়া সহ কয়েকটি গ্রামের ১০-১২ হাজার মানুষেরর বাস। তবে এসব এলাকায় এখন পর্যন্ত নেটওয়ার্ক নেই। অন্যান্য ডিজিটাল সেবা তো নেই-ই।

দেশ ডিজিটাল হচ্ছে। মোবাইলণ ফোন, ইন্টারেনট সেবা এখন পৌছে গেছে ঘরের ঘরে। অথচ কাল্পনিক মনে হলেও বাস্তব যে জুড়ীর এই ইউনিয়নটিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। করোনা পরিস্তিতির সময় সারা দেশে প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করেছে। এখানকার শিশুরা ছিল নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত।

স্থানীয় অভিভাবকদের দাবী, তাদের সন্তান যেন অত্যন্ত জরুরি নেটওয়ার্কের এই সুবিধাটি পায়। এছাড়া কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও নেই মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধা। সারা বাংলাদেশের মানুষ যেখানে ঘরে বসে ডিজিটাল সুবিধা পাচ্ছে, সেখানে এসব এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনসাধারণ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, উপজেলা কিংবা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইলের নেট ওয়ার্ক সেবা থাকলে ও এসব এলাকায় কোন টাওয়ার নেই। নেটওয়ার্ক দূর্ভোগের কারণে একাধিক বার জুড়ী উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও মিলেনি কোন সাড়া। এমনকি বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের বরাবর লিখিত চিঠি দিলে উনার সুপারিশে বিটিআরসি বরাবর চিঠি পৌছালে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ডিজিটাল যোগে বিশেষ করে প্রবাসীদের জন্য এটি দূর্ভোগ তৈরী করেছে।

মালয়েশিয়া প্রবাসী মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান বলেন, দেশে আমার পরিবার রেখে আমি প্রবাসে জীবনযাপন করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাসে একবার হলেও ফোনে কথা বলতে পারছি না। আমরা রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশের জন্য নিজের পরিবারের জন্য জীবিকা অর্জন করতেছি। আজ আমরা নেটওয়ার্কের এই বিশেষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

তিনি বলেন, প্রবাস থেকে দেশে নিজের পরিবারের সাথে আমার বাড়িতে সরাসরি কল দিয়ে কথা বলতে পারছি না। ইমো-হোয়াটসঅ্যাপে’র মাধ্যমে কথা বলাটা অনেক দূরের স্বপ্ন। তাই বর্তমান সময়ের সাথে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া যেন আমাদের গ্রামের মানুষ পায়। আমরা যেন প্রবাসে থেকে অন্তত পরিবারের সাথে একটু কথা বলতে পারি। এই ব্যবস্থা করার জন্য সরকার ও বেসরকারী নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলোর কাছে আমরা প্রবাসীরা জোরদাবি জানাচ্ছি।

সেখানকার প্রবাসীদের নিয়ে তৈরী সংগঠন প্রবাসী কল্যাণ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেন, আমরা কি শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের জনগণ নই? আমরা নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান চাই! কেন আমরা নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন থাকব?

তিনি বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার যখন কাজ করছে, ঠিক তখনি ডিজিটাল বাংলাদেশের সেবা থেকে বঞ্চিত আমরা! এলাকাগুলোতে নূন্যতম 2G নেটওয়ার্ক এখনও পর্যন্ত নেই। দেশের উন্নয়ন দিয়ে কি করবো আমরা যদি সামাজিক যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকি।

স্থানীয় শিক্ষার্থী কিবরিয়া আহমদ বলেন, নেটওয়ার্কে যতো ডিজিটাল সুযোগ সুবিধা আছে তা আমরা পাচ্ছি না। আমাদের নেটওয়ার্কের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে একটি মোবাইল টাওয়ারের সুব্যবস্থা করে দিলে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপকৃত হবো। পাশাপাশি আমাদের এলাকার প্রবাসীদের সুবিধা হবে।

স্হানীয় বাসিন্দা জুবের আহমেদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। সেখানে নেটওয়ার্কের মতো একটা প্রযুক্তি নেই! এটা কোন আহামরি কিছু নয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা চাইলে এটা সমাধান করতে পারেন। সারা দেশব্যাপী যখন করোনা মহামারি ছিল তখন দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা তখন ভার্চুয়াল মাধ্যমে পাঠদানে অংশগ্রহণ করে কিন্তু আমাদের এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।

স্থানীয় কৃষক উন্নয়ন সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা আমাদের এলাকার চাহিদা পূরণ করে প্রতিবছরে প্রায় ৩০ লক্ষ জাম্বুরা, ৫০ লক্ষ কমলা, ২৫ লক্ষ কাঁঠাল ও ৫ লক্ষ ছড়া কলা সহ অনেক রকমের ফসল রাজধানী ঢাকা চিটাগাং সহ দেশের বিভিন্ন যায়গায় পাঠাই। তবে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া পেলে আমরা এটাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো। আমরা যেন ডিজিটাল প্রযুক্তি নেটওয়ার্কের এই সুবিধা পাই।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার নির্বাচিত এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের মূল সমস্যা হচ্ছে নেটওয়ার্ক। এখানে জরুরি প্রয়োজনে কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। আমরা এই দূর্ভোগ থেকে মুক্তির জন্য জরুরি প্রয়োজন মোবাইল নেটওয়ার্কের।
তিনি বলেন, এখানে বিদ্যুৎ আছে এবং যোগাযোগের ব্যবস্থাও ভালো। তাহলে কি জন্য নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান হয়না?

গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ূম বলেন, আমার এই ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ৩নং ওয়ার্ডের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর প্রধান সমস্যা মোবাইল নেটওয়ার্ক। তারা নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান চায়। এখানে অনেক প্রবাসী পরিবারের দাবি মাসে একবার হলেও তাদের ছেলে সন্তান ও পরিবারের সদস্যের সাথে কথা বলার সুযোগ পায় তারা।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর সিলেট অফিসের জোনাল অফিসার (অপারেশন স্টেশন সিস্টেম চলতি দায়িত্ব) খুরশেদ আলম বলেন, জুড়ীর কিছু জায়গায় টাওয়ার নেই, আগামী জুনে নতুন প্রজেক্ট থেকে এসব টাওয়ারের জন্য কাজ শুরু হবে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..