1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

তেইশে জুনঃ ২৬৪ তম পলাশী দিবসঃ বেনিয়া বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে সুবে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদ সিরাজুদ্দেীলার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলিঃ কতেক বিনীত প্রস্তাব না

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২০ জুন, ২০২২
  • ৪৪৬ বার পঠিত

 

: মুজিবুর রহমান মুজিব:

তেইশে জুন- পলাশী দিবস। বাংলাও বাঙ্গাঁলির জাতীয় জীবনে একটি শোকাবহ দিন। চীর স্মরনীয় দিন। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন রোজ বৃহস্পতিবার বাংলা বিহার উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব প্রজাবৎসল নৃপতি মনসরুল মুলক মির্জা মোহাম্মদ সিরাজুদ্দৌলা পশ্চিম বঙ্গাঁধীন ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে বাংলার নবাবের প্রধান সেনাপতি মীর জাফর আলী খার বিশ্বাস ঘাতকতাও প্রতার নার কলংকময় অধ্যায়। ষড়যন্ত্র প্রতারনার ফাঁদে পরে যুদ্ধ বিহীন পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত নবাব সিরাজুদ্দৌলা কোম্পানীর কাছে আত্বসর্পন কিংবা প্রান ভিক্ষা কিংবা ক্ষমতার ভাগাভাগি করেন নি, প্রান বিসর্জন দিয়েছেন। স্বাধীন বাংলার স্বাধীন চেতা নবাব সিরাজুলদ্দৌলা দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বৃটিশ বেনিয়াদের সাথে ক্ষমতার ভাগা ভাগি না করে লড়াই করতঃ আত্বাহুতি দিয়ে বাংলা ও বাঙ্গাঁলির দেশ প্রেম ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। সুবে বাংলার স্বাধীন শাসক নবাবদের মধ্যে ঘধিনং ড়ভ ইবহমধষ গ্রহ্ণ মতে নবাব আলী বর্দী খাঁ বীর যোদ্ধা, দেশ প্রেমিক, প্রজাবৎসল ওধার্মিক নৃপতি ছিলেন। তিনি বর্গী, মারাঠা দস্যু লুটেরা এবং ভাস্কর পন্ডিতের রোশানল থেকে বাংলার নিরহ জন গনকে রক্ষা করে বিপুল জন প্রিয়তা পেয়েছিলেন। বাংলার ধনসম্পদ প্রান প্রাচুর্য্য মান সম্মান দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। নবাব আলীবর্দীর শাসনামলে ইরাকের নজফ থেকে এক সম্ভ্রান্ত সৈয়দ বংশীয় মীর পদবী ধারী জাফর আলী ভাগ্যান্ধেষনে সপরিবারে বাংলায় আসেন। মানব দরদিও মানব প্রেমিক নবাব আলী বার্দী খাঁ দয়াপরবশ হয়ে মানবিক কারনে গৃহহীন কর্মহীন মীর জাফর আলীকে সপরিবারে আশ্রয়দেন, একশত টাকা মাসিক বেতনে উমেদার এর চাকরি প্রদান করেন। চালাক চতুর ধুরন্দর মীর জাফর এর ভক্তি চুট্টামিতে বিশ্বাস স্থাপন করতঃ অতঃপর নবাব আলী বর্দী তাঁর ভগ্নি শাহ খানমকে মীর জাফর এর সঙ্গেঁ বিয়ে দিয়ে সেনা বাহিনীতে চাকরি দেন, এবং এক সময় বাংলার প্রধান সিপাহ সালার নিযুক্ত হন। নবাব আলীবর্দীর কোন পুত্র সন্তান ছিলনা, নবাব কন্যা আমেনা বেগম এর পুত্র প্রিয় দৌহিত্র সিরাজকে পুত্র বৎ¯েœহ করতেন