শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেছেন, সুইস ব্যাংকের কাছে অর্থ জমা নিয়ে সুইজারল্যান্ড সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য চায়নি। সুইজারল্যান্ড কালো টাকা রাখার স্বর্গরাজ্য নয়। এ বিষয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে।
আজ বুধবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ এ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক-এসএনবির জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশিরা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ গতবছরে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশি ৯৫.৭০ টাকা হিসাবে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
ডিক্যাবের ওই টকে বাংলাদেশ-সুইজারল্যান্ড বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিনিয়োগ, রোহিঙ্গা সহযোগিতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সুইস রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে কী করতে হবে সে বিষয়ে আমরা সরকারকে জানিয়েছি, কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও তথ্যের জন্য আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয়নি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এ ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব এবং সেটি তৈরি করতে হবে। এটি নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি।’
সুইস ব্যাংক ওই দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে ১০ শতাংশের মতো অবদান রাখে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকগুলো অবৈধ অর্থ রাখার নিরাপদ স্থান নয়।’
তিনি জানান, বৈশ্বিক আর্থিক খাতে সুইস ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরনের সংস্কার করেছে এবং নতুন ও উন্নত মানদণ্ড তৈরি করছে। তারা অবৈধ অর্থ রাখার জন্য প্রলুব্ধ করে, এটি ঠিক নয়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশিরা কত টাকা জমা রেখেছে, ওই তথ্য প্রতি বছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দিয়ে থাকে। ওই অর্থ অবৈধপথে আয় করা হয়েছে কিনা, এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।’
দুই দেশের মধ্যে গত এক দশকে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে এর পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি ডলার জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে অনেকগুলো সুইস কোম্পানির উপস্থিতি রযেছে এবং আমরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করছি।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য সুইজারল্যান্ড কাজ করছে এবং তাদের জন্য মানবিক সহায়তা দিচ্ছে জানিয়ে নাতালি চুয়ার্ড বলেন, আমরা এ সমস্যার সমাধান চাই। এর জন্য রাখাইনে যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার প্রয়োজন, সেটি এখনো তৈরি হয়নি। আমরা সেটি সবাই মিলে করার চেষ্টা করছি।
ডিকাবের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস, সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সংগঠনটির সদস্যরা।