1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

বৃটেনে থাকতে হলে ইংরেজি জানতে হবে

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২৫১ বার পঠিত
আফতাব চৌধুরী

ফরফরিয়ে ইংরেজি বলতে পারেন? তা হলে এ যাত্রায় আপনার ফাঁড়া নেই। কিন্তু বলতে গেলে কি থমমত খান, ঠিক শব্দটা মোটেই মনে পড়ে না? তা হলে সাবধান। আপনার
ব্রিটেনে থাকার দিন যে-কোনো সময় শেষ হয়ে যেতে পারে। সে দেশের সরকার রীতিমতো পরীক্ষা করে দেখবে তাদের ভাষা আপনি গড়গড়িয়ে বলতে পারছেন কিনা,
যদি দেখে মোটেই ধাতস্থ হননি। তা হলে আপনি যে দেশ থেকে গেছেন, সেখানেই পাঠিয়ে দেবে। কাজেই স্পাউস ভিসায় ব্রিটেনে থাকতে হলে ভিনদেশিদের ভালো ইংরেজিটা
জানতেই হবে। এ সব কথা সম্প্রতি জানিয়েছেন খোদ ডেভিড ক্যামেরন। ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। তিনি কথাটা সবার উদ্দেশ্যে অর্থাৎ যাঁরা স্পাউস ভিসায় সে দেশে এসেছেন তাঁদের স্ত্রীদের সম্পর্কে বলেছেন। বিশেষ করে উল্লেখ করেছেন মুসলিম মহিলাদের কথা। তিনি সাফ জানান মুসলিম মহিলাদের ‘ভালো ইংরেজি’ বলা শিখতে হবে। না-হলে তাঁদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সন্তান থাকলেও কোনো রেয়াত করা হবে না। একটি সাক্ষাৎকার অনুষ্টানে এ কথা জানালেন বিট্রিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তাঁর দাবি, মুসলিমসহ বিশেষ কিছু গোষ্ঠীর মহিলারা পুরুষদের চাপানো ‘বিচ্ছিন্নতা’ কাটিয়ে যাতে আরও বেশি করে ব্রিটিশ সমাজে মিশে যেতে পারেন, সে জন্যই এই উদ্যোগ। তা ছাড়া, এর ফলে সন্ত্রাসবাদী মতাদর্শের শিকার হওয়ার প্রবণতাও তাঁদের মধ্যে কমে আসবে। আগামী অক্টোবর মাস থেকে এই নতুন নিয়ম শুরু হবে। তবে ব্রিটেনের মুসলিম সংগঠনগুলোর একাংশের অভিযোগ বলে জানা গেছে, ক্যামেরন দু’টি আলাদা বিষয়কে ‘গুলিয়ে’ ফেলে উচিত কাজ করছেন না। ‘বিবিসি রেডিয়ো-ফোর’ অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ক্যামেরন বলেন, ‘বর্তমানে একেবারে কাঁচা স্তরের ইংরেজি বলেও কেউ এ দেশে থাকতে পারেন। আমরা এতে বদল আনব। যাঁরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজি বলার দক্ষতাকে বাড়াবেন না, তাঁদের ব্রিটেনে থাকার সম্ভাবনাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। জানি এটা কঠিন। কিন্তু যাঁরা এ দেশে থাকতে আসছেন, তাঁদের কিছু দায়িত্ব থেকে যায়’। ক্যামেরন জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে ব্রিটেনে থাকতে যে মহিলারা বছরের ‘স্পাউসাল সেটলমেন্ট ভিসা’ নিয়ে ব্রিটেনে আসেন, ব্রিটেনে প্রথম আড়াই বছর বসবাসের পর তাঁদের সরকার-আয়োজিত ওই ইংরেজি পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে। তাতে পাশ না-করলে ব্রিটেনে ওই মহিলাদের বসবাসের ‘গ্যারান্টি দেওয়া যাবে না’, জানান ক্যামেরন। ওই সময়ের মধ্যে তাদের সন্তান জন্মালে, সেই শিশু অবশ্য নিয়ম অনুযায়ী ব্রিটিশ নাগরিকত্বই পাবে এবং বাবার সঙ্গে ব্রিটেনে থাকতে পারবে। কিন্তু স্বচ্ছন্দভাবে ইংরেজি বলতে না-পারার কারণে ওই মহিলা নিজের দেশে ফিরে অন্য সেই দেশে থাকার অধিকার না-ও পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্বামী সন্তানকে ব্রিটেনে রেখে ফেরৎ যেতে হবে ওই মহিলাকে। নিজ দেশে তবে ক্যামেরন এ কথাও স্বীকার করেছেন, বাজেটে ব্যাপক ঘাটতির কারণে ব্রিটেনের ভিনদেশি অভিবাসীদের ইংরেজি শেখানোর তহবিল কমিয়ে ২ কোটি পাউন্ড করা হয়েছে। