মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৪ অপরাহ্ন
শেখ রিয়াদ ইসলাম স্বপ্ন: সরকার ঘোষিত ‘কঠোর’ লকডাউন। করোনা সংক্রমণ হার ঊর্ধ্বমুখী। আক্রান্তের সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। গণপরিবহন চালু দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করছে পরিবহন শ্রমিকরা। কোথাও নেই কোনও নিয়ম রীতি। ঘোষণায় সীমাবদ্ধ থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। মাস্ক ছাড়াই অফিস, আদালত, বাজার, গণপরিবহনে চলাফেরা করছে মানুষ। মহামারির আরও ভয়াবহ রূপ ধারণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই। দেশে সংক্রমণ শুরু হওয়ার এক বছর পর সংক্রমণ পরিস্থিতির নতুন মাত্রায় উদ্বেগ জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ফাঁকা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। জটিল রোগী বেড়ে যাওয়ায় আইসিইউ শয্যা ফাঁকা পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে। করোনা সংক্রমণের হার হঠাৎ করে ঊর্ধ্বমুখী হলেও মানুষের মধ্যে তেমন সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। খুব অল্পসংখ্যক মানুষের মুখে মাস্ক। অধিকাংশের মাস্ক থুঁতনিতে। অনেকে কোমরে চাবির রিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছেন মাস্ক। হাত না ধুয়ে চলছে হালকা নাস্তা খাওয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন বয়স্করা। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অন্যান্য রোগ। গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয় বলে জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। প্রথম তিন রোগী শনাক্তের ঠিক ১০ দিন পর গত বছর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যুর কথাও জানায় প্রতিষ্ঠানটি। বিদেশফেরত স্বজনের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তিটি ছিলেন পুরুষ এবং তার বয়স ছিল ৭০ বছরের বেশি। গবেষণা বলছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯২ শতাংশই মারা গেছেন আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ১৪ দিনের মধ্যে। আর ২৮ দিনের মধ্যে মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৭৬ শতাংশ ও নারী ২৪ শতাংশ। জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) ‘কভিড-১৯ রোগীদের পরিণতির সঙ্গে সম্পর্কিত ঝুঁকিসমূহ নিরূপণ’ শিরোনামে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের সংক্রমিত হয়ে প্রথম ১৪ দিনের মধ্যে মৃত্যুহার ২ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ১৫ দিন থেকে ২৮ দিনের মধ্যে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। তাদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ৩ শতাংশের এক বা একাধিক অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সংক্রমণ ও মৃত্যুহার ঊর্ধ্বমুখী হলেও রাজধানীর মতো সারা দেশে নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তর বিভিন্ন তদারকি অভিযান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন। মানুষকে সচেতন করতে মাস্ক বিতরণ করছেন। এবং মাস্ক না থাকার কারণে অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। অফিস আদালতে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ কার্যকর করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঢিলেঢালার সুযোগে সাধারণ মানুষের মধ্যে গা-ছাড়া ভাব। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও চালু করে দেওয়া হয়েছে দোকানপাট। সরকারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টা দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলা রাখা যাবে। কিন্তু সেই শর্ত মানছে না কেউ। সকাল থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকছে এসব দোকানপাট। মাস্ক নেই দোকানিদের মুখে