সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: মাদকের কুফল উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, জীবনে ভুল করেও কখনো মাদকের সঙ্গে জড়িত হবে না। কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তি জীবনে সফল হয়েছে এমন নজির নেই।
তিনি বলেছেন, মাদকাসক্ত হয়ে মা-বাবার স্বপ্নকে ধ্বংস করা যাবে না। কোনোভাবেই মাদক নেওয়ার মতো পাপের রাস্তায় পা বাড়ানো যাবে না।
শনিবার (৪ জুন) রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ৭৮৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
‘সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হতে হবে’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ বাণীকে প্রতিপাদ্য হিসেবে ধারণ করে ডিএমপি পরিবারের মেধাবী সন্তানদের অনুপ্রেরণা জোগাতে শিক্ষাবৃত্তি-২০২১ দিচ্ছেন ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম।
এইচএসসি, এসএসসি, ও-লেভেল, উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষাসহায়তা বৃত্তি ক্যাটাগরিতে বৃত্তি দেওয়া হয়। ভালো ফলাফলের জন্য এইচএসসিতে ২৭৫ জন, এসএসসিতে ৩৩৬ জন, ও-লেভেলে দুইজন, উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি ৮৩ জন ও শিক্ষাসহায়তা বৃত্তি পেয়েছে ৮৮ জন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিনন্দন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতিকে যদি উন্নত করতে হয় শিক্ষা ছাড়া উপায় নেই। আমরা যে অবস্থায় আছি তার চেয়ে একটু ভালো অবস্থানে আমাদের সন্তানদের দেখতে চাই। আর এর জন্য তাদের সুশিক্ষিত করার কোনো বিকল্প নেই।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, তোমাদের আজকের এ সফলতা জীবনের একটা ক্ষুদ্র পদক্ষেপ। তবে প্রতিটা পদক্ষেপে সফল হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কেউ তোমাকে তার অবস্থান ছেড়ে দেবে না। তোমাকেই তোমার অবস্থান অর্জন করে নিতে হবে। জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই, জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রে জ্ঞানের ঘাটতি নিয়ে সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, বাবাকে বাবা হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে তার পদমর্যাদার হিসেবে নয়। প্রত্যেক বাবা-মায়েই তার সন্তানকে মানুষ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে থাকেন। বাবা-মায়ের সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। সন্তান যেন মানুষ হয় সে চেষ্টায় বাবা-মা কঠোর পরিশ্রম করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতিরোধে প্রথম বুলেটটি নিক্ষেপ করা হয় পুণ্য ভূমি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে। একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে রাজারবাগে এলে গর্বে আমার বুক ভরে যায়। আমি এর জন্য খুবই গর্ববোধ করি।
শিক্ষাবৃত্তি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পুলিশ ইউনিট। এখানে প্রায় ৩৪ হাজার পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। এ ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের সুশিক্ষায় উৎসাহিত করার লক্ষে ২০১৭ সালে চালু হয় এই শিক্ষা বৃত্তি কার্যক্রম। বর্তমান কমিশনার মহোদয় বৃত্তি প্রাপ্তদের সংখ্যা ও অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করেন।
তিনি বলেন, এ শিক্ষাবৃত্তি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য এ শিক্ষাবৃত্তি বৃত্তিপ্রাপ্তদের উদ্বুদ্ধ করবে। বৃত্তিপ্রাপ্তরা ভবিষ্যৎ জীবনে দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠলে সেটাই হবে আমাদের সফলতা।
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অনুভূতি ব্যক্ত করে একজন শিক্ষার্থী বলেন, এ রকম সুন্দর একটি অনুষ্ঠানের অংশীদার হতে পেরে আমি নিজেকে সত্যি সৌভাগ্যবতী মনে করছি। সব শিক্ষার্থী বন্ধুদের পক্ষ থেকে ডিএমপিকে এরকম সুন্দর একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। এটি ভবিষ্যতে আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। তাই আশা রাখবো এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং আমাদের মতো যত শিক্ষার্থী আছে তাদেরও অনুপ্রেরণা জোগাবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কশিনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।