1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

দক্ষিণ সিলেটের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা: সেকাল থেকে একালের শেখ সিরাজ ও দৈনিক মৌমাছি কণ্ঠ

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৬
  • ৩৮৯ বার পঠিত

মুজিবুর রহমান মুজিব:
সমাজ ও সভ্যতার ইতিহাস ক্রমবিকাশ ও ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস। বিকাশ ও বিবর্তনের মাধ্যমে আদি গুহামানব থেকে আধুনিক মানব সভ্যতা ও মানব জাতির উত্থান ও অবস্থান। বর্ণমালা ও ভাষা আবিস্কারের পূর্বে আদিম গুহামানব গোষ্ঠী গুহাগাত্র ও লৌহ ও ব্রঞ্জ ও প্রস্তর খন্ডে ছবি ও রেখাচিত্র অংকন করে মনের ভাব প্রকাশ করতেন। পশুর শিং দিয়ে সিঙ্গা বানিয়ে শিঙ্গা ফুঁকিয়ে আনন্দ বেদনা প্রকাশ করতেন। ভাব প্রকাশ ও বিকাশ করতেন। বর্ণমালা ও ভাষা আবিষ্কার মানবজাতির অগ্রাভিযানের ইতিহাসে ঐতিহাসিক অধ্যায়।

সুরমা পারের প্রয়াত কবি দিলওয়ার বলেন ‘আধুনিক সমাজ সভ্যতার বিকাশে মুদ্রণ, প্রকাশনা ও সংবাদ সাময়িকপত্র গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত। ১৭৭৮ খৃষ্টাব্দে হলহেডের ইংরেজীতে লেখা বাংলা ব্যাকরণ-“এ গ্রামার অব দি বেঙ্গল লেংগুয়েজ” ছাপার মধ্য দিয়ে বাংলা মুদ্রণ শিল্পের শুভ সূচনা। মুদ্রণ শিল্পের শুভ সূচনার ধারাবাহিকতায় উনিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ১৮১৮সালে দিগদর্শন, সমাচার দর্পণ ও বাঙ্গাল গেজেট বাংলা সংবাদপত্র হিসাবে আত্বপ্রকাশ করে।

বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী জেলা সিলেট একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক জনপদ। ১৮৮২ সালে তৎকালীন বৃটিশ শাসক গোষ্ঠী বৃহত্তর সিলেটের দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য সাউথ সিলেট সাবডিভিশন নামে একটি স্বতন্ত্র মহকুমা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬০ সালে তৎকালীন জনপ্রিয় মহকুমা প্রশাসক আব্দুছ ছত্তারের কার্য্যকালে এই অঞ্চল মৌলভীবাজার মহকুমা নামধারণ করে। গোবিন্দ শ্রী নিবাসী বৃটিশ ভারতের খ্যাতিমান জমিদার ও মুন্সেফ মৌলভী সৈয়দ কুদরত উল­াহ প্রতিষ্ঠিত মৌলভীবাজার নব গঠিত মহকুমার মহকুমা সদর স্থাপন করা হয়।

 

মৌলভীবাজার কোন মুল­া,মুন্সী,মৌলভীর ছিল না,নিজ জমিদারিতে বাজারটির প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ কুদরত উল­াহ ফার্সি ভাষায় সুশিক্ষিত পন্ডিত “মৌলভী” উপাধিধারী ছিলেন। মৌলভী সাহেব প্রতিষ্ঠিত বাজারটি কালক্রমে মৌলভীবাজার হিসাবে পরিচিত ও খ্যাতি লাভ করে। ১৯৮২সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক মমতাজ উদ্দীন এর কার্য্যকালে প্রশাসন ও জনগণের যৌথ উদ্যোগে মহাসমারোহে জাক জমকের সাথে মহকুমার শত বর্ষপূর্তি উৎসব উদযাপন করা হয়। এই উপলক্ষে প্রকাশিত তথ্য বহুল স্মারক গ্রন্থ শতাব্দীর অন্যতম সম্পাদক ছিলেন এই নিবন্ধকার। ১৮৮২থেকে ১৯৬০সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল সাউথ সিলেট সাবডিভিশন দক্ষিণ শ্রীহট্ট মহকুমা নামে অভিহিত হত। শহরের প্রবীণ ব্যবসায়ী আব্দুল মাহিদ খান মাকা মিয়া প্রতিষ্ঠিত সাউথ সিলেট মেডিকেল স্টোর এবং সাউথ সিলেট এন্ড কোম্পানী ঐতিহ্যবাহী সাউথ সিলেটের উজ্জ্বল স্মৃতি বহন করেছে। সাউথ সিলেট ফার্মেসীটি আজ আর নেই। এখন সাউথ সিলেট এর স্মৃতি বহন করছে শুধুমাত্র সাউথ সিলেট এন্ড কোম্পানী এবং পৌর এলাকাধীন সৈয়দ শাহ মোস্তফা সডকের পশ্চিমাংশে,মরহুম সমাজ কল্যাণমন্ত্রী, বীর মুক্তিযুদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী মরহুমের শ্রীমঙ্গল সড়কস্ত বাসভবনের সম্মুখস্থ স্মারক গেইট।

