1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০১ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

ট্রেনকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেয় বিএনপি-জামায়াত সরকার : প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১৯৩ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের সবচেয়ে বড় গণপরিবহন রেলকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করায় বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রেল লাভজনক নয়, এমন কথা বলে এক সময় রেল বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল; এ কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সরকার গেল ৩ মেয়াদে রেলপথকে সংস্কার এবং নতুন ভাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ৬৯ দশমিক ২০ কিলোমিটারের তিন রেলপথের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে তিন রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থায় মানুষের ব্যয় কমবে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল চালু করে দিয়েছি, পাতাল মেট্রোরেলের কাজের উদ্বোধন করে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা শহরে এই রেল যোগাযোগেরই একটা আলাদা পরিবেশ তৈরি হবে, যেটা মানুষের যোগাযোগ, যাতায়াত এবং আমাদের তেলের খরচসহ অনেক কিছু বেঁচে যাবে। ঢাকা শহরের যানজটও কমে যাবে। এভাবেই আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সড়ক সেতুর সঙ্গে আমরা রেলসেতু করে দিই, যারা এক সময় এর বিরোধিতা করেছিল আবার তারাই প্রস্তাব দেয় নতুন রেলসেতু করতে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি রেলকে নিয়ে নানা খেলা চলেছে। জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যার পর অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে মিলিটারি ডিকটেটররা ক্ষমতা দখল করেছিল তারা আসলে এ দেশের কোনো মঙ্গল চায়নি, উন্নতিও চায়নি।
তিনি বলেন, যার কারণে সাধারণ মানুষের যে পরিবহন ছিল একে একে সবই ধ্বংস করার চেষ্টা করে। এমনকি রেল লাভজনক না এই অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়। রেলের লোকবল গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে বিদায় দেওয়া হয়। অনেক রেললাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ বিএনপি-জামায়ত সরকার অর্থাৎ যখন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিল তখন এটা করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর পরে ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা সরকারে এসেই রেলকে গুরুত্ব দেই। যমুনা নদীর ওপর যে সেতু আমরা নির্মাণ করি, এটা বহুমুখী সেতু করা হয়। সেখানে আমি রেললাইন সংযুক্ত করে দিয়েছিলাম। রেলকে পুনর্গঠন করার পদক্ষেপ আমরা নেই। আমরা দ্বিতীয়বার যখন সরকারে আসি, যেহেতু রেলের বাজেট আলাদা দেওয়া হতো না, রেল ছিল সড়কের সঙ্গে। বেশিরভাগ টাকা চলে যেত সড়কে। তখন ২০১১ সালে আমি রেলের আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করি গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন যেন সুলভ মূল্যে করা যায়।

