শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট: জনসম্পৃক্ত বিভিন্ন ইস্যুতে ক্রমান্বয়ে বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচি বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই ওইসব দলের মাঠে কর্মসূচি থাকছে। বিরোধী দলের এসব কর্মসূচির প্রতি তীক্ষè নজরও রাখছে ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ড। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নড়েচড়েও বসছে আওয়ামী লীগ। এখনই পাল্টা কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে বিরোধী দল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে কোনো কর্মসূচি পালন করলেই পাল্টা জবাব দিবে ক্ষমতাসীন দল। বিশেষ করে শোকের মাস আগস্ট বিধায় পাল্টা কর্মসূচিতে যাবে না দলটি। বিরোধী দলগুলো কি করতে চায় সেই দিকেই আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড নজর রাখছে বলে সূত্র জানায়।
এদিকে জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিসহ সমসাময়িক নানা ইস্যুতে রাজনীতির মাঠ দখল করা ও গরম করার চেষ্টা করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে দলটি সভা, সমাবেশ ও মিছিল-মিটিং নিয়ে রাজপথ দখলের ঘোষণা দিয়েছে। ছোট ছোট সমাবেশ করে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে একের পর এক কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। তবে এমনাবস্থায় রাজনীতির মাঠের দখল হাত ছাড়া করতে চায় না আওয়ামী লীগ। তাই নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে দলটি।
সভা-সমাবেশ কিংবা মিছিলের উপরে হামলা-মামলার অভিযোগ করে আসছিলেন বিএনপি। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীনরা বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির জন্য সুযোগ দেন। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি রাজধানীসহ সারাদেশে সক্রিয় হন। মিছিল-মিটিং আর সমাবেশে দলকে চাঙ্গা করতে থাকেন। সরকারবিরোধী সকল কর্মসূচিই হাতে নেন। রাজধানীতে জনসভা নামে যানজট সৃষ্টি করে। এতে সাধারণ যাত্রীরা পরে ভোগান্তিতে। সমাবেশের নামে সাধারণ মানুষকে বৈশ্বিক সংকট নিয়ে উসকানি দিচ্ছেন বিএনপি। সেই উসকানি আঁচ করতে পেরেই নড়েচড়ে বসছেন আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে- জনসভাকে নজরে রাখতে ক্ষমতাসীনরা ড্রোন উড়িয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা তা অস্বীকার করেছেন ।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র মতে, শোকের মাস আগস্ট আসলেই বিএনপি রাজনৈতিক দলটি মাঠে সক্রিয় হয়। তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সেই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে ক্ষমতাসীনরা নড়েচড়ে বসেছেন। তাই আওয়ামী লীগ হঠাৎ করেই একাধিক জরুরি সভা করেছেন। সেই সভা থেকেও নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। এদিকে আজ রবিবার সাকলে আওয়ামী লীগের ৮ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের গণভবনে ডেকেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকে কয়টি উপজেলায় সম্মেলন হয়েছে, কয়টিতে হয়নি এসব বিষয়ের অগ্রগতি জানার পাশাপাশি তিনি দ্রæত সম্মেলনের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কর্মীরা মাঠে নামলে রাজপথ নয়, বিএনপি অলিগলিও খুঁজে পাবে না। রাজপথ কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, রাজপথ জনগণের সম্পদ, কাজেই অতীতের মতো আবারও যদি রাজপথ দখলের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয় তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি মহাসচিব বেপরোয়া টাইগার হয়ে গেছে। আগুন নিয়ে আসবেন না বলে দিচ্ছি। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করুন। আগুন সন্ত্রাস নিয়ে যদি নামতে চান তাহলে বলব, জনতার প্রতিরোধ সুনামিতে পরিণত হবে।
দলীয় সূত্র মতে, আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে নিয়মিত কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে সক্রিয় থাকবে আওয়ামী লীগ। সারাদেশের নেতাকর্মীদের এ নিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগরের নেতাকর্মী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আরও সক্রিয় হতে বলেছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর প্রথমে দিল্লি পরে লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার কথা। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে অবস্থান করার সময়ে অপ্রীতিকর কিছু যেন না ঘটে সেজন্য নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবে বলে জানান দলের সিনিয়র নেতারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটুন, নির্বাচনকে মোকাবিলা করুন। আগস্ট মাসটা যেতে দেন তারপর টের পাবেন কত ধানে কত চাল। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই মির্জা ফখরুল সাহেব, নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে দেন। নৈরাজ্য সৃষ্টি করে শব্দবোমা ব্যবহার করে হুমকি-ধমকি দিয়ে এই আওয়ামী লীগকে ভয় দেখানো যাবে না।