বৃদ্ধ নবাব। দিবসে-নিশীতে রাজ্য শাসন-রাজ্য পরিচালনা- যুদ্ধ বিগ্রহে মাতা মহের সাথে ছায়ার মত থেকে সর্ব শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠেন তরুন সিরাজুদ্দৌলা। বৃদ্ধ নবাব আলীবর্দী ও যুবরাজ সিরাজুদ্দৌলার গুনে মুগ্ধ হয়ে তাকে তারঁ উত্তরাধিকারি উত্তর সূরীহিসাবে ঘোষনা করেন। ফলতঃ সিংহাসন আরোহনের পূর্বেই তরুন সিরাজুদ্দৌলা পারিবারিক কলহ ও ষঢ়যন্ত্রের সম্মুখীন হন। নবাব জামাতাও প্রধান সেনাপতি কুচক্রী
মীরজাফর এর কুনযর ছিল বাংলার মসনদের দিকে। দূঃসাহসীও দেশপ্রেমিক সিরাজকে না পসন্দ ছিল স্বার্থপর মীরজাফর এর। তার মনে দূরভিসন্ধি ছিল নবাব আলীবর্দীর পর নবাবের অপর দৌহিত্র অপদার্থ শওকত জং কিংবা অযোগ্য কেহ নবাব হলে ক্ষমতার দাপট দেখানো যাবে কোম্পানীর সঙ্গেঁ মিলে মিশে ব্যবসাবানিজ্য করা যাবে, অর্থ বিত্তের ভাগ বাটোয়ারা হবে। কিন্তু নবাব আলীবর্দীর জীবদ্দশায় বিদ্রোহ কিংবা ক্ষমতায় ভাগ বসাবার সাহস হয়নি বেঈমান মীরজাফর আলী খাঁন এর। ১৭৫৬ সালের ১৫ই এপ্রিল পরিনত বয়সেই নবাব আলীবর্দী খাঁর ইন্তিকালের পর তাঁর ওছিয়ত মোতাবেক তাঁরই প্রিয় দৌহিত্র মির্জামোহাম্মদ সিরাজুদ্দৌলা বাংলা বিহার উড়িস্যার সিংহাসন আরোহন করেন। সিংহাসন আরোহন করেই প্রাষাদ ষঢ়যন্ত্র, প্রাদেশিক শাসন কর্তা খালাত ভ্রাতা অযোগ্য শওকত জং বৃটিশবেনিয়া ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বেআদবিও বাড়া বাড়ির সম্মুখীন হন তরুন নবাব সিরাজুদ্দৌলা। কিন্তু তিনি দাদুর দিক্ষায় দিক্ষিত- দেশ প্রেমে উদ্ভোদ্ধ হয়ে দেশীবিদেশী সকল ষঢ়যন্ত্র দূঃসাহসের সাথে মোকাবিলা করেন কঠোর হস্তে দমন করেন। ইংরেজদের কবল থেকে কোলকাতা বিজয় প্রিয় দাদুর নামে আলীনগর নামাকরন পূর্নিয়া আভযান বিদ্রোহী ভ্রাতা অযোগ্য শওকত জং এর মোকাবিলা পূর্নিয়া অভিযান ছিল তার দেশপ্রেম, দূঃসাহস রাজ্য শাসন- প্রশাসনিক দক্ষতারই নিদর্শন ও নমুনা। দৃঢ়চেতা নবীন নবাব সিরাজুদ্দৌলার বিজয় ও দক্ষতায় প্রমাদ গুনলেন অর্থ ও ক্ষমতা লিপ্সু সিপাহ সালার বেঈমান মীর জাফর আলী খাঁন। ধনকুবের মাহতাব চাঁদ জগৎ শেঠ, রাজা রাজ ভল্লব, রাজা মানিক চাঁদ, স্বার্তপর সেনাপতি এয়ারলতিফ খান প্রমুখ নিজেদের স্বার্থ সিদ্দর জন্য নবীন নবাবকে সিংহাসন থেকে হটাতে কোম্পানীর কেরানী রবার্ট ক্লাইভের সঙ্গেঁ গোপনে আঁতাত করেন- বাংলার নবাবীকে নীলামে তুলেন। বিশিষ্ট গবেষক বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভস এর পদস্থ কর্মকর্তা মীর ফজলে আহমদ চৌধুরী তার গবেষনা গ্রহ্ণ দলিল পত্রে পলাশীর যুদ্ধ গ্রহ্ণে জাফর আলী খাঁ ও ইংরেজদের তিনটি চুক্তিরকথা আছে। জগত শেঠের বাড়িতে অনুষ্টিত এই গোপন বৈঠকে নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে ক্ষমতা চ্যোত করার ছূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। তারই