পীরে কামেল হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা শেরে সওয়ার বোগদাদী (র:)- পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত পূর্ণ্য ভূমি মৌলভীবাজার দক্ষিণ শ্রীহট্টও একটি প্রাচীন গৌরবময় অতীত ঐতিহ্য সমৃদ্ধ সভ্য জনপদ। সংবাদ পত্র শিল্পের শুরু থেকেই সেকালের মৌলভীবাজার বাসীর গৌরবুজ্জল ভূমিকা ছিল।

১৮১৮ সালের দুই দশকের মধ্যেই ১৮৩৯ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয় “সম্বাদ ভাস্কর”। সিলেটি সম্পাদক কর্তৃক প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা এই “সম্বাদ ভাস্কর”। এই পত্রিকাটির সম্পাদক বাবু গৌরী শংকর ভট্টাচার্য্যরে আদি নিবাস এই মৌলভীবাজারে স্বগৌরবে তাই যথার্থভাবেই বলা যায় সংবাদপত্র শিল্প আদি যুগ থেকেই মৌলভীবাজার বাসী সম্পৃক্ত নেতৃত্বে ছিলেন। গৌরী শংকর ভট্টাচার্য্য সম্পাদিত “সম্বাদ ভাস্কর”এর ধারা বাহিকতায় মাসিক মৈত্রী ও সাপ্তাহিক প্রজাশক্তি পত্রিকা মৌলভীবাজারের সাংবাদিকতার শুভ সূচনা। সদর থানাধীন জগৎসী নিবাসী মহেন্দ্র নাথ দে ১৯০৯ সালে হবিগঞ্জ থেকে পত্রিকা দু’টি প্রকাশ করেন। এই ভাবে ১৯২৪সালে কুইশার সিংকাপনের মৌলানা আব্দুল বারীর সম্পাদনায় মাসিক তাবলিগুল ইসলাম ও মাসিক তানজিমুল ইসলাম, ১৯৩০সালে কুলাউড়ার সৈয়দ বদরুল হোসেন ত্রৈমাসিক ব্রতী, জগৎসীর দ্বিজেন্দ্রলাল দাসগুপ্তের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক অভিযান, ১৯৩৫সালে আট গায়ের অবনীকান্ত গুপ্ত চৌধুরী সিলেট থেকে সাপ্তাহিক স্বাধীকার, কুলাউড়ার নর্তন গ্রামের কীর্তিমান ভট্টাচার্য্য মাসিক মাস পহেলা, সাপ্তাহিক রবিবার,উলুআইলের মৌলভী ছনাওয়ার আলী,১৯৩৭সালে সাপ্তাহিক নকীব প্রকাশ করেন। নকীব ছিল তৎকালে মুসলমান সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা। দারুন পাঠক প্রিয়তা পেয়ে পত্রিকাটি দুই বৎসরাধিক কাল বের হয়েছিল। বৃটিশ ভারতে সংবাদপত্র শিল্পও সম্পাদনায় উপমহাদেশের খ্যাতিমান পন্ডিত বহু ভাষাবিদ ডক্টর সৈয়দ মুজতবা আলী, সৈয়দ মর্তূজা আলী, সৈয়দ মস্তফা আলী এবং এস.এম.আলীর নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। কুলাউড়ার আলতাফ হোসেন এবং রাজনগর পাঁচগাঁয়ের লীলানাগ এবং বিখ্যাত দেওয়ান বাড়ীর দেওয়ান কন্যা বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরীও সংবাদ পত্র শিল্প সম্পাদনায় প্রকাশনায় চির স্মরনীয় হয়ে আছেন। মেধাবী আলতাফ হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র হিসাবে প্রথম ব্যাচ-এ ইংরেজী বিভাগে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে ভূয়শী প্রশংসা অর্জন করত: পাক-ভারতের বিখ্যাত ইংরেজী দৈনিক ডন এর প্রধান সম্পাদক হয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। আলতাফ হোসেন ও দৈনিক ডন দুই নামের এক সত্ত¡া ছিলেন। পাঁচগাঁয়ের গিরিশ চন্দ্র নাগ এর বিদুষী কন্যা লীলাবতী নাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে প্রথম ব্যাচ এ কৃতিত্বের সাথে মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করত: সরকারি চাকরিতে যোগ না দিয়ে বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে যোগদান করেন এবং ঢাকা থেকে মাসিক “জয়শ্রী”পত্রিকা প্রকাশ করেন। রাজ নগরের ঐতিহ্যবাহী পরিবারের কৃতি কন্যা বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী সিলেটের স্বনাধন্য আব্দুর রশীদ চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বেগম রশিদ “বড় আম্মা” হিসাবে সংবাদ পত্র সেবা রাজনীতি ও সমাজ সেবায় খ্যাতি অর্জন করেন। দেশের প্রাচীনতম সাপ্তাহিক বর্তমানে দৈনিক যুগভেরী প্রকাশনা সম্পাদনা পৃষ্টপোষকতায় এই গুণবতী রমনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বেগম রশীদ একজন রতœগর্ভা রমনী। মরহুম স্পীকার কূটনিতিবিদ হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক আমিনুরশীদ চৌধুরী প্রমুখ মরহুমার সু-সন্তান।

