1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কেন বাবুল আক্তারের দিকেই সন্দেহের তীর পুলিশের?

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৩ মে, ২০২১
  • ২৬৬ বার পঠিত

 অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশে চট্টগ্রাম শহরে পাঁচ বছর আগের মাহমুদা খাতুন মিতু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নাটকীয় মোড় নেয়ার পর তার স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামী করে নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় নতুন মামলাটি দায়ের করেছেন বাবুল আক্তারের সাবেক শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। এরপর ওই মামলায়ই প্রাক্তন পুলিশ সুপারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালতে হাজির করে বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই।মামলার পর মি. হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ”টাকার বিনিময়ে খুনীদের দিয়ে আমার মেয়েকে হত্যা করিয়েছিল বাবুল আক্তার। পিবিআই মামলার তদন্ত শুরু করার পর সেসব বিষয় বেরিয়ে এসেছে। তাই তাকেসহ আটজনকে আসামী করে আমি আজ হত্যা মামলা দায়ের করেছি।’এর আগে পাঁচ বছর আগে বাবুল আক্তারের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই।মামলা দায়েরের আগে বুধবার সকালে মামলাটির এখনকার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ”তদন্তে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা আছে বলেই তার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। আমরা সেরকমই সন্দেহ করছি। চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলার পর বাবুল আক্তারকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পিবিআই।

মামলা সম্পর্কে যা বলছেন মিতুর বাবা:
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন মাহমুদা খাতুন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। এরপর থানায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ”বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই হত্যার সে পরিকল্পনাকারী এবং অন্য সাতজন আসামীকে সমন্বয় করে সে তার স্ত্রীকে খুন করেছে।হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে মি. হোসেন বলছেন, ”বাবুল আক্তার কক্সবাজারে থাকার সময় একজন এনজিও কর্মীর সঙ্গে পরিচয় ও প্রেম হয়। এটা মিতুর নলেজে আসে। সে সেটায় বাধা দেয়। সেই বাধা দেয়ার কারণে পরবর্তীকালে একপর্যায়ে বাবুল আক্তার তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে। মৃত্যুর আগে প্রেম নিয়ে এই পারিবারিক জটিলতার কথা মিতু তাদের জানিয়েছিল বলে মি. হোসেন বলেন। তবে এই ব্যাপারে পুলিশ বা বাবুল আক্তারের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কেন বাবুল আক্তারের দিকে সন্দেহের তীর?পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলছেন, মামলার তদন্তে বাবুল আক্তারের আচরণ এবং অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে না পারায় তাদের সন্দেহ তৈরি হয়। বাবুল আক্তারের ওপর সন্দেহের কারণ হিসাবে পিবিআই প্রধান বলেন, ”কামরুল শিকদার মুসাকে বাবুল আক্তার চিনতেন। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজে তাকে পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে। কিন্তু তাকে তিনি শনাক্ত করেননি কেন? কেন তিনি আরেকজনের দিকে (জঙ্গিদের দায়ী করে) দায় দিলেন?’

”এটা দেখার পর তার দিকে আমাদের সন্দেহ তীব্র হয়। কারণ মুসাকে তিনি খুব ভালো ভাবে চিনতেন, তার সঙ্গে যোগাযোগও ছিল। তাহলে তিনি অস্বীকার করলেন কেন?’তিনি জানান, বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম অফিসে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। এই ঘটনায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা জানিয়ে তার দুইজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি সাক্ষ্যও দিয়েছেন বলে পুলিশ জানাচ্ছে। তাদের একজন বাবুল আক্তারের একজন বন্ধু। তারা এই ঘটনায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।”তারা ওই ঘটনার বিষয়ে জানেন, কীভাবে টাকা পয়সার লেনদেন হয়েছে, কোথা থেকে টাকা এসেছে। তারা তখন জানতেন না যে, এই টাকা মার্ডারে ব্যবহার করা হবে। তবে পরবর্তীতে তারা জেনেছেন,” বলছেন বনজ কুমার মজুমদার। কী কারণে মিতু আক্তারকে হত্যা করা হয়েছে, সেই বিষয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ”এখনও আসামী হিসাবে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। যখন তাকে আসামী হিসাবে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, তখন এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

বাদী থেকে মামলার আসামী:
বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, বাবুল আক্তার এখনও এই মামলার বাদী, মামলার ডকেটে কোথাও তিনি নেই। আইন অনুযায়ী, তাকে আসামী করার সুযোগ নেই। তাই পিবিআই এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন বুধবার চট্টগ্রামের আদালতে জমা দিচ্ছে।বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। এরপরই পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন ভিকটিম মাহমুদা খাতুন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডের পর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা নিজে বাদী হয়ে প্রথম মামলাটি দায়ের করেছিলেন।এই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পিবিআই।পিবিআই প্রধান জানান, বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়টি পিবিআইয়ের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পর পুলিশ মহাপরিদর্শক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে যে পিবিআইয়ের আর তো ব্যাক করার সুযোগ নেই। তখন তারা বলেছেন, তদন্ত যা আসবে, তাই হবে। এরপর তারা বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন।বাবুল আক্তারকে সোমবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নেয়া হয়।

যা ঘটেছিল
চট্টগ্রাম নগরীতে ২০১৬ সালের ৫ই জুন সকালে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মাহমুদা খাতুন মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে খুন করা হয়।তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হওয়ায় সে সময় এই ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে।বাবুল আক্তার এর আগে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে একটি পদোন্নতি পেয়ে তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন।ঘটনার পর মামলা করেছিলেন সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা নিজেই। বাবুল আক্তার অভিযোগ করেছিলেন যে জঙ্গিরা তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে, কারণ তিনি জঙ্গি বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে মি. আক্তারকে এর আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং ঘটনার মাস তিনেক পর তাকে পুলিশ বিভাগের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।২০২০ সালে এ মামলার তদন্ত গোয়েন্দা বিভাগ থেকে পিবিআই-এর হাতে দেয়া হয়।

হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে শুরু থেকেই এক ধরনের রহস্য ছিল।মাহমুদা খাতুন মিতুর বাবা বেশ কিছুদিন যাবত মেয়ের হত্যাকাণ্ডের জন্য জামাতা বাবুল আক্তারই দায়ী বলে দাবি করে আসছিলেন।সেই সময় একজন এসপিকে স্ত্রী হত্যা সম্পর্কিত বিষয়ে ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ করা হলেও দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে মুখ খোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, যিনি প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের জানান যে সন্দেহভাজনদের মুখোমুখি করতে তাকে গোয়েন্দা দপ্তরে নেয়া হয়েছে।

কিন্তু এরই মধ্যে কিছু সংবাদমাধ্যম স্ত্রী হত্যার সঙ্গে স্বয়ং বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে খবর প্রকাশ করে।চট্টগ্রামের পুলিশ বলছে, মিতু হত্যায় সাত-আট জন অংশ নিয়েছিল।পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা মনে করেন, তদন্তকারীদের এখন খুঁজে বের করতে হবে ঘটনার পেছনে কে রয়েছে, কারণ সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো – কারা এদের ভাড়া করেছিল। আর যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, জবানবন্দীতে তারা কাদের নাম বলেছে, আর যাদের এখনও গ্রেফতার করা যায়নি, গ্রেফতার হলে তারা কাদের নাম বলবে – ওই কর্মকর্তা মনে করছেন যে এ সবই হবে এই হত্যা রহস্য উন্মোচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..