1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজারে লাখো পর্যটক, খালি নেই হোটেল-রিসোর্ট

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২৮৯ বার পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদক: টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারে। ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত পর্যটক আসায় হোটেল-রিসোর্টের কোনও কক্ষ খালি নেই। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শতভাগ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর বিকাল থেকে আসতে শুরু করেন পর্যটকরা। আজ শনিবার জেলার কয়েকটি হোটেল-রিসোর্ট ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত। অতিরিক্ত পর্যটক আসায় হোটেল-রিসোর্টের কোনও কক্ষ খালি নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চায়ের রাজধানীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা ৯০ শতাংশ পর্যটক শ্রীমঙ্গলের হোটেল-রিসোর্টে রাত্রিযাপন করেন। বাকি ১০ শতাংশ পর্যটক জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলায় অবস্থান করেন।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যোগ হয়েছে বড়দিনের ছুটি। তিন দিনের ছুটিতে জেলায় লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে। ছুটি শুরু হওয়ার আগেই হোটেল-রিসোর্টের ৯৫ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। গত দুদিনে বাকিগুলো বুকিং হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে হোটেল-রিসোর্টে অবস্থান করছেন পর্যটকরা। কোনও কক্ষ খালি নেই। তবে কোনও কোনও পর্যটক অভিযোগ করেছেন, এখানের হোটেল-রিসোর্টগুলোতে ভাড়া তুলনামূলক বেশি। এমনকি সেবাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না।

স্থানীয় সূত্র জানায়, যেকোনো ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় থাকে শ্রীমঙ্গলে। পর্যটকদের জন্য এখানে দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—উঁচু-নিচু পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের গালিচায় মোড়ানো সারি সারি চা-বাগান, বাইক্কা বিল, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত,মাধবপুর লেক,চা জাদুঘর,বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, হাকালুকি হাওর, হামহাম জলপ্রপাত, হাইল হাওর, চা-কন্যা ভাস্কর্য, বধ্যভূমি ৭১,ভাড়াউড়া লেক,জাগছড়া লেক, ব্রিটিশদের সমাধিস্থল ডিনস্টন সিমেট্রি, হরিণছড়া গলফ মাঠ, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী পল্লি, সুপ্রাচীন নির্মাই শিববাড়ি, খাসিয়া পুঞ্জি, মণিপুরি ও ত্রিপুরাদের গ্রাম, শংকর টিলা লেক, ফুলছড়া গারো লাইনের লেক, হরিণছড়া তীর্থস্থান, হরিণছড়া ঝাউবন, বিদ্যাবিল হজম টিলা, নাহারপুঞ্জিতে শতবর্ষ গিরিখাত, ধলই চা-বাগানে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, রাজনগরের কমলা রানির দিঘি, কাউয়াদিঘি হাওর, জেলা সদরের ৫০০ বছরের প্রাচীন স্থাপত্যের খোজার মসজিদ, বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক, জুড়ীর সারি সারি কমলা ও আগরের বাগান, কুলাউড়ার গগনটিলা, কালাপাহাড় ও মূরইছড়া ইকোপার্ক। পর্যটক-২ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত পর্যটক আসায় হোটেল-রিসোর্টের কোনও কক্ষ খালি নেই

হোটেল-রিসোর্টের ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, রাঙ্গাউটি রিসোর্ট, বর্ষিজোড়া বাগান বিলাস রিসোর্ট, শ্রীমঙ্গল রাধানগর গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, চা বোর্ডের টি রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়াম, টি হ্যাভেন, লেমন গার্ডেন, বালিশিরা রিসোর্ট, নবেম রিসোর্ট, গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্ট, হিড বাংলাদেশসহ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজের কক্ষ শতভাগ বুকিং হয়েছে। পাশাপাশি শ্রীমঙ্গলের ফাইভ স্টার হোটেলসহ ৭৫টি রিসোর্ট-কটেজ বুকিং হয়ে গেছে।

অন্যান্যবারের চেয়ে এবার বেশি পর্যটক এসেছেন জানিয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থাপক শাহিন মাহমুদ বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শতাধিক পর্যটক টিকিট কেটে লাউয়াছড়া উদ্যানে প্রবেশ করেছেন। দেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকও এসেছেন। পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে এসেছেন ওয়েল ফুডের হেড অব সেলস সাব্বির সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী চা-বাগান দেখতে চেয়েছিল। তাই এখানে ঘুরতে এসেছি। পরিবারের সবার সঙ্গে অনেক আনন্দ করেছি। একেক জায়গার সৌন্দর্য একেক ধরনের। স্থানগুলো এতটা দর্শনীয়, না এলে বুঝতাম না।

আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনও হোটেল-রিসোর্টের কক্ষ খালি নেই উল্লেখ করে শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক দৈনিক মৌমাছি কন্ঠকে বলেন, ‌‘জেলায় অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান থাকায় যেকোনো ছুটি কিংবা উৎসবে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে।। পর্যটকদের বেশিরভাগ শ্রীমঙ্গলের হোটেল-রিসোর্টে রাত্রিযাপন করেন। ফলে পর্যটকদের জন্য শ্রীমঙ্গলে পাঁচ তারকাসহ শতাধিক হোটেল-রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। পর্যটকরা এসব হোটেল-রিসোর্টে থেকে জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়ান। তিনি আরও বলেন, ‘এবার টানা তিন দিনের ছুটিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলের হোটেল-রিসোর্টের সব কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে।

হোটেল-রিসোর্টের ভাড়া বেশি হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েন বলে অভিযোগ করেছেন পর্যটকরা; এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হোটেল-রিসোর্টের মান অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করেন মালিকপক্ষ। আবার কিছু ব্যবসায়ী আছেন মান অনুযায়ী সেবা না দিয়েও বেশি টাকা নেন। পর্যটকরা যাতে প্রতারিত না হন, সেদিকে নজর রাখছি আমরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পর্যটন সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, জেলায় চাহিদা অনুযায়ী আবাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। রাস্তাঘাটের তেমন উন্নয়ন হয়নি। এ পর্যন্ত যে অবকাঠামো গড়ে উঠেছে, তার বেশিরভাগই করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের মতোই আছে।

এবার বেশি পর্যটক এসেছেন জানিয়ে চা-বোর্ড পরিচালিত টি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক শামসুদোহা বলেন, ‘আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের রিসোর্ট বুকিং হয়ে গেছে। রিসোর্টের কোনও কক্ষ খালি নেই।

একই কথা বললেন গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফের নির্বাহী কর্মকর্তা দিশারী। তিনি বলেন, ‘টানা ছুটিতে ইতোমধ্যে আমাদের রিসোর্টের সবকটি কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফাঁকা নেই। পর্যটকদের আমরা সব ধরনের সেবা দিচ্ছি দাবি করে টি ভ্যালি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ রকিব বলেন, ‘পর্যটকদের সব ধরনের সেবা দিচ্ছি আমরা। আমাদের রেস্টুরেন্টে মানসম্পন্ন খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি পর্যটকরা যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন, সেজন্য রিজার্ভেশন, গাইড সার্ভিস ও রেন্ট-এ কার দিয়ে সহযোগিতা করছি। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে নিয়োজিত সিনিয়র ট্যুর গাইড সৈয়দ রিজভী ও সোলেমান হাসিব জানিয়েছেন, প্রচুর দেশি পর্যটক এসেছেন। তবে বিদেশি পর্যটক কম। শনিবার পর্যন্ত হাতেগোনা কয়েকজন বিদেশি পর্যটক এসেছেন।’

আগামী কয়েকদিন আরও পর্যটক আসবেন জানিয়ে পর্যটন সেবা সংস্থার সভাপতি সেলিম আহমেদ বলেন, ‘তিন দিনের ছুটিতে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। আগামী কয়েকদিন আরও পর্যটক আসবেন। কারণ শীতের সময় পর্যটকরা বেশি আসেন। আমরা তাদের সেবায় নিয়োজিত আছি। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে শ্রীমঙ্গল জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রত্যেক পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত আছে। এছাড়া মোবাইল টিমসহ বিভিন্ন স্পটে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আমি নিজেও কাজ করছি। এখন পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি। এবার পর্যটকদের হয়রানি কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ জাকারিয়া দৈনিক মৌমাছি কন্ঠকে বলেন, ‌‘জেলার প্রত্যেক পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আশা করছি, কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
ট্যুরিজম বোর্ড এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘এবার সমন্বিতভাবে কাজ করছি আমরা। হয়রানি কমিয়ে পর্যটকদের সব ধরনের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি, পর্যটকদের কোনও ধরনের সমস্যা হবে না।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..