সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান-এর আদালত আজ সোমবার দুপুরে এক ব্যতিক্রমী ও দৃষ্টান্তমূলক রায় দিয়েছেন।
জনা গেছে, ১১/০৩/২০১৫খ্রি. তারিখে জুড়ী থানাধীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সামনে মারামারির ঘটনা কেন্দ্র করে চন্দন কুমার দাস বাদী হয়ে অভিযুক্ত কবির আহমদ,মুহিবুর রহমান সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮জন কে আসামী করে জি. আর ২৬/২০১৫(জুড়ী) মামলা দায়ের করেন। সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৩২৩ ধারার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ০৬মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত। পরে অভিযুক্তদের জীবনে প্রথমবারের মতো অপরাধ বিবেচনায় ও তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গুরুতর না হওয়ায় এবং আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে প্রায় ৭ বছর নিয়মিত হাজিরা দেয়ার কারণে আদালত তাদের-কে কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ প্রদানকল্পে “প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্সের ১৯৬০” অধীনে ১০০টি গাছ রোপন, নতুন করে কোনো অপরাধে জড়িত না হওয়া, মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা, শান্তি রক্ষা ও সদাচরণ করা, আদালতের নির্দেশমত হাজির হওয়া ইত্যাদি শর্তে মুক্তি দেন আদালত। এই শর্তগুলো প্রতিপালনের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রবেশন কর্মকর্তা-কে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে আদালত কে অবহিত করবেন।
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক পি,পি এ. এস. এম. আজাদুর রহমান এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধী কারাগারে আবদ্ধ কক্ষে নয়, মুক্ত বাতাসে পরিবার পরিজনের সান্নিধ্য পাবেন যা অভিযুক্তদের সংশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মৌলভীবাজারের পাবলিক প্রসিকিউটর রাধাপদ দেব সজল এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন অধ্যাদেশটি অনেক পুরোনো হলেও প্রয়োগ ছিল না উক্ত অধ্যাদেশটি বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের নির্দেশনার আলোকে মৌলভীবাজার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে এর দৃশ্যমান প্রয়োগ শুরু হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদরুল হোসেন ইকবাল বলেন প্রথম ও লঘু অপরাধের ক্ষেত্রে প্রবেশন খুব ইতিবাচক ও প্রশংসনীয়। এর মাধ্যমে অভিযুক্ত নিজেদের সংশোধনের চমৎকার সুযোগ পাচ্ছেন। আদালত উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, লঘুদন্ডে অনেকেই কারাগারে গিয়ে আসামীর সংস্পর্শে ভবিষ্যতে গুরুতর অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। প্রবেশনের ফলে নিজেকে সংশোধন ও অপরাধ প্রবণতা থেকে বিরত থাকতে অভিযুক্তরা উৎসাহী হবে। দেশের কারাগারগুলোয় প্রায় প্রতিদিনই ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত আসামী রাখা হচ্ছে। প্রবেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত অপরাধীরা সমাজের মূল ¯্রােতধারায় ফিরে আসবে ও কারাগারগুলো মাত্রাতিরিক্ত কয়েদী হতে ভারমুক্ত হবে।