শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন “মানুষের অন্তরের মানুষটি পরির্চযা করে খাাঁটি বানানোর প্রচেষ্টাই শিক্ষা”। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার সমাজ ও দেশের সম্পদে পরিণত হয়। তার চিন্তা-চেতনায় ও কর্মে বিশ^মানের পরিবর্তন আসে। তার সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হয়ে নিজের ও সমাজের উন্নয়নে নিজেকে সক্ষম করে তোলে। ফলে সে তার অভীষ্ঠ লক্ষ্যে এগিয়ে যায়। বাঁচাতে শেখে, বাঁচতে শেখে। ভালো মানুষ হতে শেখে।
গুনগত শিক্ষাই একুশ শতকের একটি অন্যতম চাওয়া। উত্তম শিক্ষাব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন অনুকূল পরিবেশ। আর এই পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের। শিক্ষার্থী – শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্পৃক্ততাই গড়ে দিতে পারে গুনগত শিক্ষার মজবুত ভিত।
আমাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ২৪ ঘন্টায় মাত্র ৬ ঘন্টা শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের আই-ভিশনে থাকে আর বাকী ১৮ ঘন্টা থাকে অভিভাবকদের কাছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষায় সফলতার অনেকটাই অভিভাবকদের উপর নির্ভর করে।
একজন দায়িত্বশীল অভিভাবক হিসেবে তার সন্তানের বিদ্যালয়ের প্রতিদিন অগ্রগতির খোঁজ খবর রাখা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়; শিক্ষার্থীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে বিদ্যালয়ে আসা, দুপুরের খাবার সাথে নিয়ে আসা সহ তার সার্বিক বিষয়ে অভিভাবককেই যতœশীল হতে হবে। প্রত্যেক অভিভাবক অন্তত সপ্তাহে একদিন শিক্ষকদের নিকট তার সন্তানের বিষয়ে খোঁজ খবর নিবেন। নিজের সন্তানের খোঁজ খবর নেয়া উচিত। নিজের সন্তানকে পড়ালেখাসহ নৈতিক উৎকর্ষতার তাগিদ দেয়ার পাশাপাশি অন্যের সন্তনকেও সে বিষয়ে উৎসাহী করে তুলতে হবে।
শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা ও শ্রেণির পাঠ গ্রহণে উৎসাহ দেয়া প্রয়োজন। পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষা দীর্ঘস্থায়ী ও বাস্তব ভিত্তিক করার জন্য শিক্ষার্থীকে বাসায় অধ্যবসায় করার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে ও অভিভাবককে সচেতন হতে হবে।
শিক্ষার উন্নয়নে অভিভাবকদের সম্পৃক্ত ও সচেতন করে তোলাই বড় চ্যালেঞ্জ। শিক্ষকদের যেমন অভিভাকদের পরামর্শ বা যুক্তিগুলো মন দিয়ে শুনতে হবে তেমনি অভিভাবকদের ও শিক্ষকদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। অভিভাবক বিদ্যালয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশ উন্নয়নকল্পে তারা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে পারমর্শ প্রদান করে থাকেন। এভাবেই যদি শিক্ষক অভিভাবক হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারেন তবে সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তব রূপ পাবে, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে।
লেখক:
আছিয়া বেগম, প্রধান শিক্ষক, উত্তরসুর কুলচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।