1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

ইজতেমা স্টাইলে বিএনপির ফরিদপুরে সমাবেশস্থলেই নামাজ ও খাওয়া-দাওয়া

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২
  • ৩৪৪ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোট: সমাবেশস্থলেই নামাজ পড়ছেন ও খাওয়া-দাওয়া করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলেই নামাজ পড়ছেন ও খাওয়া-দাওয়া করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা ।
আগামীকাল শনিবার ফরিদপুর শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে কোমরপুরের আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুদিন ধরেই সেখানে জড়ো হচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। সেখানে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মী খাওয়া-দাওয়া করছেন ও সময় কাটাচ্ছেন। নিজ নিজ এলাকা থেকে আনা বড়-বড় পাতিলে রান্না করছেন। সব মিলিয়ে ফরিদপুরের সমাবেশস্থলে ফিরে এসেছে ইজতেমার আবহ। দলবেঁধে গল্প করছেন আগত নেতাকর্মীরা, পরস্পর গলা মিলিয়েছেন নানান গানেও।

আজ শুক্র ও শনিবার ফরিদপুরে দুদিনের বাস ধর্মঘট ডাকলেও সব উপেক্ষা করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন পরিবহনে ভেঙে ভেঙে, মাইক্রোবাস ভাড়া করে, বাইসাইকেল চালিয়ে ও নৌপথে বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে হাজির হচ্ছেন। দুদিন ধরে আসতে থাকা এসব নেতাকর্মীর খাওয়া-দাওয়াসহ সব চলছে সমাবেশস্থলে। সেজন্য দলের পক্ষ থেকে মাঠের একপাশে করা হয়েছে রান্নার আয়োজন। সেখানে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মীর জন্য রান্না করা হচ্ছে খিচুড়ি। সমাবেশস্থলেই একসঙ্গে জুমার নামাজও আদায় করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। সাধারণত নামাজ আদায় ও খাওয়া-দাওয়ার এমন চিত্র দেখা যায় টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে সমবেত নেতাকর্মীদের দলের পক্ষ থেকে খাওয়া দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন ওই মাঠে গিয়ে দেখা যায়, জুমার নামাজ শেষে সমাবেশের মাঠের পাশে লাইন ধরে খিচুড়ি খেতে বসেছেন নেতাকর্মীরা। নিজ উদ্যোগে একে অপরকে খাবার এনে দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

পার্শ্ববর্তী জেলা রাজবাড়ী থেকে আসা যুবদল নেতা আবুল হাসান বলেন, ‘বাস বন্ধ থাকার কারণে ইজিবাইকে এসেছি। কষ্ট হলেও ফরিদপুরসহ অন্য জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকেই বেশ ভালো লাগছে। সবাই একসঙ্গে দুপুরে খিচুড়ি খেলাম, এটাও স্মৃতি হয়ে থাকবে। শরীয়তপুর থেকে আসা যুবদল নেতা আবুল কাশেম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমরা নিজেরাই রান্না করে খেয়েছি। আজ থেকে দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে। আমার সঙ্গে যে ১২ জন এসেছে, তারা সবাই একসঙ্গে সমাবেশস্থলের পাশের স্কুলেই রাতে থাকি। আগামীকাল সকালেও খিচুড়ির ব্যবস্থা আছে জেনে ভালো লাগলো।’

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা বলেন, ‘আমরা দলের সামর্থ্যের মধ্যে চেষ্টা করছি। কেউ যেন অভুক্ত না থাকে সেজন্য দুবেলা খিচুড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে সমাবেশস্থলের মঞ্চ ও আলোকসজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ব্যানার ও ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে সমাবেশের আশপাশের স্থান। শুক্রবার বিকালে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন তারা। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর নিতে আসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তার সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আলাপকালে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ফরিদপুর বিভাগীয় সমাবেশের আগের দিনই মাঠ ভরে গেছে। এই অঞ্চলের নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেছেন। তাদের ঘরে ফেরার সুযোগ নেই। আজ রাতে নেতাকর্মীরা মাঠেই থাকবেন। আমি যাদের জিজ্ঞেস করেছি, তারাই বলেছেন সমাবেশে নেতাদের নির্দেশনা শুনে বাড়ি ফিরবেন। তারা বলেছেন, আমরা ঘুমাতে আসিনি। বিএনপি মহাসচিব সমাবেশস্থলে এসেছেন খোঁজ-খবর নিতে।

মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, মাহেন্দ্র, ভটভটি চলাচলের প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত বাস-মিনিবাস ধর্মঘট পালন করছে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এতে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের। একইসঙ্গে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষও।রাজশাহীগামী যাত্রী আসমা বেগম বলেন, ‌‘আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। বাড়িতে ফিরে যাবো বলে বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস চলছে না। এখন বাড়ি ফিরবো কীভাবে জানি না। রংপুরগামী দিনমজুর রাশেদ শেখ বলেন, ‘ফরিদপুরে কাজে এসেছিলাম। সকালে বাড়ি যেতে বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস বন্ধ। বাড়িতে স্ত্রী অসুস্থ খবর পেয়ে যাচ্ছিলাম, এখন কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাশেদ হাসানের এক আত্মীয় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাকে দেখতে এসেছিলেন তিনি। আজ সকালে বাড়ি ফেরার জন্য টার্মিনালে এসে দেখেন বাস বন্ধ। রাশেদ বলেন, ‘আত্মীয়ের অপারেশন হয়েছে গতকাল রাতে। তাই দেখতে এসেছিলাম। এখন বাস বন্ধ। বাড়িতে যাবো কীভাবে বুঝতে পারছি না। ফরিদপুরের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আশফাক হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে সব গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছি। কিছু সময় পর কাউন্টার বন্ধ করে দেবো।

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা থেকে আসা বিএনপি নেতা তরিকুল হোসেন বলেন, ‘বিকালে আমরা ৫০-৬০ জন এসেছি। নসিমনে করে গ্রামের রাস্তা দিয়ে আসতে হয়েছে। আগামীকাল সমাবেশ, তাই আজকে চলে এসেছি।’

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির নেতা আব্দুল কাশেম বলেন, ‘গত বুধবার রাতে আমরা তিনটি বাস নিয়ে এসেছি। ধর্মঘটের খবর জানতে পেরে আমরা আগেই চলে এসেছি। রাতে থেকেছি মাঠে, খেয়েছি এখানেই। সমাবেশ শেষ হলে বাড়ি যাবো। ধর্মঘট বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া বলেন, ‘এই সরকার যে বাধা সৃষ্টি করছে, তা জনগণ মেনে নেবে না। মানুষের ঢল নামবে সমাবেশে। ফরিদপুরের সমাবেশ সফলভাবে সম্পন্ন হবে। এই সরকারকে আমরা উচ্ছেদ করবোই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আগামীকাল ফরিদপুরের বিভাগীয় গণসমাবেশ। ফরিদপুরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় নানাভাবে বাধা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। গভীর রাতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ইতোমধ্যে ফরিদপুর শহরে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে জনগণ ও নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছে। আগামীকাল ফরিদপুরের গণসমাবেশটি হবে ঐতিহাসিক।’

ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, মাহেন্দ্র বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। এর আগেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আগামীকাল শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..