1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

পনেরই জানুয়ারী হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তাফা শেরে সওয়ার চাবুকমার বোগদাদী (র:) র-৬৮২তম বার্ষিক ওরশশরীফ ওয়াজ নসিহত: মেলা

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৭৪ বার পঠিত

। মুজিবুর রহমান মুজিব ।
পীরানে পীর ইয়েমেনী বীর হযরত শাহ জালাল ইয়েমেনী (র)র স্মৃতি ধন্য পূন্য ভূমি জালালাবাদ ৩৬০ আউলয়ার স্মৃতি বিজড়িত পূন্য ভূমি। প্রচলিত ইতিহাস মতে প্রাচীন কালে সমগ্র বৃহত্তর সিলেট ১। লাউড়, ২। গৌড়,৩। তরফ ৪। জৈন্তিয়া ও ৫। ইটা এই পাঁচটি সামন্ত রাজ্যে বিভক্ত ছিল। ১৩০৩ খৃষ্টাব্দে হযরত শাহ জালাল ইয়েমেনী ৩৬০ আউলিয়ার- আউলিয়া বাহিনী নিয়ে গৌড় রাজ গোবিন্দকে পরাজিত করে ইসলামের বিজয় জান্ডাউড়ান গৌঢ়জয় করেন। সেই থেকে সিলেট কে ৩৬০ আউলিয়ার মুল্লুক বলা হয়। আউলিয়া বাহিনী পবিত্র ইসলাম প্রচারে মহান আল্লাহর নাম নিয়ে এতদাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন। আউলিয়া বাহিনীয় প্রধান সিপাহ সালার হযরত সৈয়দ নাসিরুদ্দিন“তরফ” বিজয় করে ইসলাম প্রচারে আত্ব নিয়োগ করেন। হবিগঞ্জ জেলাধীন মুড়ার বন্দে এই পীরে কামেলের “পূর্ব পশ্চিমি” মাজার বিদ্যমান। হযরত শাহ জালাল এর সফর সঙ্গী পীরে কামেল হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা সিলেটের দক্ষিনাঞ্চলে আধুনিক মৌলভীবাজার অঞ্চলের মোস্তফাপুর গ্রামাঞ্চলে বসবাস করতঃ ইসলাম প্রচারে আত্ব নিয়োগ করেন। প্রচলিত কিংবদন্তী ও বিভিন্ন তথ্য মতে এসময় বর্শিজোড়া এলাকায় বসবাসও রাজ্যশাসনকারি সামন্ত শাসক চন্দ্র নারায়ন এর সিংহাসনে একদা এক বিশধর সর্প বসে থাকলে রাজ পরিষদ সর্প বিতাড়নে ব্যর্থ হয়ে রাজ গনকেরপরামর্শে পীরে কামেল হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রঃ) র হুজরায় হাজির হয়ে সাহায্য প্রার্থনা করেন। দয়ালু ও মানব হিতৈষী পীরে কামেল সৈয়দ শাহ মোস্তফা রাজ বাড়ীগমন করতঃ নিজ ইমান আমল ও কামিলিয়াতিতে মহান আল্লাহর নাম নিয়ে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়ে রাজবাড়ি গমন করতঃ বিষধর সাপকে চাবুকের মত ব্যবহার করে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়ে রাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। রাজা, রাজ সিংহাসন ও রাজ বাড়ি থেকে সাপ ও আপদ বিপদ মুক্ত করেন। তখন এতদাঞ্চলে গভীর বনজঙ্গঁল ছিল। জঙ্গঁলে বাঘ সহ বিষধর ও ভংকর বন্য প্রানীর বসবাস ছিল। আধুনিক কালে এসে ও পাহাড় বর্শিজোড়ায় বাঘের আনাগুনা দেখাগেছে। সেই থেকে সৈয়দ শাহ মোস্তফা শেরে সওয়ার চাবুক মার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। এই বংশের অধঃস্থন উত্তর পুরুষ সৈয়দ আব্দুল মজিদ সি,আই,ই আসামের শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। সৈয়দ শাহ মোস্তফা ওয়াকফ এষ্টেটের মোতাওয়াল্লী হিসাবে আলহাজ্ব সৈয়দ খলিল উল্লাহ ছালিক জুনেদ দায়িত্ব পালন রত আছেন। “অপরাজেয় বাংলা” খ্যাত বিখ্যাত ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লা খালেদ তাঁরই জেষ্ট্যভ্রাতা। পবিত্র ইসলাম প্রচারক হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফার নামেশহর তলির মোস্তফাপুর ইউনিয়ন, পৌর এলাকাধীন সৈয়দ শাহ মোস্তফা স্কোয়ারসৈয়দ শাহ মোস্তফা সডক এবং সমশেরনগর রোড়ে সৈয়দ শাহ মোস্তফা কলেজ আছে। প্রত্যেক বৎসর এই পীরে কামেলের সম্মান ও স্মরনে মহান মালিক আল্লাহ এবং রাসুল মোহাম্মাদুর রসুলুল্লার নামে বার্ষীক ওরশ শরীফ অনুষ্টিত হয়। এই বার্ষীক ওরশ শরীফে ইসলামী আকিদা ও জীবন দর্শন এবং দেশে প্রচলিত আইন পরিপহ্ণী কোন কার্য্যক্রম হয় না, করতে দেয়া হয় না।ইসলামী বিধান মোতাবেক বার্ষীক ওরশ শরীফে ওয়াজ নসিহত জিগির আজগার দোয়া দুরুদ অনুষ্টিত হয় এবংএ ব্যপারে ওরশ উদযাপনকমিটি এবং মোতাওয়াল্লী সাহেব একান্ত আন্তরিক ও দায়িত্ব বান। এবারও বার্ষীক ওরশ শরীফউদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি মূলক সভা মোতাওয়াল্লী সাহেবের সভাপতিত্বে এবং জেলা সদরের মাননীয় সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জনাব নেছার আহমদ এর প্রধান আতিথ্যে অনুষ্টিত হয়। জেলা পরিষদ এর সম্মানিত চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলাহাজ্ব মিছবাউর রহমানকে আহŸায়ক করে একটি শক্তিশালী ওরশ উদযাপন কমিটি সর্ব্ব সম্মতিক্রমে গঠিত হয়। মৌলভীবাজার পৌরসভার সম্মানিত মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান ওরশ উদযাপন ও পরিচালনায় বলিষ্ট ভূমিকা পালন করেন।বার্ষীক ওরশ শরীফ উপলক্ষে দরগা মহল্লা এলাকা ও সৈয়দ শাহ মোস্তফা সড়ক ব্যাপী লাখো মুসল্লি আশেকান এবং ধর্মপ্রান মুসলমানদের আল্লাহু আকবর জিকির আসগার, জিয়ারত, তেলাওতে একটি ধর্মীয়ভাবগাম্ভীর্য্য বিরাজ করে, লাখো মানুষের প্রানোচ্ছল পদ ভারে প্রকম্পিত হয় সম্পূর্ন এলাকা। আখেরি মোনাজাত শেষে শান্তিপূর্ন ভাবে অনুষ্টিত হয় শিরনি বিতরন। আশেকানদের দান প্রায় অর্ধশত খাসি, গরু-ছাগলের মাংস দিয়ে তৈরী হয় আকর্ষনীয় ও মুখরোচক ঐতিহ্যবাহী আখনি পোলাও। এ্ শিরনির কারনে অনেকেই একে “ভাতের মেলা” বলেন। বার্ষীক ওরশ শরীফ এ শিরনির আয়োজন ও বিতরনে শিরনী কমিটির কর্নধার সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক পৌর কমিশনার আকবর আলী সাহেব এবং তার কমিটির ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়। যৌবনকালে তৎকালীন পৌর পতি মরহুম সমাজ কল্যান মন্ত্রী