ফলশ্রæতি পলাশীর যুদ্ধ। ১৭৫৭ সালের ১৩ই জুন রবার্ট ক্লাইভ মাত্র এক হাজার ইংরেজ সৈন্য দুই হাজার দেশীয় সেপাই এবং মাত্র দশটি ছোট বড় কামান নিয়ে গোপন চুক্তি মোতাবেক অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষনা করতঃ রাজধানী মর্শিদাবাদ অভিমুখে রওয়ানা হয়ে ১৯শে জুন নবাবের নিয়ন্ত্রাধীন কঠোয়া দখল করতঃ ২২শে জুন গঙ্গাঁ পেরিয়ে কোলকাতা থেকে আনুমানিক সত্তোর মাইল উত্তরে নদীয়া জেলাধীন ভগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে শিবির স্থাপন করেন। দেড় হাজার বিঘার লক্ষ বৃক্ষের বাগানটির নাম লক্ষবাগ। পলশীর যুদ্ধে বৃটিশ বাহিনীর দায়িত্ব আরো ছিলেন মেজর জেমস কিল প্যোট্রকঃ মেজর আর্চ রোড গ্রান্ট, মেজর আয়ার কোর্ট, ও ক্যেপ্টেন জর্জ গপনামীয় চার জন সেনা কর্মকর্তা। এ কালের মত সেকালে যাতায়াত ও যোগযোগ ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত উন্নতি না থাকলে ও গুপ্তচর বৃত্তিও গুপ্তচর প্রথার প্রচলন ছিল। রাজধনিী মুশিদাবাদ থেকে গুপ্তচর মারফত স্ব-সৈন্যে ইংরেজ আক্রমনের সংবাদ পেয়েই স্বাধীনচেতা স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলা কোন আলোচনা কিংবা সন্ধির প্রস্তাব না দিয়ে যুদ্ধের জবাব যুদ্ধের ময়দানে প্রদানের জন্য পদাতিক ও অশ্বারোহী বাহিনীতে মোট সাত চল্লিশ হাজার সৈন্য, পঞ্চাশটি বড় কামান নবাবের অনুগত ফরাসি সেনাপতি সাঁ ফ্রে এর সু-শিক্ষিত সৈন্য এবং চারটি ছোট কামান নিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতঃ পলাশীর এক প্রান্তে শিবির স্থাপন করেন। পাশেই রইলেন নবাবের দুই বিশ্বস্থ সেনাপতি মীরমদন ও রাজা মোহন লাল যাঁর অধীনে পাঁচ হাজার সুশিক্ষিত অশ্বারোহী এবং সাত হাজার পদাতিক সৈন্য ছিল। অনতি দুরেই পুতুলের মত দাড়িয়ে ছিলেন নবাবের প্রধান সেনাপতি বেঈমান মীর জাফর আলী খাঁন এবং তার সহযোগি এয়ার লতিফ খাঁন ও রায় দূর্লভ প্রমূখ। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন বৃহস্পতিবার সকাল আট টায় শুরু হয় উপমাহদেশের ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধ। নবাবের অনুগত সেনাপতি সম্ভ্রান্ত সৈয়দ বংশীয় মীর মদন এবং ফরাসি সেনাপিত সা ফ্রের কামান দাগার মাধ্যমে পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠে। যুদ্ধের সূচনাতে নবাব বাহিনীর বৃহদাংশ সিপাহ সালার মীর জাফরের নেতৃত্বে ইংরেজ বিরোধী যুদ্ধে অংশ গ্রহন থেকে বিরত থাকলেও যুদ্ধের প্রথম ভাগ নবাব বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে ছিল। কামানের গোলা বর্ষনে কোম্পানীর লোকক্ষয় এবং হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ক্লাইভ শিবিরে হতাশা নেমে আসে। নবাবের অনুগত মীর মদন, রাজা মোহন লাল এবং ফরাসি সেনাপতির অধিনস্থ মোট সৈন্য অস্ত্র সরঞ্জামাদি ছিল কোম্পানীর