শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোটার: মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত পাথারিয়া হিল্স রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় সম্প্রতি আগুনে পুড়ে বনের কয়েক হেক্টর এলাকা ছাই হয়েছে। প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে বনের টিলায় আগুনে পুড়লেও সংশ্লিষ্টরা নির্বিকার ছিলেন। এরই মধ্যে আগুনে পুড়ে বনের সরীসৃপ, কীটপতঙ্গ, পাখির বাসাসহ বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের অপুরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। একমাত্র মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের মধ্যদিয়ে বনবিভাগ আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।
সীমান্ত এলাকার প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো কয়েক হাজার গাছ আগুনে পুঁড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরিবেশগতভাবে মিশ্র চিরসবুজ সমনভাগ বনাঞ্চলের এ অংশটি ইন্দো-বার্মা জীববৈচিত্র্য হটস্পটের একটি অংশ এবং এটি ভারত-বাংলাদেশের আন্ত:সীমান্তব্যাপী ছয়টি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যকার একটি। পাথারিয়া বনের বড়লেখা রেঞ্জ এর মধ্যে থাকা সমনভাগ সংরক্ষিত বনের আয়তন ১৮৫০ হেক্টর। সমনভাগ বিটের দলছড়ি ও মাকাল জোরা এলাকায় রয়েছে ছোট বড় অনেক পাহাড়। এই এলাকার ধলছড়ি ও মাকাল জোরায় কয়েক হেক্টর বন আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। অথচ বনটি বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল হিসাবে পরিচিত। আগুনে পুড়ে জীববৈচিত্র্যের যে অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা কখনো পূরণ হবার নয়। এবিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।
পাশাপাশি কমলগঞ্জ উপজেলার সংরক্ষিত রাজকান্দি বনেরও তিনটি টিলায় ইতিমধ্যে আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। এই বনে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন গ্যাস অনুসন্ধানও চালিয়ে যাচ্ছে। এই বনেও বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল। একদিকে বনের গাছ, বাঁশ কেটে সাবাড় হচ্ছে। অন্যদিকে শর্ত সাপেক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় অনুমতি প্রদান করলেও ড্রিলিং ও ভ‚গর্ভে বিস্ফোরণে বন্যপ্রাণী ও পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এসব কার্যক্রমে বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমুহের যথাযথ তদারকি, আগুন লাগার কারণ উদঘাটন ও বনের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে ক্ষতিপূরণ আদায়ের পূর্ব থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়াও রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ চা বাগানসহ জেলার বিভিন্ন চা বাগানে অবৈধভাবে গাছ কর্তনে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এসব কার্যক্রমে আমরা গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তৃক তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়ে সৈয়দ মহসিন পারভেজ সভাপতি ও নূরুল মোহাইমীন মিল্টন সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম, মৌলভীবাজার জেলা শাখা স্বাক্ষরিত পত্রে জেলা প্রশাসক,বন ও পরিবেশ মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরন করা।