রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: ভারতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি প্রতিদিনই আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সম্প্রতি অক্সিজেনের ব্যাপক ঘাটতির কারণে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সহযোগিতায় সেই সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে দেশটি। এমন অবস্থার মধ্যে ভারতের প্রখ্যাত হার্ট সার্জন ড. দেবী শেঠী জানিয়েছেন, ভারতের এই অবস্থা মোকাবেলায় দুই লাখ নার্স ও দেড় লাখ চিকিৎসক প্রয়োজন। ড. শেঠী জানান, এমনিতেই দেশে মেডিক্যাল স্পেশালিস্টের ঘাটতি আছে। তার উপর এই সঙ্কট। তবে এই সঙ্কটেরও ড. শেঠী খুব চিন্তাশীল একটা সমাধান বের করেন। তিনি জানান, সংখ্যার দিক থেকে বলতে গেলে বলতে পারি, এই মুহূর্তে আমাদের দেশে ২ লাখ নার্স ও দেড় লাখ চিকিৎসক দরকার। অন্তত এক বছরের জন্য। কীভাবে সম্ভব? আমাদের এখন ২ লাখ ২০ হাজার নার্স আছেন যারা এখনও প্রশংসাপত্র পাননি। তাদের যদি ডেকে বলা হয়, তোমাদের এক্ষুনি প্রশংসাপত্র জরুরি নয়, তোমরা এক বছর কোভিড ওয়ার্ডে কাজ করো। যারা এটা করবেন, আগামী বছর সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে তাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। খবর জি নিউজের
তিনি বলেন, প্রথমবার যখন কোভিড এল তখন দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল পিপিই কিট আর হাসপাতালে ভেন্টিলেশনের সুবিধার অপ্রতুলতা। কিন্তু ভারত দ্রুত তা অতিক্রম করে ফেলেছিল। এবারে এল অক্সিজেন সঙ্কট। সেটাও ভারত অতিক্রম করে ফেলছে। কিন্তু এখন অন্য একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। আসিইউতেই রোগীরা মারা যাচ্ছেন। কেননা, সেখানে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নেই, নার্স নেই। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়ায় ঘরের মধ্যেও নাগরিকদের মাস্ক পরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে ভারত সরকার। সেই সঙ্গে এখন বাড়িতে বাইরের কাউকে না ডাকা এবং অযথা বাইরে না বেরনোর পরামর্শও দেয়া হয়েছে।
ভারতে প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড অক্সিজেন সংকটে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। মর্গ ও শ্মশানে ভিড় পড়ে গেছে। শ্মশানে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় দিল্লিসহ কয়েক রাজ্যে গণচিতা তৈরি করা হয়েছে। তাতেও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। খোঁড়া হচ্ছে গণকবর এবং মরদেহ পোড়াতে বানানো হয়েছে অস্থায়ী শ্মশান। জাত-ধর্ম ভুলে মৃতদেহ সৎকারে সহযোগিতা করছে মুসলিমরাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মে মাসে ভারতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর রূপ নেবে। এসময়ে একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সংক্রমণও হবে রেকর্ড পরিমাণ।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫০১ জনের। মোট মৃত ২ লাখ ৮ হাজার ৩১৩ জন। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮৮৮ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৮৭ লাখ ৫৪ হাজার ৯৮৪ জন।