দ্বিগুনাধিক। ধৃুর্ত রবার্ট ক্লাইভ বুঝলেন তাদের গোপন চুক্তি মোতাবেক সিপাহ সালার মীর জাফর আলী নবাব পক্ষে যুদ্ধে অংশ না নিলেও নবাবের অনুগত দুই দেশ প্রেমিক সেনাপতির বিরুদ্ধে টিকে থাকা যাবে না, বরং বৃটিশবাহিনী নিশ্চিহ্ণ হয়ে যাবে। অবস্থা বেগতিক দেখে ধূর্ত ক্লাইভ পিছু হটে আমবাগানের নীচ স্থানে বিভিন্ন গৃহে আশ্রয় নিলেন এবং গোপন স্থান থেকে নবাব বাহিনীর বিরুদ্ধে গোলাবর্ষন করতে থাকেন। পাল্টা জবাব হিসাবে নবাব বাহিনী ইংরেজদের গোপন স্থান লক্ষ করে গোলা বর্ষন করলেও লুক্কায়িত ও গর্ত থাকায় নবাবী আক্রমন থেকে রক্ষা পেয়ে যায়। নবাব পক্ষ ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখিন হন। ক্রমাগত গোলাবর্ষনে গোলাবারুদ ও ফুরাতে থাকে। আনুমানিক দুপুরের দিকে এক পলশা বৃষ্টি নামে পলাশীর প্রান্তরে। কর্দমাক্ত হয়ে যায় সমগ্র মাঠ। নবাব পক্ষের গোলা বারুদ্ধ ত্রিপল দিয়ে ডেকে নারাখায় বৃািষ্টতে ভিজে সব গুলাবারুদ্ধ বিনষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ধূর্ত ইংরেজ গন আমবাগানের গৃহাভ্যন্তরে ছিলেন, গোলা বারুদও ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ছিল ফলতঃ বৃটিশ বাহিনীর গোলাবারুদ সম্পূর্ন অক্ষত থেকে যায়। ঝড়ের শেষে সেনাপতি মীর মদন কোম্পানীর বারুদও বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে ভেবে রনাঙ্গঁনের বীর যোদ্ধা নবাব ভক্ত মীর মদন সহ¯্রাধিক পদাতিক বাহিনী নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। হত ভাগ্য বাংলাও বাঙ্গাঁলি জাতি দূর্ভাগ্য জনক ভাবে পলাশীর যুদ্ধের ময়দানেই সম্মুখ সমরে শাহদাত বরন করেন নবাব ও বাংলাভক্ত বীর যোদ্ধা মীর মদন। এই বীর সেনাপতির আকস্মিক মৃত্যোতে যুদ্ধের ময়দানে বৃশৃংখলা দেখাদেয়, নবাব শিবিরে হতাশ নেমে আসে। ভাগ্যাহত বাংলার নবাব প্রিয় সহযোদ্ধার শাহদাত বরনে মুষঢ়ে পড়েন। সেনাপতি মোহনলাল নবাবকে অবহিত করেন সিপাহ সালার মীর জাফর বিশ্বাসহন্তা, তিনি ইংরেজদের সঙ্গেঁ গোপনে আঁতাত করেছেন তাঁর নেতৃত্বাধীন নবাব বাহিনী পলাশীর ময়দানে নীরাপদ দুরত্বে অবস্থান করে ইংরেজদের রন নৈপুন্য দেখছেন মনে মনে তাদের বিজয় কামনা করতঃ চুক্তি মোতাবেক বাংলার নবাব হবার দিবাস্বপ্ন দেখছেন। এমতাবস্থায় নবাব সিরাজুদ্দৌলা তার সেনাপতি মীর জাফর কে ডেকে পাঠিয়ে কোম্পানীর বিরুদ্ধে সক্রিয় যুদ্ধে অংশ গ্রহনের অনুরোধ জানান। নবাবি পাগড়ি মাথা থেকে খুলে মীর জাফর এর পায়ের কাছে রাখলেন বল্লেন এখন থেকে আমার মান প্রান সব আপনার হাতে। বিখ্যাত ভারতীয় ইতিহাস বিদ ড. অমলেন্দু দে তার গবেষনা মূলক গ্রহ্ণ-“ সিরাজের পুত্র ও বংশধরদের সন্ধানে-তে” বলেন-“ ওঃ রং ভড়ৎ ুড়ঁ ঃড় ফবভবযফ সু যড়হড়ঁৎ” বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর, সেনাপতি মীর মদন, মোহন লাল