শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন
জুড়ী প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ভাতিজির বাল্য বিয়েতে বাধা দেয়ার প্রতিশোধ নিতে চাচার পরিবারের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনে এর প্রতিকার চাওয়া হয়েছে।বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে জুড়ী উপজেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম শিলুয়া গ্রামের বাসিন্দা হারুন মিয়া।ভুক্তভোগী হারুন মিয়া লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, তার আপন ভাই লোকমান আলী প্রায় এক বছর পূর্বে প্রবাসে মারা যান। ভাইয়ের মৃত্যুর পর ভাবী (মৃত ভাইয়ের স্ত্রী) তাঁর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করেন। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর আমার ভাবী পরিবারের কাউকে না বলে একমাত্র ভাতিজি মারজানা আক্তার ফাতেহা (১৬) কে পাশ্ববর্তী আকতার মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়ার সাথে বিবাহ দিতে চান। আমাদের ভাতিজির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমি ও আমার পুত্রগন বাল্য বিয়ে না দিতে বলি। আমার ভাতিজি শিলুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার বর্তমান বয়স ১৬ বছর ৫ মাস হওয়াতে আমরা বাল্য বিয়ে দিতে রাজি না হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোনে অবগত করি। তিনি সাথে সাথে আমাদের বাড়ীতে পুলিশ পাঠান। পথিমধ্যে মাগুরা বাজারে পুলিশ আসলে স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন বিষয়টি দেখবেন বলে পুলিশকে ফিরিয়ে দেন। ঐ দিন রাতেই স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন-এর উপস্থিতিতে মেয়ের মা আমাদের ভাতিজির বিয়ে দিয়ে দেন। এসময় ইউপি সদস্যদের সাথে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। বাল্য বিয়ে বন্ধের বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইয়ুুম অবগত আছেন।বিয়ের পর ২১ জানুয়ারি আমাদের ভাতিজি তার বরকে নিয়ে আমাদের বাড়ীতে বেড়াতে আসে। সাথে বরের চাচাতো ভাই রাসেল সহ ৭-৮ জন পুরুষ ছিলেন। বরের সাথে আসা লোকজন আমাদের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার পর আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এরপর তারা জুড়ী থানায় উল্টো আমাদের নামে মামলা দায়ের করে। মামলায় আমার পুত্র তোফাজ্জল হোসেন (২২), জুবায়ের হোসেন (১৫) এবং আমার স্ত্রী আছমা বেগম (৪০) কে আসামী করা হয়। পুলিশ আমার নাবালক ছেলে জুবায়েরকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আমরা কোন কিছু বুঝে উঠার আগে এ রকম ঘটনা হয়ে যায়।জুড়ী উপজেলাকে বাংলাদেশের প্রথম “বাল্য বিয়ে মুক্ত উপজেলা” ঘোষণা করা হয়। সেই উপজেলায় বাল্য বিয়েতে বাধা দিয়ে আমরা হামলা ও মিথ্যা মামলার শিকার। আমরা এই সাজানো মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও মামলা প্রত্যাহারসহ আমার নাবালক ছেলের মুক্তি দাবী করছি।এসময় প্রবীণ মুরব্বী তরিক উল্লাহ, সাইফ উদ্দিন ও জায়েদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।