বন্ধুবর সৈয়দ মহসীন আলী, বিশিষ্ট আইনজীবী বন্ধুবর আব্দুর রউফ কলা মিয়া উকিল এবং ভ্রাতৃপ্রতিম শেখ সেনাওর মিয়া সহ নিরলসভাবে ওরশে কাজ করতাম হাসি মুখে। অনিয়মিত হলেও বার্ষীক স্মারক সংকলনও বের করতাম। আফসোস আমার এই তিন স্বজনই এখন পরলোকে আমি এখন জীবন সায়েহ্ণে প্রায়ই শয্যাশায়ী। সহকর্মি মরহু মত্রয়ের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। বার্ষীক ওরশ উপলক্ষে দরগা মহল্লা এলাকা ব্যাপী মেলাবসে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীগন পন্য সামগ্রী নিয়ে আসেন। খাবার দাবার থেকে নিত্য ব্যবহার্য্য দ্রব্য সামগ্রী পর্যন্ত। তবে মহিলাদের রকমারি কাচের চুরি, লেইচফিতা, নকুলদানা, প্রসাধনী সামগ্রী, শিশু-যুবকবৃন্ধ সকল বয়সীদের প্রিয়তিলুয়া, বাতাসা, মুয়া, খই, সুড়ি, গরম গরম বাহারি, জিলাপির জনপ্রিয়তাই বেশি। কেনাকাটায় পুরুষের চাইতে যুবতি ও নারী সমাজ এর উপস্থিতিই অধিক হলেও মেলা এলাকায় কোন বিশৃংখলা কিংবা মহিলাদের সঙ্গেঁ অসৌজন্য মূলক আচরন হয় না। এই বার্ষীক ওরশ শরীফের আরেকটি প্রধান বৈশিষ্ট হল এখানে “ফকির মেলা” নামে অল্প বয়সী ভন্ড পিরানীদের প্রাদূর্ভাব- উপদ্রব নেই। প্রায় মাজারকে কেন্দ্র করে লালপাট্রি ওয়ালা গাজা খোর, নেশাখোরদের যে অসামাজিক এবং ধর্ম বিরোধী কার্যক্রম চলে সৈয়দ শাহ মোস্তফার মাজার এবং বার্ষীক ওরশ শরীফকে কেন্দ্র করে এ সবের বালাই নেই। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশ প্রশাসন এর নযরদারি, তদারকি এবং এলাকাবাসিও মাজার কতৃপক্ষের সক্রিয় সহ যোগিতায় আইন শংখলা পরিস্থিতি বরাবরই ভালো উন্নত। সুশৃংখল। মাঘের মারাত্মক শীতকে উপেক্ষা করে মাহান আল্লাহর মেহেরবানিতে এই ওলি আল্লাহর বার্ষীক বর্নাঢ্য প্রানবন্ত এই ওরশ, সুসমাপ্ত হয় আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে। পীরানে পীর ইয়েমেনী বীর হযরত শাহ জালালের সফর সঙ্গীঁ পীরে কামেল হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফার বার্ষীক ওরশ মোবারকে এই ওলি আল্লাহর উজ্জলস্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। বার্ষীক ওরশ শরীফে আগত আশেকান মছল্লিয়ানগনকে আহলান ওয়া সাহলান। আমাদের মহান ¯্রষ্টাও প্রতিপালক মহান মালিক আল্লাহ আমাদেরকে তার মত এবং তাঁর হাবিব মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ প্রদর্শিত পথে চলার বলার তৌফিকএনায়েত করুন এই মোনাজাত সহ আমীন। ছুম্মা আমীন।
[সাবেক যুগ্ম আহŸায়ক, বার্ষীক ওরশ শরীফ, সাবেক আহŸায়ক, প্রচার প্রকাশনাও আইন শৃংখলা উপকমিটি। সাবেক সভাপতি জেলাবার ও মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব। কলামিষ্ট।]

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..