শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন
:আফতাব চৌধুরী:
১৮৯১ খিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৯খিষ্টাব্দ পর্যন্ত মণিপুর পর্যন্ত মণিপুর ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায়ের মধ্যে অšতর্ভুক্ত হচ্ছে মণিপুরের শেষ স্বাধীনতা যুদ্ধ, যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ব্রিটিশ সামাজ্যবাদের অধীনে ঔপনিবেশিক শোষণের তীব্র অভিজ্ঞতা, রাজতন্ত্রের স্বেচ্ছাচারিতা, ব্রিটিশের মণিপুর ত্যাগ এবং পরবর্তীতে স্বাধীন মণিপুর রাজ্য ভারত সরকারে মিশে যাওয়া নিয়ে বাদ-প্রতিবাদ ইত্যাদি। বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে আধুনিক মণিপুরের নির্মাতা হিসেবে জননেতা ইরাবত সিংহের ভুিমকা ও অবদান মণিপুর ইতিহাসে বিরল। ১৮৯৬ খিষ্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর জন্ম এবং ১৯৫১ খিষ্টাব্দের ২৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু। মাত্র ৫৫ বছরের জীবিতকালে ইরাবতের কার্যাবলি মূল্যায়ন করলে তা অতি স্পষ্ট যে ইরাবত বহুগুণসম্পন্ন ওক অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেল। জীবনে তিনি স্পর্শ করেননি এমন বিষয় খুব কম। ঔপনিবেশিক শক্তি ও সামন্তশ্রেণির শোষক দুইয়ের চুশূল হয়ে উঠেছিলেন ইরাবত। সুরমা উপত্যকায় এবং মণিপুরে জনসাধারণের নয়নমণি হওয়াতে বৈদেশিক শাসকেরা তাঁকে বন্দি করেছিল। তিনি ছিলেন এক উৎসর্গীকৃত দেশভক্ত,উচ্চস্থরের রাজনৈতিক নেতা, গণতন্ত্র এবং সামজবাদের পথপ্রদর্শক, সত্যিকারের বিপ্লবী সমাজ সংস্কারক, কবি সাহিত্যিক, শিল্পি ও গীতিকার,দার্শনিক ও সুনিপুণ সংগঠক,আšতর্জাতিকতাবাদী, মানব অধিকারের দিকে তাঁর দরিদ্র, অসহায় ও নিপীড়িত মানুষের অভিবাবক, আদর্শবাদী শির স্পোর্টস অ্যাকটিভিষ্ট, বিশিষ্ট সম্পাদক ও সাংবাদিক। এক জীবনে মানুষ কত কিছু করতে পারে তার এক জ্বলšত উদাহরণ হলেন জননেকা ইরাবত। ইরাবতের আজীবন সংগ্রামকে তিনভাগে ভাগ করে পর্যালোচনা করতে পারি-১) কাছাড় ও সুরমা উপত্যকায় ইরাবতের কার্যাবলী ২) মণিপুর রাজ্যে ইরাবতের কার্যাবলী ৩) বঙ্গদেশে ইরাবত।
মণিপুর ভূখন্ডে মণিপুর ভাষায় পত্রপত্রিকার উৎপত্তির ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দুইভাগে বিভক্ত করে পর্যালোচনা করা যায়। ১) প্রাাক-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অর্থাৎ ১৯২২খিষ্ট্রাব্দ থেকে ১৯৪৫ খিষ্ট্রাব্দ ২) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকাল অর্থাৎ ১৯৪৫ খিষ্ট্রাব্দ থেকে আজ পর্যন্ত।
মণিপুর ইতিহাসে মণিপুর সংবাদ জগতের পথিকৃত হিজম ইরাবত ১৯২২খিষ্ট্রাব্দে সর্বপ্রথম “মৈতৈ চনু ” পত্রিকা সম্পাদনা করেন। মণিপুরের তখন কোনো ছাপাখানা ছিল না।ইরাবত নিজে স্টেনসিলে লিখে কাঠের তৈরী সাইকোস্টাইলের মতো এক মেশিনের সাহায্যে এই পত্রিকা খুবই কষ্ট করে বের করতেন। ১৯০৮খিষ্ট্রাব্দে জনৈক ভুবন চন্দ্র একটি ব্যক্তিগত ছাপাখানা স্থাপনের জন্য মণিপুর স্টেট দরবারের অনুমতি পান। ১৯১০খিষ্ট্রাব্দে মণিপুর সরকারের একটি ছাপাখানা স্থাপন করা সত্তে¡ও পত্রপত্রিকা প্রকাশেরর কোন সুবিধা ছিল না। সমাজ ও সাহিত্যসেবায় আগ্রহী কিছু যুূবককে নিয়ে ইরাবতের উদ্যোগে সর্বপ্রথম ”মৈতে চনু” পত্রিকা প্রকাশ করতে আরম্ভ করেন। উলেখযোগ্য এই পত্রিকা প্রকাশের যাবতীয় সাজসরঞ্জাম, অর্থ ইত্যাদি যুবরাজ টিকেন্দ্রজিতের দ্বিতীয় পুত্র বীরচন্দ্র সিংহ বহন করতেন বলে ইরাবতের ঘনিষ্ট এবং প্রতিবেশী মণিপুরের খ্যাতনামা সাহিত্যিক আয়কাম শ্যামসুন্দর উলেখ করেন।