সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থিত সব ধরনের হাট-বাজার, বালুমহল, পাথরমহল, ফেরিঘাটের ইজারা প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করাসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতি।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি। এতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসিক সম্মানী ৪০ ও মেম্বারদের ২০ হাজার টাকা করার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন বিল্লাল।
তিনি বলেন, সুদীর্ঘকাল ধরে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিরলসভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবা দিয়ে আসছে। কখনো কখনো সেবা দিতে গিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময় ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, মহামারিসহ বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেবা অব্যাহত রাখতে হয় তাদের। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখার কারণে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ বিভিন্ন সময়ের সরকারপ্রধানরা ইউনিয়ন পরিষদকে উন্নয়নের মূল কেন্দ্রবিন্দু বলে আসছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, কোনো সরকারই স্থানীয় সরকারের এই প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারেনি ও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
মো. বেলায়েত হোসেন বিল্লাল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১২ দফা দাবি নিয়ে এসেছি আমরা। সে সঙ্গে এসব দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির ১২ দাবি-
১. প্রশাসনিক ইউনিট আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই।
২. চেয়ারম্যানদের সম্মানী বৃদ্ধি করে চল্লিশ হাজার ও মেম্বারদের বিশ হাজার টাকা নির্ধারণ করা।
৩. ইউনিয়ন পরিষদ সমূহের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থিত সকল ধরনের হাট-বাজার, জলমহল, বালুমহল, পাথরমহল, সাইরাতমহল, ফেরিঘাট সমূহ ইজারা প্রদানের ক্ষমতা ও ইজারা লব্ধ আয় সমূহ ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব আয় হিসাবে প্রদান করা।
৪. ভূমি উন্নয়ন কর ১ শতাংশ হতে ২ শতাংশ এ উন্নীত করে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলের জমা প্রদান করা।
৫. জন্ম নিবন্ধনের আয় এবং বিবাহ নিবন্ধনের ফি ইউনিয়ন পরিষদে হস্তান্তর করা।
৬. ইউনিয়ন পরিষদের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সকল বরাদ্দ মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলে প্রদান করতে হবে।
৭. চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা হলে আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যানদের গ্রেপ্তার ও সাময়িক বরখাস্ত না করা।
৮. ক. গ্রাম আদালতের বিচারিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় মোকদ্দমায় পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা/ক্ষতিপূরণ আদায়ে ক্ষমতা প্রদান করা। খ. প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে একজন বেঞ্চ সহকারী ও একজন পিয়ন নিয়োগ প্রদান করা।
৯. ইউনিয়ন আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে একজন সহকারী পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব হিসেবে নিয়োগ দান করা।
১০. ইউনিয়ন পরিষদের ওপর ঊর্ধ্বতন মহলের সকল ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করা।
১১. ইউনিয়ন পরিষদকে গ্রাম পুলিশ নিয়োগের এবং অপসারণের পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা।
১২. ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বার কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে একটি অত্যাধুনিক পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ দেওয়া।