এর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নবাব যদি অদ্য ময়দান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন তাহলে আগামী কাল ভোর বেলা থেকে বাব বাহিনী ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে আনবেন। নিরুপায় নবাব সিপাহ সালার এর উপর আস্থাস্থাপন করে ঐ দিন সন্ধায় সৈন্য প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধের আদেশ দেন। বেইমান মীর জাফর গোপন দূত মারফত এই সংবাদ ক্লাইভকে জানিয়ে দিলে স্বয়ং রবার্ট ক্লাইভ সসৈন্য নবাব শিবির আক্রমন করেন, ইংরেজদের বিজয় নিষান উড়ান বিজয় বাজনাবাজান। বিনা যুদ্ধে পরাজিত ভাগ্যাহত নবাব সামান্য অনুচর সহ শক্তি সৈন্য সংগ্রহের জন্য রাজধানী মুর্শিদাবাদ পশ্চাদ বরন করেন, অর্থ ও উপটোকন মারফত সৈন্য সংগ্রহের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পাটনায় তার একান্ত সুহৃদ রাজা জানকি রামের সঙ্গেঁ সাক্ষাত করতে স্ত্রী লুৎফা একমাত্র কন্যা উম্মে জহুরা সহ রাতের বেলায় রাজধানী ত্যাগ করেন। মীর কাসিম খান কতৃক প্রেপ্তার হয়ে রাজধানী নীত হন। তাকে হত্যার মাধ্যমে মীর জাফর তার নবাবির পথ নিস্কন্টক করেন। পলাশীর যুদ্ধের বিয়োগান্তক ট্রেজেডির পর ইংরেজ বনিকের মান দন্ড দেখা দেয় রাজ দন্ড রূপে পোহালে শর্বরী। এই প্রসঙ্গেঁ শ্রদ্ধেয় স্যার যদুনাথ সরকার যথার্থই বলেন-“ ঞযঁং ঐবৎব ঊহফবফ গঁংষরস জঁষব রহ ইবহমধষ, ঞযব ঋড়ৎবরমহ গধংঃবৎ ঙভ ঞযব ঝড়ৎিফ যধফ নবপধসব শরহমসধশবৎ, ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজুদ্দৌলার পরাজয় পতন ও নির্মম মৃত্যো ক্ষমতার পরিবর্তন ছিল না এর ফলছিল সুদুর প্রসারি। কোম্পানীর কেরানী রবার্ট ক্লাইভ হন কর্নেল অতঃপর ভারত শাসক। লন্ডনের বিশ্ব বিখ্যাত যাদুঘর মাদাম ত্যুসাতে ক্লাইভের মোমের মূর্তি স্বযতেœ ও সসম্মানে শোকেস বন্দীকরে রেখে কংকারার অব ইন্ডিয়া”- ভারত বিজেতা বলে পরিচিতি তুলে ধরেছে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত সংস্কৃতিবান ইংরেজ জাতির এই অসভ্য আচরন ও অসত্য বয়ান নিন্দনিয়। যৌবন কাল একাশি সালে বৃটেন ভ্রমন কালে চক্রান্ত কারি ও অসভ্য ক্লাইবের গালে চপেটাঘাত নয় একটি উষ্টা মারার ইচ্ছা হয়ে ছিল আমার। পলাশীর যুদ্ধ সত্যিকার অর্থে কোন যুদ্ধ ছিল না, হাজার খানেক উংরেজ সিপাহীর কোন রন নৈপুন্য রন নীতি রন কৌশও বাহাদুরি ছিল না, ছিল ছলচাতুরি বেঈমানী ও মোনাফেকি। এই প্রসঙ্গেঁ খোদ একজন ইংরেজ লেখক ঈড়ৎহবষ গধষষরংড়হ তার দ উবপরংরাব ইধঃঃষব ড়ভ ওহফরধ গ্রহ্ণে স্বীকার করতে বাধ্য হন- “ণবং, অং ধ ারপঃড়ৎু ঢ়ষবধংংু ধিং রহ রঃং পড়হংবধহবপব ঢ়বৎযবঢ়ং ঃযব মৎবধঃরবঃ বাবৎ মরহফ, নঁঃ ধ নধঃঃষব রঃ রং রহ ধসু ড়ঢ়বহরড়হ ধ সধঃঃবৎঃড়নব ঢ়ৎড়ঁফ রঃ ধিং ঘড়ঃ ধ ভধরৎ ভরমযঃ ওযধঃ রঃ ঃযব ঃযৎবব ঢ়ৎরহপরঢ়ধষ ধষ মবহবৎষং ড়ভ ংরৎধল যধফ নববহ ঋরমযঃ ঢ়ষধংংবু ড়িহষফ হধঃ যধাব নববহ ড়িঁ” নবাব সিরাজুদ্দৌলার চরিত্র কৃতিত্বও মহত্ব বর্ননা করতে গিয়ে এই ইংরেজ ঐতিহাসিক উক্ত গ্রহ্ণে আরো বলেন- “ সেই দূঃখময় নাটকে প্রধান অভিনেতাদের মধ্যে তিনিই (সিরাজুদ্দৌলা) ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি কোন প্রতারনার আশ্রয় নেন নি”।