সাতচলি­শ পরবর্তী পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসনামলে সাংবাদিক সাংবাদিকতা থাকলেও সংবাদপত্র প্রকাশনা সম্পাদনা ছিল না। ১৯৬০ সালে মহকুমা প্রশাসক আব্দুছ ছাত্তারের কার্যকালে প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক ‘অগ্রদূত’ সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন গোলাম মো¯তফা। পত্রিকাটি ছিল নিতান্তই স্বল্পায়ু। পাকিস্তানী আমলে নিয়মিত পত্রিকা না হলেও দিবসে উৎসবে সংকলন সাময়িকী বের হত। জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র পত্রিকা সমূহের স্থানীয় প্রতিনিধিগণ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতেন। মৌলভীবাজারে একটি প্রেসক্লাবও ছিল। যা ছিল মফস্বলের প্রথম ও প্রাচ্নী। একাত্তর সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় চার নম্বর
সেক্টরাধীন মুক্তাঞ্চল থেকে সাপ্তাহিক শ্রীভূমি বের করেন কুলাউড়ার কৃতি সাংবাদিক বাবু সুশীল সেনগুপ্ত এবং মুজিবুর রহমান মুজিব (এই নিবন্ধনকার স্বাধীনতা উত্তরকালে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবের প্রথম সেক্রেটারী ও সভাপতি)। মুক্তাঞ্চল থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটি রণাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগায়। নাড়– দাদা হিসাবে সু-পরিচিত জীবন ঘনিষ্ট সাংবাদিক বাবু সুশীল সেনগুপ্ত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ভোদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের সংগ্রামী ছাত্র-যুব-জনতা নবীণ রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে সকল অঙ্গনে প্রাণের স্পন্দন আনয়ন করেন। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সাংবাদিকতা তার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। স্বাধীনতার ঊষা লগ্ন ১৯৭২ সালের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক গাজী গোলাম ছরোয়ারের সম্পাদনায় বের হয় সাপ্তাহিক বিপ্লবী বাংলা। বিপ্লবী বাংলার সম্পাদনায় সম্পৃক্ত ছিলেন সম্পাদকের দুই সতীর্থ ও সহযোদ্ধা এন.আই আজিজুল হক ইকবাল (পরে প্রেস ক্লাবের সভাপতি) কে.এ. হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে পরলোকে) এবং মুজিবুর রহমান মুজিব। (এই নিবন্ধকার)।

