1. newsmkp@gmail.com : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. info@fxdailyinfo.com : admi2017 :
  3. admin@mkantho.com : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তামিম

ফুটবল বিশ্বকাপ ও বিশ্ব অর্থনীতি

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২
  • ৯৮ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট ::মধ্যপ্রাচ্যের ছোট্ট একটা দেশ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক হতে পারে তা এই শতকের শুরুতে কারও কল্পনায় ছিল কি? না হলে কি হবে, বাস্তবতা তাই; ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসর চলছে কাতারে। এটা যে আমাদের কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয় না, সেটাই সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার।

আমার পেশাদার জীবনের বড় সময় আমি নান্দনিক ক্রীড়া ও বিশ্ব অর্থনীতির মধ্যে সংযোগের খুঁজে বেড়িয়েছি। গোল্ডম্যান স্যাক্স ও তার আগে সুইস ব্যাংক কর্পোরেশনে থাকার সময় ১৯৯৪ থেকে ২০১০ পর্যন্ত প্রতিটি বিশ্বকাপ ঘিরে বিশেষ প্রকাশনা ছাপার দায়িত্ব নিয়ে নিজের দ্বৈত আবেশে মগ্ন হয়েছিলাম। একটা প্রকাশনার পর, আমি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্যেষ্ঠ কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের কাছ থেকে অভিনন্দন বার্তা পেয়েছিলাম। কেউ কেউ আমাকে বলেছিলেন যে, অর্থনৈতিক ঘটনা ও বাজার নিয়ে আমরা যত ঘন ঘন প্রকাশনা করেছি, সেই বিবেচনায় এই প্রকাশনা যেমন মজাদার, তেমনি চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে। আমরা তখন জাতীয় নেতা ও ফুটবল তারকাদের অতিথি লেখক হতে রাজি করিয়েছিলাম। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ম্যানেজার কিংবদন্তী অ্যালেক্স ফার্গুসন একটা সংখ্যায় তার বিবেচনায় সর্বকালের বিশ্বসেরা দল বাছাই করে দেন।

এখন পর্যন্ত আমি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, জার্মানি, সাউদ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে আয়োজিত ছয়টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে পেরেছিলাম। যারা এই আসরকে নানা জাতির ও সংস্কৃতির সবচেয়ে সুন্দর সম্মিলন হিসেবে বর্ণনা করেন, এইসব অভিজ্ঞতার পর আমিও তাঁদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছিলাম। ২০০৬ সালে জামার্নির বিশ্বকাপে শুরু হওয়া ‘ফ্যান জোনের’ প্রচলনটা সত্যিই দারুণ, যা ওই চেতনাকে মূর্ত করেছিল। তবে এর আগেই ২০০২ সালের সিউল বিশ্বকাপের সময়ই আমি সেটা তীব্রভাবে অনুভব করেছি।

ফুটবল ও বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতির মধ্যে মোক্ষম যোগসূত্র আছে, টুর্নামেন্টের আয়োজক বাছাইয়ে তা স্পষ্ট। আমার মতে, ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ফিফা বিশ্বকাপ ভেন্যু হিসেবে এই শতাব্দীর প্রথম দুই দশকে তথাকথিত উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকেই যে বাছাই করেছে, তা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। দীর্ঘদিন ধরেই আমার ভাবনা, অন্য ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও সাউদ আফ্রিকা) জোটভুক্ত বাকি দুটি দেশও ভবিষ্যতে আয়োজকদের এই ছোট গ্রুপে যোগ দিতে পারে।

কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অনেক বড় দেশের অন্তর্মুখী প্রবণতার দেখা যাচ্ছে। তাতে বিশ্বক্রীড়ার সবচেয়ে বড় এ আসরের আয়োজক হতে চাওয়ার দিন কি আস্তে আস্তে ফুরিয়ে যাচ্ছে? উচ্চাভিলাষী উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো কি বিশ্বের সবচেয়ে দর্শনীয় এই টুর্নামেন্ট আয়োজনে সফল হওয়াকে ক্রমেই কঠিন মনে করবে? নাকি শিগগিরিই পরিতৃপ্ত, বিশ্বায়িত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজার ব্যবস্থায় ফিরতে পারে বিশ্ব? কেউ আরও গভীরে গিয়ে বলতে পারে, ‘ফিফা বিশ্ব অর্থনীতি ও বিশ্বায়নের মাত্রার নেতৃস্থানীয় নাকি পিছিয়ে থাকা সূচক।’