তিনি আরও বলেন, সেই থেকে এ পর্যন্ত গত ১৪ বছরে আমরা ৬৫০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ২৮০ কিলোমিটার মিটারগেজকে ডুয়ালগেজে রূপান্তর, ১ হাজার ২৯৭ কিলোমিটার লাইন পুনর্বাসন-পুনঃনির্মাণ করেছি। ১২৬ নতুন স্টেশন ভবন ও ২২৩টি স্টেশন ভবন পুনর্বাসন-পুনঃনির্মাণ করেছি। ৭৩২টি নতুন রেলসেতু, ৭৭৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন-পুনঃনির্মাণ এবং ৫০টি ব্রডগেজ ও ৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ পুনর্বাসন করা হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ১০৬টি লোকোমোটিভ, ২০ সেট ডিইএমইউ, ৫৩৫টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ এবং ৫১৬টি মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ করেছি। ১৩০টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করেছি। ইতোমধ্যে ৪৪টি নতুন এবং বর্ধিত রুটে মিতালী এক্সপ্রেসসহ মোট ১৪২টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে।
দেশের অভ্যন্তরীণ এবং আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, পদ্মা সেতু আমরা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেছি এবং পদ্মা সেতুতেও ঢাকা থেকে যশোরের রূপদিয়া ও সিঙ্গিয়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে চলছে। কক্সবাজারের মানুষের বহুদিনের প্রত্যাশা ছিল রেললাইন হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এটা কেউ উদ্যোগ নেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে উদ্যোগ নিয়েছে। আজকে কক্সবাজারের দুটি ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করি, দ্রুত এটা শেষ হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু বঙ্গবন্ধু সড়ক সেতুর সঙ্গে আমরা রেলসেতু করে দিই, যারা এক সময় এর বিরোধিতা করেছিল আবার তারাই প্রস্তাব দেয় নতুন রেলসেতু করতে। তাই যমুনা নদীর ওপর এখন নতুন রেলসেতু আমরা নির্মাণ করছি। বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর কাজ এগিয়ে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া খুলনা-মোংলা ব্রডগেজ রেললাইন খালেদা জিয়ার সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা নতুন করে লাইন ও সেতু নির্মাণ করছি। আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েলগেজ ডাবল-লাইন নির্মাণ, ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর ডুয়েলগেজ ডাবল-লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ এক সময় রেল যোগাযোগ ছিল, মাঝখানে সেটা প্রায় বন্ধ…আমরা আবার চালু করেছি। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ লাইন, ভাঙ্গা-বরিশাল-পায়রা বন্দর রেললাইন, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়েলগেজ ডাবল-লাইন, খুলনা-দর্শনা ডুয়েলগেজ ডাবল-লাইন, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। তাছাড়া, জয়দেবপুর- ময়মনসিংহ-জামালপুর ডুয়েলগেজ ডাবল-লাইন, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র রেল-লিংক, আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন, ধীরাশ্রম আইসিডি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ নতুন এ পথে যাত্রী পরিবহনে সময় কমে আসবে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাইনগুলো ডুয়েলগেজ হওয়ায় একই লাইনে মিটার ও ব্রডগেজ ট্রেন পরিচালনা করা যাবে। নতুন তিন রেলপথের মধ্যে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সিগন্যালিংসহ রেললাইন সংস্কার ও নির্মাণ’ প্রকল্পটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক খাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রর ভারী মালামাল এবং স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের যন্ত্রাংশ আনা-নেয়ায় এ পথ হবে নিয়ামক।
এদিকে, রেলওয়েসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন এ তিনটি পথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করায় সেবা বৃদ্ধির সঙ্গে দীর্ঘ পথের ক্লান্তি অনেকটাই কমাবে।

অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন রূপপুর, জয়দেবপুর এবং শশীদলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা রেল লাইনের উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত ভারতীয় হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ।
রূপপুর রেলস্টেশন : পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর রেলস্টেশনটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মালপত্র ও যন্ত্রপাতি আনার সুবিধার্থে নির্মাণ করা হয়েছে। স্টেশনটি চালু করতে ৩৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় ২৬ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত লাইনটিতে ট্রেন চলাচল প্রায় ৩৫ বছর ধরে বন্ধ ছিল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ : ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথকে ডাবল লাইনে উন্নীত করতে আখাউড়া-লাকসাম সেকশনে ৭২ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন করা হচ্ছে। ৬ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ ৯ বছরেও শেষ হয়নি। এ রুটের কসবা থেকে মন্দবাগ এবং শশীদল থেকে রাজাপুর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
এর আগে এ লাইনের লাকসাম থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার ডাবল লাইন গত সেপ্টেম্বরে ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। বাকি ৩৪ কিলোমিটারের কাজ আগামী জুনে শেষ করার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাধাও রয়েছে। তবে রেলের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, এখন হরদম কাজ চলছে।
ঢাকা থেকে টঙ্গী : ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ নির্মাণ চলছে। এ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত দ্বিতীয় ডুয়েলগেজ রেললাইন। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ টঙ্গী-জয়দেবপুর অংশে নির্মিত দ্বিতীয় লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় ঋণে ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকার এ প্রকল্পের সব কাজ শেষ হতে আরও বছরখানেক লাগবে। টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে দ্বিতীয় লাইন চালুর ফলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় সাশ্রয় হবে বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..