তিন বন্ধুই স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের স্থানীয় রাজনীতির দায়িত্বে ও নেতৃত্বে থাকার কারণে পত্রিকা প্রকাশে মনোনিবেশ করতে পারেননি। ফলত বিপ্লবী বাংলার প্রকাশনা অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়নি। তবে বিপ্লবী বাংলাই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাপ্তাহিক। অতঃপর ইত্তেফাক প্রতিনিধি পরিশ্রমি সাংবাদিক হারুনুর রশীদ (পরে এডভোকেট, প্রবাসে)। অতঃপর মৌলভীবাজার মহকুমা জেলা সদর থেকে বকশি ইকবাল আহমেদ এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক মৌলভীবাজার বার্তা, অতঃপর দৈনিক বাংলার দিন, এডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরীর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘জনদূত’ সৈয়দ আবু জাফর এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘মনুবার্তা’ ডা: সাদিক আহমদের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘জনপ্রত্যাশা’ ও মাসিক ‘দূর দিগন্ত’, মুজিবুর রহমান মুজিবের সম্পাদনায় পাক্ষিক ‘দেশদর্পণ’, ত্রৈমার্সিক,মার্সিক ও সাপ্তাহিক মৌমাছি কন্ঠ ১৫ বছর, অত্ব:পর মৌমাছি কন্ঠ আজ ১৭ডিসেম্বর ২০১৬ ইং দৈনিক, কিশোরী পদ দেব শ্যামলের সম্পাদনায় মাসিক ‘গৌড়বাণী’,নুরুল ইসলাম শেফুলের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘পাতাকুঁড়ির দেশ’কুলাউড়া থেকে সফি আহমদ সলমান এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক কুলাউড়ার ডাক,এম, আতিকুর রহমান এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক বড়লেখা,শফিউল ইসলাম শফি এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক মৌলভীবাজার সমাচার,আজিজুল ইসলাম এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক বড় কন্ঠ, জাবেদ খসরুএর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক মানব ঠিকানা,মৌসুফ এ চৌধুরী সাপ্তাহিক দেশপক্ষ, ইদ্রিস আহমদ এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক শ্রীমঙ্গল পরিক্রমা,সরফারাজ আলী বাবুল এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক শ্রীমঙ্গলের চিঠি, ,মুজাহিদ আহমদের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘পূর্বদিক’ , সরফারাজ আলী বাবুল এর সম্পাদনায় খোলা চিঠি,গোপাল দেব চৌধুরী এর সম্পাদনায় সাপ্তাহিক চায়ের দেশ। সুত্র: জেলা প্রশাসক ওয়েব সাইড থেক সংগৃহিত।

কাগজের মূল্য বৃদ্ধি,মূদ্রণ ব্যয়,বিজ্ঞাপন,পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং ক্রেতা সল্পতার কারণে মফস্বল সংবাদপত্রগুলি বাঁচিয়ে-টিকিয়ে রাখা যায় না। যদিও আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশী হবিগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল­া নিয়মিত একাধিক দৈনিক পত্রিকা বের হয়। উলে­খিত পত্রিকাগুলিও এখন অনিয়মিত। হয়তোবা বন্ধ। সাপ্তাহিক ‘মনুবার্তার’ মালিকানা পরিবর্তন হয়ে এখন সম্পাদনার দায়িত্বে আছেন জসিম উদ্দিন। পত্রিকাটি অনিয়মিত। সাপ্তাহিক ‘পাতাকুঁড়ির দেশ’ সম্পাদক পরিবর্তন হয়ে এখন দৈয়দ উমায়েদ আলী ও সৈয়দ উমেদ আলীর মালিকাধীন ও ব্যবস্থাপনায় জন্মের পর থেকেই নিয়মিত। নিয়মিতের তালিকায় ধর্ম বিষয়ক মাসিক ‘গৌরবাণী’, সম্পাদক কবি কিশোরী পদ দেব শ্যামল সূত্রে খবর প্রকাশ গৌরবাণীর পাঠক প্রিয়তা প্রচুর। প্রকাশনাও নিয়মিত। নব্বইয়ের দশকে শিক্ষা-সাহিত্য-ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক পুস্তক সাইজের দর্পণ ছিল জেলা সদরের একমাত্র রম্য ম্যাগাজিন। বিগত কেয়ারটেকার সরকারের আমলে নানা অযুহাতে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করেন কর্তৃপক্ষ। পত্রিকা বের হচ্ছে, জেলা উপজেলাসমূহেও অনিয়মিত হলেও পত্র সম্পাদক পরিসরে সেই প্রেক্ষিতে আলোকপাত করা হলো না। এটা এতদ সংক্রান্ত কোন পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস নয়। একটি দৈনিকের শুভ প্রকাশনা উপলক্ষে প্রাসঙ্গিক লেখা মাত্র। কোন কিছু বাদ পড়লে দুঃখিত।

লেজিস লেছার, ২. জুডিসিয়ারি এবং এক্সিকিউটিভ তথা আইন-বিচার-প্রশাসন একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ-স্তম্ভের পরেই প্রেস ও মিডিয়াকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। বিগত কেয়ারটেকার সরকার আমলে যখন সংসদও নির্বাচিত সরকার ছিল না। জনপ্রতিনিধি মেয়র চেয়ারম্যান পলায়নে না হয় প্রবাসে-কারণ তাদের উপর তখন আজাব ও গর্দিছ গিয়েছে।

