শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন
জুড়ী প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের জায়ফরনগর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল করিমের ছেলে সুলতান আহমদ (২৪) কর্তৃক প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রেম, ধর্ষণ, বিয়ে, তালাক ও সর্বশেষ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদ এবং প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতারিত রোকসানা আক্তার (১৮)।
উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের দরিদ্র শাহাদত হোসেন-এর মেয়ে, জায়ফরনগর উচ্চ বিদ্যালয় হতে ২০২২ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী রোকসানা শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রতারণা ও হয়রানির অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রায়ই বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে সুলতান আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে আমি সাড়া দিতাম না। এক পর্যায়ে আমাকে বিয়ে করে ঘর সংসার করার কথা বললে আমি তাকে বিশ্বাস করি। আমার সরলতার সুযোগে সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং বেশ কিছুদিন আমার সাথে শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাকে বিয়ের কথা বললে সে বলে আমার বয়স ১৮ পূর্ণ না হলে কাবিন হবে না। আমি তার কথামতো অপেক্ষায় থাকি। গত ৯ আগষ্ট ২০২২ বয়স ১৮ পূর্ণ হলে সুলতান আমাকে বিয়ের কথা বলে গোপনে তার পিত্রালয়ে নিয়ে শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। দুইদিন ধরে কারো সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে না দিয়ে একটি কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। আমি বিয়ের জন্য চাপ দিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ১১ আগষ্ট রাতে আমাকে বাপের বাড়ী চলে যেতে বলে। আমি এভাবে যাবো না বললে সে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে সে রাতেই আমাকে নিয়ে আমার বাবার বাড়ী রওয়ানা দেয়। এদিকে উক্ত দুই দিন আমার বাবার বাড়ীর লোকজন আমাকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন। এমতাবস্থায় পথিমধ্যে এলাকার লোকজন আমাদের পেয়ে আটক করেন। পরে এক শালিশ বৈঠক বসে। সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া ও জাকির হোসেন মনির-এর উপস্থিতিতে সুলতানের অভিভাবক তার দুলাভাই খালেদ আহমদ এর অভিভাবকত্বে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেনমোহর সিদ্ধান্ত করে আকদ ও কাবিননামা মুলে আমাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিন্তু প্রতারক সুলতানের দুলাভাই ও তার প্রতারণার সহযোগী খালেদ আহমদ প্রস্তাব করেন- এক সপ্তাহের মধ্যে সুলতানের বাবা প্রবাস থেকে বাড়ীতে আসবেন, তিনি আসলেই আনুষ্টানিক ভাবে কনেকে ঘরে তুলে নেয়া হবে। তার কথায় শালিশকারকগণ বিশ্বাস করে এক সপ্তাহ সময় দেন। কিন্তু লম্পট সুলতান ১৭ আগষ্ট নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে তালাকনামা দিয়ে পালিয়ে যায়। একই চক্রান্তমূলে প্রতারক সুলতান-এর মা মমতা বেগম (৩৫) বাদী হয়ে ২২ আগষ্ট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৬নং আমল আদালত, মৌলভীবাজার বরাবর আমার পরিবার, আমাদের শুভাকাঙ্খী ও শালিশকারকদের আসামী করে চুরির অভিযোগ এনে একটি মিথ্যা মামলা (সিআর মামলা নং -১২০/২২) দায়ের করেন।
রোকসানা হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ন্যায্য অধিকার ও ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন।
এসময় তার পিতা শাহাদত হোসেন, ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া ও বাহাদুরপুর পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি আজিজুল ইসলাম মাসুক উপস্থিত ছিলেন।