রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার জন্য সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী পর্যটন কেন্দ্র এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট হোটেল-মোটেল বন্ধ রাখার কথা থাকলেও সেটি উপেক্ষা করছে অনেকে।
ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও অবকাশ কেন্দ্র ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।
সরকারি বিধিনিষেধ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। কিন্তু ইতোমধ্যে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে।
মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ জন্য পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে দায়ী করেছিলেন। তিনি বারবার বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় সংক্রমণ বেড়েছে।
কক্সবাজারের অন্যতম পাঁচ তারকা হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট। এই হোটেলটি সম্প্রতি ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য ফেসবুকে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে।
পর্যটকদের জন্য ‘ঈদ রিক্রিয়েশন প্যাকেজ’ প্যাকেজ চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাদের ফেসবুক পেজে।
সরকারি বিধি-নিষেধ চলার সময় এই ঘোষণা কেন দেয়া হলো?
সায়মন বিচ রিসোর্টের মুখপাত্র আহসানুল হোসেন বলেন, হোটেল বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের বলা হয়েছে হোটেল ক্যাপাসিটির ফিফটি পার্সেন্ট গেস্ট থাকতে পারবে। সে জন্য আমরা ঈদ প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। তাছাড়া আমাদের হোটেলে নিয়মিত অনেকেই থাকেন যারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজের সাথে জড়িত।’
তিনি দাবি করেন, ঈদ প্যাকেজ ঘোষণা করে তারা সরকারের কোনো নিয়ম ভঙ্গ করেননি।
কক্সবাজারে একটি হোটেলে কর্মরত একজন কর্মী জানান, কক্সবাজারের অনেক আবাসিক হোটেল তাদের কাজ চালু রেখেছে।
তিনি জানান, গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও কেউ কেউ বিভিন্ন উপায়ে এবং ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে কক্সবাজার আসছেন। সে ক্ষেত্রে হোটেলগুলো অতিথিদের ফিরিয়ে দিচ্ছে না।
তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন বলছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী কোন আবাসিক হোটেল খোলা থাকার কথা নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাহিদ ইকবাল বলেন, বর্তমানে কক্সবাজারসহ সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ। প্রশাসনের তরফ থেকে আমরা হোটেলগুলোকে বন্ধ রাখার জন্য বলেছি। এসব হোটেলে কোনো পর্যটক থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী ফেসবুকে ‘ঈদ প্যাকেজ’ নিয়ে প্রচারণার সুযোগ নেই।
শুধু কক্সবাজার নয়, ঢাকার আশপাশে বিভিন্ন রিসোর্ট এখন পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পুরোপুরি সক্রিয়।
ঢাকার কাছেই গাজীপুর অবস্থিত একটি রিসোর্টের এক কর্মকর্তা জানান, সে এলাকার সব রিসোর্ট এখন খোলা রয়েছে।
যেসব রিসোর্ট ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে তাদের মধ্যে সারা রিসোর্ট অন্যতম।
সারা রিসোর্টের জনসংযোগ ম্যানেজার ইসমাইল হোসেন বলেন, ঈদ সামনে রেখে খুবই সীমিত পরিসরে চালু করেছেন তারা।
‘বিষয়টা এমন নয় যে আমরা ঘটা করে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে রিসোর্ট খুলেছি। আমাদের সিলেক্টেড গেস্টদের জন্যই আমরা এই অফার দিয়েছি। তা ছাড়া আমাদের রিসোর্টে ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। তা ছাড়া আমরা করোনার শুরু থেকেই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি।’
বিভিন্ন জায়গায় হোটেল-রিসোর্টে সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তির বলছেন, সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে এপ্রিল মাসের শুরু থেকে হোটেল-রিসোর্টগুলোয় কার্যত কোনো অতিথি নেই।
এমন অবস্থায় হোটেল-রিসোর্টগুলোয় কর্মরত ব্যক্তিদের বেতন দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
খবর বিবিসি বাংলা