দেশ ও জাতির সেই কঠিন কালে প্রেস ও মিডিয়া জনগণের বন্ধু ও অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে কাজ করেছেন। একজন সৎ আদর্শ ও বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকের কোন বন্ধু না থাকলেও বিবেকবান সাংবাদিক, সমাজ, দেশ ও জনগণের অতন্দ্র প্রহরী। ফটকাবাজি, ধান্দা,ধান্দাবাজি ও চাপাবাজি এবং হলুদ সাংবাদিকতা পরিহার করে আশাকরি শেখ সিরাজ ও তার কলম সৈনিকরা সত্য কথাই লিখবেন ও সৎ পথে চলবেন। কোরআন ও হাদিসে বর্ধিত মধুর ঔষধী গুণাবলি প্রসঙ্গে শুধুমাত্র চিকিৎসক সমাজই নহেন সাধারণ নাগরিক সমাজও ব্যাপক অবহিত আছেন। মহান আল­ার মেগেরবানীতে হাটি হাটি পা পা করে ত্রৈমার্সিক, মার্সিক, সাপ্তাহিক নিয়মিত দীর্ঘ প্রকাশনা শেষে আজ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ইং দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ গুণগুনিয়ে গান গেয়ে ফুলে ফুলে মধু আহরণ করে দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ বানায়। ‘মৌমাছি মৌমাছি- কোথায় যাও নাচি নাচি একটু দাঁড়াও না ভাই- বলে যে শিশুতোষ কবিতাটি আছে বাল্য কৈশোরে সেটি অনেকেই আবৃত্তি উচ্চারণ করে থাকেন। মধু আহরণ কারী পতঙ্গ মৌমাছির প্রতি কিঞ্চিত মায়া-মমতা সহানুভূতি প্রদর্শন করেন। সাধারণত: মৌমাছিকে আঘাত না করলে মৌমাছি কাউকে কামড়ায় না, তার বিষাক্ত হুল ফুটায় না। মৌচাক ভাঙ্গতে গিয়ে মৌমাছিকে আক্রমণ করা হয়, মৌচাকে আগুন জ্বালীয়ে দেয়া হয়, মিডিয়ার কল্যাণে তা টেলিভিশনের পর্দায় মাঝে মাঝে দেখাও যায়। দেশের প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান সাহেবের মৌচাকে ঢিল নামে একটি রম্য ম্যাগাজিন ও আছে। কোরআন ও হাদিসে বর্ধিত মধুর ঔষধী গুণাবলি ও উপকারী এই প্রেক্ষিতে দৈনিক মৌমাছি কণ্ঠের নামকরণ ও আত্মপ্রকাশকে স্বাগত জানাই। শুভেচ্ছা জানাই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রিয় মাঠ সাংবাদিক øেহভাজন শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও তার সকল সহকর্মীগণের জন্য অভিনন্দনও শুভেচ্ছা। সেই সাথে আরো বলতে চাই আজকের দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ এর হাত ধরে আজ স্থানীয় ও জাতীয় এবং আন্তজার্তিক পর্যায়ে রয়েছেন শত শত সাংবাদিক। যাদের নাম বলে শেষ করা যাবেনা। এক কথায় সাংবাদিক সৃষ্টি ও বিকাশে পত্রিকার সম্পাদকের সীমাহিন ভালবাসাই তার প্রমান। মৌলভীবাজার জেলার একটি দৈনিকের হাহাকার শুন্যতা নিয়ে অতীতের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রতিটি অঙ্গনে দাবী ছিল কিন্তুু সে দাবী পুরনে কেহ এগ্রিয়ে আসেনি। অবশেষে ২০১৬ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো: কামরুৈ হাসান ও পুলিশ সুপার শাহ জালাল মহোদ্বয়সহ আরো অনেকের সহযোগীতায় নিয়মিত ও কলংক মুছনে দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ এক অনন্য নির্দশন। আশা করছি পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশনায় যারা জড়িত সকলের সু দৃষ্টতে বের হবে বলে আশাবাদী।

ষাটের দশকের শুরু থেকে সংবাদপত্র সেবার সঙ্গে জড়িত, সম্পৃক্ত আছি। সাংবাদিকতায় সম্পাদনায়, প্রকাশনায়, পৃষ্ঠপোশকতায়। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে গেছে। আমাদের ষাটের প্রজন্ম এখন সত্তোরের কোঠায়। জীবন সায়াহ্নে পড়ন্ত বেলায়। এই সাঁজের বেলায় ‘সাঁজের মায়ায়’ থাকতে চাই। দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ এর গুঞ্জনের গান শুনতে চাই।

ষাটের দশকের সাংবাদিক। মুক্তিযোদ্ধা। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব। জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি। কলামিষ্ট।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..