পলাশীর প্রতারনায় শুধু বাংলার শাসন ক্ষমতা নয় সমগ্র সুবে বাংলার সমাজ, রাজনীতি অর্থনীতি সংস্কৃতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিশেষত রাজ্যহারা মুসলিম সমাজের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গেঁ যায়। কোম্পানীর লুন্ঠন ও ভ্রান্তনীতির কারনে বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ১৭৬৯-৭০ সালের ছিয়াত্তরের মনন্তরে এক তৃতীয়াংশ আদমসন্তান অনাহারে মারা যান। ইংরেজ ঐতিহাসিক .ি.ি ঐঁহহঃবৎ তার বিখ্যাত গ্রহ্ণ ঞযব ওহফরধহ সহংধষসধহ এ বলেন এক কালে এদেশে একজন গরিবলোক খুজে পাওয়া যেত না আর এখন একজনও ধনীলোক খুজে পাওয়া দুস্কর”-। পলাশীর যুদ্ধের পর শুধু মাত্র বাংলায় নয় সমগ্র ভারত বর্ষীয় অর্থনীতিতে পরিবর্তন ও বিপর্য্যয় নেমে আসে। ভারত থেকে বিলেতে ধনসম্পদ পাচার হতে থাকে। অর্থনীতিবিদ গন একে চষসরহ ড়ভ চষধংংু পলাশীর লুন্ঠন,উৎধরহ ড়ভ বিধষঃয সম্পদের নিঃসরন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে গ্রহ্ণ কারের গবেষনা গ্রহ্ণ সুবে বাংলার সিপাহ সালার বেঈমান মীর জাফর আলী খান, আর নয় পলাশী, আর নয় মীর জাফর” গ্রহ্ণে ব্যাপক আলোচনাও পর্য্যালোচনা আছে। সুবে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলা বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের বীর শহীদ প্রথম শহীদ। ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ভারত বর্ষ ব্যাপী বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের ফলও ফসল ছিল সাতচল্লিশের ভারত বিভক্তি ও পাকিস্তানী স্বাধীনতা যা বাংলাও বাঙ্গাঁলিকে কোন ইতিবাচক ফল দেয় নি। অবশেষে একাত্তোরে বীর বাঙ্গাঁলী ছিনিয়ে আনেন চীর কাংখিত প্রিয়তম স্বাধীনতা। ২৩ শে জুন পলাশী দিবস রাষ্ট্রীয় ভাবে উদযাপন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী সিরাজুদ্দৌলাকে রাষ্ট্রীয় ভাবে স্মরনও সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। এই পলাশী দিবসে পলাশীর বীরও শহীদ সিরাজুদ্দৌলার উজ্জল স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী, সম্মান প্রদর্শন ও রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

[ লেখকঃ ষাটের দশকের সাংবাদিক। কলামিষ্ট। মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র এডভোকেট হাইকোর্ট, জজ কোর্ট। সাবেক সভাপতি
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব। ]

 

 

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..