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ওই তহবিল এখন অনেক বেশি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ব্যবহার করা হবে। ক্যামেরনের বক্তব্য, ভিনদেশি মহিলাদের মধ্যে জেহাদি চিন্তাধারা বিশেষত আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর চিন্তাধারা রোখাটাও এই উদ্যোগের একটা উদ্দেশ্য। ক্যামেরনের কথায়, ‘ইংরেজি না-বলার সঙ্গে জঙ্গি চিন্তাধারার কোনো সহজ সম্পর্ক রয়েছে, এ কথা বলছি না। তবে, ইংরেজি বলতে না-পেরে ব্রিটিশ সমাজে মিশতে বাধা পেয়ে অনেকের মধ্যেই আত্মপরিচয়ের সংকট তৈরি হয়। তখন সেই ক্ষোভ থেকে তাঁরা মতাদর্শে প্রভাবিত হয়ে পড়তে পারেন।’ প্রসঙ্গত, গত চার বছরে ব্রিটেন অন্তত ৮০০ জন সিরিয়া গিয়ে আইএসে যোগ দিয়েছে, আর যেতে গিয়ে অন্তত ৬০০ জন গ্রেফতার হয়েছে। ফলে চিন্তায় রয়েছে ব্রিটিশ প্রশাসন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ব্রিটেনে মুসলিম মহিলাদের ২২ শতাংশ ইংরেজি খুব কম জানেন, অথবা জানেনই না। সংখ্যাটা একেবারে ছোট নয়। পাশাপাশি,কিছু গোষ্ঠীর পুরুষেরা তাঁদের মহিলা সদস্যদের জোর করে সামগ্রিক সমাজ থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করে রাখেন। যার ফলে ওইসব মহিলাদের উপর বিভিন্ন ধরনের ভয়াবহ অত্যাচার যেমন, যৌনাঙ্গে আঘাত বা জোর করে বিয়ে চলে। নয়া উদ্যোগে সে প্রবণতাও রোখা যাবে। একই উদ্দেশ্যে শরিয়া আদালতের মতো বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থার কার্যকলাপও পুনর্বিবেচনা করে দেখবে সরকার, যাতে সেই সব পুরুষদের রোখা যায়, যারা ‘তাদের স্ত্রী, বোন ও কন্যাদের জীবনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে’, জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সরকারের ‘অসুবিধাগ্রস্ত পরিবার’ ইউনিটের অধীনে ‘বিশেষ-বিশেষ গোষ্ঠী’র মধ্যে ইংরেজি শেখানোর অভিযান চলবে এবং বাড়ি, স্কুল এবং বিভিন্ন কমিউনিটি ভবনে ইংরেজির ক্লাস নেওয়া হবে। তবে মুসলিম ছাড়া অন্যান্য গোষ্ঠীদের নাম উল্লেখ করেননি ক্যামেরন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক অ্যালেক্স ফোরসিথ শেষে বলেন, ‘একটা স্তরের ইংরেজি বলতে না-পারলেই দেশে ফেরত পাঠানো হবে, সরকার এতটা কড়া বার্তা দিচ্ছে না। শুধু এটা বোঝাচ্ছে যে, ব্রিটেনে থাকার অধিকারের মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ইংরেজির দক্ষতাকে অন্যতম প্রধান শর্ত হিসাবে দেখা হবে।’এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়েছেন মুসলিম সমাজের একাংশ। রামান ফাউন্ডশনের কর্মকর্তা মুহাম্মদ শফিক বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার জন্য মুসলিম সমাজের ভিতরে ভরসা ও সমর্থন তৈরির কাজ করা এবং দেশজুড়ে সেই উদ্যোগকে সাহায্য করাটাই শ্রেষ্ঠ উপায়। মুসলিমদের অর্থ বরাদ্দ ২০১১ সালে কমিয়েছে সরকার। ফলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের প্রহসনটা অনেকের কাছেই স্পষ্ট।’ আইএসে যোগ দেওয়া লন্ডনের মেট্টোপলিটন পুলিশের প্রাক্তন কর্তা ডাল বাবু। তাঁর কথায়, ‘ইংরেজি শেখানোর উদ্যোগ স্বাগত কিন্তু জেহাদি ও চরমপন্ত্রী মতাদর্শ রুখতে ইংরেজি শেখার ভূমিকাকে খুব ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখলে কোনো উপকার হবে বলে মনে করি না। আর, বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘রানিমেড ট্টাস্ট জানাচ্ছে, ব্রিটেনে মুসলিম মহিলাদের ৬ শতাংশ ইংরেজিতে দুর্বল, ২২ শতাংশ সরকারি হিসাবে নয়।’’ সাংবাদিক-কলামিস্ট।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..