কারো কারো অভিমতে ইরাবত ‘মৈতৈ চনু’ রচনা করেন। ১৯২৪ খিষ্ট্রাব্দে এই কবিতা ‘মৈতৈ চনু’ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। কয়েক বছর ধরে এর প্রকাশ অব্যাহত ছিল। কিন্তু নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক বা মাসিক অথবা নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা না রেখে সুবিধাজনকভাবে প্রকাশ করতেন কিনা সে সম্বন্ধে কিন্তু’ কেউ কিছু নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি। তবে এটা স্পষ্ট যে এই পত্রিকার মূল বিষয় বস্তু সাহিত্য ও সংস্কৃতির উপর নিভর ছিল। যদিও ঐ পত্রিকা দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি তবুও এই পত্রিকা তবুও এই পত্রিকা প্রকাশ কারার যে প্রয়াস, যারা এই পত্রিকা পড়ার ও বিশ্লেষণ করার সুযোগ পেয়ে ছিল তাদের মনে কিন্তু’ তখনকার দিনে এইরুপ একটি পত্রিকা প্রকাশ করার সানন্দ, উপযোগিতা মনের মধ্যে এক গভীর অনুভূতি নিয়ে উপলদ্ধি করতে সক্ষম হন। পরবর্তী সময়ে মণিপুরে অনেক পত্রপত্রিকা উৎসের প্রেরণা হয়ে দাঁড়াল।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কিসের অনুপ্রেরণায় বা প্রভাবে মণিপুরে এইসব সংবাদপত্র বা পত্র-পত্রিকা প্রকাশের মনোভাব সৃষ্টি হয়েছিল সংবাদ জগতের সঙ্গে জড?িতদের আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। কারণ হিসেবে কিছু উলেখ করতে পারি যে বহিঃমণিপুরে বিশেষ করে তখন বঙ্গদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশিত অনেক পত্রপত্রিকার প্রভাবে মণিপুরে এই সংবাদজগতের অভাবকে পূরণ করার অনুপ্রেরণা পেয়েছিল অথবা ইরাবত ব্যতীত অন্যান্য যাঁরা মণিপুরের বাইরে শিাদীা শেষ হওয়ার পর স্বদেশে ফিরে এসে হয়ত তাঁদের মনে স্বদেশ ও মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার কারণে এইরূপ পত্রপত্রিকা প্রকাশ করার ইচ্ছা জেগেছিল। আবার অন্যদিকে ইরাবতের ‘মৈতে চনু প্র্রকাশের আগে কাছাড় ও প্রতাপগড ‘মৈতৈ লৈমা’ ‘জাগরণ’ ইত্যাদি মণিপুরে পত্রপত্রিকা প্রকাশের রেকর্ড রয়েছে। এই সব পত্রপত্রিকার সংখ্যা হয়তো মণিপুরে পৌঁছার পর প্রভাবিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রথমদিকে ইরাবত সংবাদ জগৎ নিয়ে ব্য¯ত থাকলেও পরবর্তীতে ইরাবত সম¯ত সেবামূলক আরও অন্যান্য কাব্যে অধিক মনোযোগ দিতে শুরু করেন। কিন্তু লেখালেখি বন্ধ করেননি। কেবলমাত্র মণিপুরের প্রকাশিত পত্রপত্রিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বহিঃমণিপুরে প্রকাশ করা ‘হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড ‘ বঙ্গদেশের রেঙ্গুনে প্রকাশ করা ‘তুরিয়া (সূর্য) ও অন্যান্য পত্রপত্রিকাতে মণিপুরের তখনকার ব্যাপক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক দর্শন ইত্যাদি প্রকাশ করেন। ইরাবতের দেওয়া বিভিন্ন প্রেস বিবৃতি থেকে