সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৫ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এমন কোনো আইন করা হয়নি যা সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টির জন্য এ আইন করা হয়নি। টেকনোলজির উন্নয়ন হয়েছে। এর মাধ্যমে যে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলোও মোকাবেলা করতে হবে। সেজন্য আমরা এ আইন করেছি। এই আইনের অপব্যবহার বন্ধে ইতোমধ্যে একটি কমিটি কাজ করছে। আগামীতে এর অপব্যবহার বন্ধ হবেই। মঙ্গলবার (৩১ মে) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত গণমাধ্যমকর্মী আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ডাটা সুরক্ষা আইন নিয়ে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলাও কমে যাচ্ছে। আবার মামলা করলে দ্রুত গ্রেফতার করা হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে অবস্থানটা নিয়েছি, এটা গ্রাউন্ড লেভেল পর্যন্ত যাচ্ছে, তাতে মিস ইউজ ও অ্যাবিউজ- এটা বন্ধ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার এমন কোনো আইন করবে না, যে আইন স্বাধীন সাংবাদিকতা কিংবা স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনের দায়িত্বকে খর্ব করে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণকে সেবা করতে এসেছি, এর মাধ্যমে যদি কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়, সেটা যদি জনগণ বলতে চায় আমরা সেটা শুনবো প্রতিকারের প্রয়োজন হলে আমরা সেটা করব। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের যেসব জায়গায় সমস্যা আছে, সেখানে সেখানে সংশোধনের কথা জানিয়েছিল আইনমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের রেসিডেন্স কো-অর্ডিনেটরের মাধ্যমে জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের হাইকমিশন ফর হিউম্যান রাইটসের অফিসের সাথে বৈঠক করেছি। আমরা দুই পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের দিক থেকে একটি কমিটি করে দেয়া হবে, তাদের দিক থেকে একটা কমিটি থাকবে। সারা বিশ্বের যে বেস্ট প্র্যাকটিস সেগুলো দেখব, দেখার পর কোনটা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রযোজ্য হয়, সেটা আমরা গ্রহণ করব। আমরা লেজিসলেটিভ সচিবের নেতৃত্বে একটা কমিটি করে দিয়েছি। ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আমার সাথে দেখা করে তাদের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো বলেছেন। আমি অবহিত হয়েছি। আমি মাননীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। আগামীকাল ১ জুন আমি তার সাথে বসবো। তিনিও বলেছেন আমরা এটা (ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট) পর্যালোচনা করব।’
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, কথা উঠেছে এই (ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট) আইনটির বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলাপ আলোচনা হয়নি। আমি নিশ্চিত করবো স্টেকহোল্ডারদের সাথে যেন আলোচনা করা হয়।
‘সারা পৃথিবীতে ডাটা প্রটেকশন আইন নিয়ে কি কি আছে এটা পর্যালোচনা করার জন্য আমি সব আইন আনাচ্ছি। যারা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাদের সাথে আমি আলাপ আলোচনা করছি।’
গণমাধ্যমকর্মী আইনের প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিকদের জন্য দরকার রয়েছে। তারপরও এই আইনের বিষয়ে আপনাদের বক্তব্যটা যাতে দিতে পারেন সেটার জন্য আমি তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সাথে ইতোমধ্যে কথা বলেছি। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকেও আমি বলে দেবো যাতে তারা সাংবাদিকদের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে আইনটি ফাইনাল করেন।
গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, বাংলাদেশে এমন কোনো আইন হবে না, যেটা স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সরকার চায় সংবাদমাধ্যমে শৃঙ্খলা থাক। ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত না করে সঠিক তথ্যদিয়ে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা থেকেই কিছু আইন থাকতে হয়। এই আইনে সাংবাদিকদের অবসরের বয়সসীমা নিয়ে এক প্রশ্নেন জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর বলার উদ্দেশ্য হলো, স্বেচ্ছায় কোনো সংবাদকর্মী চাইলে অবসরে যেতে পারবেন। তবে কোনো মালিক বাধ্য করতে পারবেন না। এ আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে, এ বিষয়ে আরো পরিষ্কার করে তথ্য সংযোজন করা হবে। আপনাদের সাথে আলোচনা করেই যেন এটি ঠিক করা হয় সেটি বলবো।
‘আপনারা তিনটি আইনের কথা বলেছেন। এর সাথে রয়েছে ওটিটি এবং বিটিআরসি রেগুলেশন, আমি সবগুলোর ব্যাপারে আলোচনার মধ্যে আছে।’ বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্ব ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক সংলাপ অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় করেন। সূত্র : ইউএনবি