সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: সিলেট বিভাগসহ বাংলাদেশের বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণসহায়তা দিতে চায় ভারত। রোববার (১৯ জুন) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) ৭ম বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বৈঠকে বাংলাদেশে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৈঠকের পর দেয়া যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইলসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলায় সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করতে চায় ভারত। দিল্লির বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এই বার্তাটাই স্পষ্ট করেছেন।
বাংলাদেশে অনেকেই ভারত থেকে আসা পানির প্রবাহকে দায়ী করছেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যাপক সমালোচনা করছেন। এই পটভূমিতে দিল্লি হয়তো বিষয়টি খোলাসা করলো। জেসিসি বৈঠকের হোস্ট বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় ক্যাটাগরিক্যালি বাংলাদেশের উত্তরে যে নজিরবিহীন বন্যার সৃষ্টি হয়েছে তার উল্লেখ করে বলেন, আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও একই ধরনের বন্যা হয়েছে। আমরা এখন (বছরের) অনেক বেশি সময়ের জন্য ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট ডেটা (বন্যা ব্যবস্থাপনা তথ্য) শেয়ার করছি। এই অবকাশে আমি এটাও বলতে চাই, আপনাদের দেশে বন্যা মোকাবিলায় বা ত্রাণ অভিযানে ভারত যদি সুনির্দিষ্ট কোনোভাবে সাহায্যে আসতে পারে, তাহলে সেই সমর্থনসূচক ভূমিকা নিতে পারলে আমরা আনন্দিত হবো। আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই তা আমরা করতে চাই।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে বন্যার উৎস হিসেবে ভারতের যে আসাম-মেঘালয়কে চিহ্নিত করা হচ্ছে, গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সেখানেও চলছে রেকর্ড বৃষ্টিপাত। আসামের ৩০টি জেলার ৩২ লাখের বেশি মানুষ এখন বন্যাকবলিত। দেড় লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বন্যাত্রাণ শিবিরে। ব্রহ্মপুত্র ও বরাকের মতো প্রধান নদীগুলো বেশিরভাগ জায়গাতেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার জেসিসি বৈঠকের দিন পর্যন্ত বন্যায় আসামে অন্তত ৬০ জন ও মেঘালয়ে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা গেছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ রোববার বিকালে জানায়, এই প্রবল বর্ষণের ‘স্পেল’ আরও অন্তত ২৪ ঘণ্টা জারি থাকবে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে পারে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ বন্যা পরিস্থিতি শোচনীয় হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের বন্যা মোকাবিলায় সহায়তার প্রস্তাব বিষয়ে একটি বিশ্লেষণ এমন হয়তো দিল্লি মনে করছে, সিলেট বিভাগসহ ভাটি অঞ্চলের বন্যাকে কেন্দ্র করে যেনো কেউ ভারত বিরোধিতাকে উস্কে দিতে না পারে। স্মরণ করা যায়, জেসিসি বৈঠকে বসার ঠিক ক’মিনিট আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নিজের ছবি টুইট করে লেখেন, ‘আমাদের এই ঘন ঘন বৈঠকগুলোই দু’দেশের অনন্য বন্ধুত্বের নিদর্শন।’
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতাকে আমরা স্বাগত জানাই। করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং ইউরোপে চলমান সংঘাতের কারণে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ করোনা মহামারীর ক্ষতি থেকে অর্থনীতিকে জোরালোভাবে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।