জার্নালিজম সম্পর্কে তাঁর পারদর্শিতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ইরাবতের জার্নালিজম সম্পর্কে দুটি বিষয় লক্ষণীয়। প্রথমে মণিপুরে সংবাদপত্রের পথিকৃৎ হিসেবে ‘মৈতৈ চনু’ প্রকাশ করার পরবর্তী সময় ও দ্বিতীয়ত ১৯৪৭সালে ‘অনৌবা যুগ’ প্রকাশের অধ্যায়। প্রথম অধ্যায়ে প্রকাশের অধিকাংশ বিষয়বস্তু ছ্লি সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক। রাজনীতি চিন্তাধারার সঙ্গে সংযুক্ত কোনো সংবাদ বা তথ্য ছিল না, কিšতু দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রকাশের মূল বিষযবস্তু ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি তাঁর রাজনৈতিক দর্শন, আন্দোলনের সাফল্যের ইতিহাস, সাম্রাজ্যবাদের অধীন¯ত ঔপনিবেশিক দেশগুলোতে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের সংগঠিত আন্দোলন, গণতন্ত্র ও সমাজবাদ স্থাপনের তীব্র আকাঙ্কা ও প্রয়োজনীয়তা, রাজতন্ত্রের স্বেচ্ছাচারিতা ইত্যাদি তুলে ধরে জনগণের মধ্যে গণচেতনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হন।
দ্বিতীয় মণিপুরি মহিলা যুদ্ধ (১৯৩৯-৪০) নিয়ে হৃদয়বিদারক বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে মণিপুরি মহিলাগণকে ইন্ধন জোগানোর দোষে দোষী সাব¯ত করে ইরাবতকে ৩ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। ইস্ফল জেলে এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর জেল সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য পরে সিলেট জেলে ট্রান্সফার করা হয়। সিলেট জেলে থাকাকালীন কমিউনিস্ট বন্দি জ্যোতির্ময় নন্দী,সিলেট জেলা কংগ্রেস কমিটির সেক্রেটারি বীরেশ মিশ্র, কাছাড় কংগ্রেসের নেতা অরুণ চন্দ, করিমগঞ্জ কংগ্রেসের নেতা রবি আদিত্য ইত্যাদির ঘনিষ্ট সান্নিধ্যে আসেন ইরাবত সিংহ। প্রিয় বন্ধু হেমাঙ্গ বিশ্বাস ইরাবতকে ‘সীমাšত প্রহরী’ আখ্যা দিয়েছেন। গান্ধীজির শিক্ষা ও দর্শন নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক, অন্যদিকে কমিউনিষ্ট বন্দিদের প্রভাবে মার্কসবাদ লেনিনবাদ, আšতর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস এবং গণতান্ত্রিক সোভিতে ইউনিয়নের অভূতপূর্ব সাফল্যের সঙ্গে পরিচিত হন। জেলের ভেতরে গোপনে নিয়ে আসা পত্র-পত্রিকা ও মার্কসবাদী তত্ত¡ নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন শুরু করেন। পরিশেষে ইরাবত সিংহ শ্রমজীবি জনগণের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক, আপোসহীম সংগ্রাম এবং জনগণের সর্বাঙ্গীম মুক্তির জন্য বিপ্লবী উদ্যম ও দৃঢ সংকল্প প্রদর্শন করে কমিউনিজম এবং ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টির নীতি ও আদর্শের প্রতি আস্থা স্থাপন করেন।
