বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
আব্দুল বাছিত খান :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি) কর্তৃক প্রদত্ত ভূমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই ভাইয়ের পরিবারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই সহোদর রক্তাক্ত হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাত সাড়ে এগারো টায় মাধবপুর চা বাগানে শ্রমিক লাইনে।
গুরুতর আহত দুই সহোদর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কেউ এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।
স্থানীয় সূত্র জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়ন এর ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি) মাধবপুর চা বাগানের পশ্চিম লাইনের শ্রমিক পাড়ায় কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত ভূমি নিয়ে দুই সহোদর রাধেশ্যাম রবিদাস (৬০) ও বুটলাল রবিদাস (৫৫) এর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য মাধবপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ, স্হানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন,বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ভ্যালী কমিটি ও বাগান পঞ্চায়েত কমিটিসহ এলাকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্হানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার বিরোধ নিরসন করতে ভূমিকা নিলেও, তাদের দুই পরিবারের অসহযোগতার কারণে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি।
তাই বড় ভাই রাধেশ্যাম রবিদাসের সাথে ছোট ভাই বুটলাল রবিদাসের মধ্যে কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত ভূমির ৩ ফুট জমি নিয়েই চলছিলো বিরোধ । ওই জমির বাড়ির আঙিনায় বাউন্ডারী তৈরির জন্য বুটলাল রবিদাসের ছেলে সেনা সদস্য দুলাল রবিদাস শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করেন। এ সময় রাধেশ্যাম তাঁর ভাগের জমি বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত মাটি কাটতে দেবেন না বলে বাধা প্রদান দেন। এ নিয়েই রাতে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এঘটনায় দুই সহোদর গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে রাধেশ্যাম রবিদাসের স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লীলাবতী অভিযোগ করে বলেন, বুটলালের ছেলে সেনাসদস্য দুলাল এর ভয়ে আমরা নিজ বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকি। এই হামলা টি পূর্ব পরিকল্পিত। সেনা সদস্য দুলাল এর নেতৃত্বে ৮/১০ জনের সন্ত্রাসী দল আমার স্বামীর উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আমরা বিচার প্রার্থী একজন সরকারী চাকুরীজীবির নেতৃত্বে এরকম নেক্কারজনক ঘটনার জন্য।
বুটলালের স্ত্রী শান্তী রবিদাস বলেন,দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাসুর রাধেশ্যামের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ,রবিবার রাতে আমার স্বামীর উপর সশস্ত্র হামলা চালালে আমরা তা প্রতিহত করেছি।আমার স্বামীকে দা দিয়ে কোপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছেন।
এ ব্যাপারে মাধবপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান মুন্না বলেন, দুই পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ নিরসনে বাগান কর্তৃপক্ষ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সবাই ব্যর্থ হয়েছেন।
বাগানের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এদিকে খবর পেয়ে রবিবার রাতেই কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসানের নেতৃত্বে ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা, এসআই মাহমুদ,এএসআই হামিদসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, এখনও কোন পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।