পরবর্তী চার সপ্তাহে এই প্রতিযোগিতা কীভাবে আগাবে এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, কতজন এই ম্যাচ দেখবে-তা এই বিশ্বকাপের ব্যাপকতর তাৎপর্যের সবচেয়ে স্পষ্ট প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। বিশ্বকাপের আসর ফিফার রাজস্ব আয়ের মেরুদণ্ড। পেশাদার ক্লাবগুলোর বাড়তি আয়ের উচ্চাভিলাষের অনুপ্রেরণা থেকেই হয়তো বিশ্বকাপকে দ্বিবার্ষিক আসরে পরিণত করার অথবা চতুর্বার্ষিক ক্লাবভিত্তিক প্রতিযোগিতার পরিপূরক হিসেবে আয়োজনের কথা নিয়ে এর মধ্যেই আলোচনা চলছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতির ভবিষ্যৎ যদি গত দুই-তিন দশকের চেয়ে খুব ভিন্ন হয়, তবে ফিফার সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যে তার প্রতিফলন দেখা যাবে। ২০১০ সালের পর এই আসরের আয়োজকদের চেয়ে উদীয়মান অর্থনীতিগুলি যদি বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে কম অবদান রাখে, তারপরও ফিফা ভবিষ্যৎ আসর আয়োজক হিসেবে এসব দেশকে ভাববে-এমনটা কল্পনা করা কঠিন।

১৯৮০,১৯৯০, ২০০০ এর দশক এবং ২০১১-২০ মেয়াদে বিশ্বে প্রকৃত গড় জিডিপি দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, ৩ দশমিক ৯ শতাংশ ও ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। সাম্প্রতিক দুই দশকে জিডিপি যে তর তর করে বেড়েছে তা স্পষ্টতই উদীয়মান বিশ্বে জোরালো প্রবৃদ্ধির কারণে। এবং সেটা তখন হয়েছিল, যখন ফিফা ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী শক্তির বাইরে থেকে আয়োজক বাছাই শুরু করেছিল। এখন মনে হচ্ছে, চলতি দশকে এই প্রবণতা উল্টে যেতে পারে, যদিও আরও আট বছর বাকি।

কিন্তু এবার বিজয়ীদের কী হবে? আগের প্রকাশনা তৈরির সময় আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে চার সেমিফাইনালিস্ট কারা হবে-এর চেয়ে বেশি ভবিষ্যদ্বাণী করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এক দিক থেকে যে বাস্তববাদ দিয়ে অর্থনৈতিক পূর্বাভাস করা হয়, একই বিষয় বিশ্বকাপের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অন্যদিকে, যে দেশগুলির নেতারা জয়ী হবে বলে আমরা পূর্বাভাস দিইনি, তারা বিষয়টিতে খুব ভালো চোখে দেখেননি।

আমি ইতিহাস দিয়ে শুরু করি। বিশ্বকাপ জিতেছে মাত্র আটটি দেশ। পাঁচবারের বিজয়ী ব্রাজিল সবসময় অন্যতম ফেবারিট। আর এই বছরের স্কোয়াডকে টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল বলে মনে হচ্ছে। আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন ও ইংল্যান্ড আগের বিজয়ী। ইতালি এবার কোয়ালিফায়িং রাউন্ডে বাদ পড়েছে। কিন্তু বাকিদের মধ্যেই কেউ বিজয়ী হবে।

ইংল্যান্ড হয়তো আবার বিশ্বকাপ জিতবে, তবে অন্য কেউ সহজেই বিজয়ী হতে পারে। বাকিদের মধ্যে ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও পর্তুগাল সাধারণত তাদের অর্থনীতি ও জনসংখ্যার বিচারে সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাওয়া চেষ্টা করবে। তবে যেই জিতুক, ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তার সব সংকেত এখান থেকে খুঁজে বের করার চেষ্টাটাই থাকবে আমার, বরাবরের মতোই।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..