জেল থেকে মুক্ত হয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফলে নিজ মাতৃভূমি মণিপুরে প্রবেশ করতে পারেননি। ১৯৪৬-৫০এর মধ্যে সংঘটিত রাজনৈতিক ঘটনাবলীর সঙ্গে ইরাবত প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এবং এইক্ষেত্রে তিনি সাংবাদিকতাকে এক মূখ্য অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করেন। তাঁর’অনৌবা যুগ’ বিশ্লেষণ করলে এবং এই পত্রিকা প্রকাশের আভ্যন্তরীণ রহস্য যদি আলোচনা করি তাহলে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাদের রাশিয়ার লেলিন প্রমুখের কথা মনে পড়ে।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করা মাহাত্মা গান্ধী তাঁর ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’ ও বালগঙ্গাধর তিলক তাঁর মারাঠি পত্রিকা ‘কেশরী’ প্রকাশের মাধ্যমে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে জাগরিত করে তোলার ক্ষেত্রে জার্নালিজমের সঙ্গে যেভাবে অনেক রাজনৈতিক পত্রপত্রিকা প্রকাশ করেছিলেম, সেভাবে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, রাশিয়াতে প্রকাশ নিষিদ্ধ পওয়ার পরও জার্মানি থেকে প্রকাশ করে লেলিন যে জনমত গঠন করতে সফল হোন ইরাবতের ‘অনৌবাযুগ’ বিশ্লেষণের অনুরুপ ভূমিকার দৃশ্য মনে পড়ে। ইরাবত নিজে সম্পাদনা করে নিজের হাতে স্টেনসিলে লিখে সাপ্তাহিক হিসেবে প্রকাশ করা ‘অনৌবা যুগ’ মণিপুরি সংবাদ জগতে রাজনীতির প্রথম মণিপুরি সংবাদপত্র বলে আখ্যায়িত। অন্যান্য পত্রিকার তুলনায় ‘অনৌবা যুগ’- এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো এই পত্রিকার মাধ্যমে তখনকার পৃথিবীর রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্থৃতভাবে আলোকপাত করেন সারা বিশ্বজুড়ে শোষিত কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির করুণ অব¯থা তুলে ধরে নৈতির চেতনা সৃষ্টি করে স্বাধীনতা ও সমাজবাদের চিšতাধারার আদর্শ তুলে ধরে জনমত গড়ে তুলতে সহায়ক ছিলেন।
মণিপুর রাজ্য লেখাগারে সংরতি করে রাখা এবং ব্যক্তিগত কয়েক জনের কাছে পাওয়া ‘অনৌবা যুগ’ – এর সংখ্যাগুলো বিশ্লেষণ করলে ইরাবতের চিšতাধারা, তাঁর সংবাদ লেখার পদ্ধতি, এডিটোরিয়াল পলিসি সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে। এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি তাঁর রাজনৈতিক দর্শন প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক শত্রুদের অভিযোগ,প্রোপাগান্ডা ইত্যাদির যথার্থ কাউন্টার দেওয়ার অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করেন। কেবল রানৈতিক বিষয় ছাড়াও আনন্দদায়ক অনেক সংবাদও সংযোজন করেন। বিশেষ করে একটা নিউজ স্টোরির নামকরণে হেডিং দেখামাত্র পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হোন।
১৯৪৯সালের ২১সেপ্টেম্বর পুংদোংব নামক স্থানে সংঘটিত একটি ঘটনার পেরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে ইরাবত বাধ্য হয়ে বিপ্লবীর রুপ ধারণ করেন। আন্ডারপ্রাউন্ড থাকাকালীন সময়ে ও তিনি এই পত্রিকার প্রকাশ অব্যাহত রাখেন। আমাদের যদি ইরাবতের প্রকৃত আদর্শ, রাজনৈতিক দর্শন ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে তাহলে ‘অনৌবা যুগ’ পত্রিকার কপিগুলো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগা হলো তাঁর বিদ্রোহের জন্য সরকারের গ্রহণ করা নিষিদ্ধমূলক কঠোর পদক্ষেপের ভয়ে এই পত্রিকার অনেক কপি নষ্ট করে ফেলা হয়েছিল। তা স্বত্তেও যে কয়টি কপি পাওয়া গিয়েছে তা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ইরাবত মণিপুরের সংবাদ জগতের পথিকৃৎ হিসাবে এতে কারও দ্বিমত নেই।