মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীর কলাবাগানের একটি বাসা থেকে সাবিরা রহমান নামে এক নারী চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ধানমন্ডির গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।সোমবার (৩১ মে) দুপুরে কলাবাগানের ৫০/১, ফাস্ট লেনের ওই বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক রব্বানী।এ ঘটনার পর ইতোমধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে এটি এটি ঠান্ডা মাথার খুন নাকি অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু? তবে তবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ধারণা করছে, এটি অগ্নিকাণ্ড নয়, বরং এই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। তার পিঠে ও গলায় জখমের চিহ্নও আছে।
পুলিশ আরও ধারণা করছে এই হত্যাকাণ্ডটি রোববার (৩০ মে) মধ্যরাতের যে কোনো সময় সংঘটিত হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন।ক্রাইম সিন ইউনিট জানায়, সাবিরাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা (ব্রুটালি কিলড) করা হয়েছে। ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পর বিছানার তোশকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে দাহ্য পদার্থ না থাকায় আগুন তেমন ছড়াতে পারেনি। তবে, সাবিরার শরীরের কিছু অংশ দগ্ধ হয়।সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের ইন্সপেক্টর শেখ রাসেল কবির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ধারাল অস্ত্র দিয়ে সাবিরার শ্বাসনালী কেটে ফেলা হয়েছে। তার দেহে রক্ত ও পোড়ার ক্ষত আছে। তবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, এটি হত্যাকাণ্ড। আলামত দেখে মনে হয়েছে, মধ্যরাতের যে কোনো সময় হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে।’
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাসায় এসে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান। নিহত চিকিৎসকের শরীরের কিছু অংশ দগ্ধ ছিল বলেও জানান তারা। মরদেহ উদ্ধারের পর পিঠে দুটি ও গলায় একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ।ফায়ার সার্ভিস জানায়, মরদেহটির গলা ও পায়ের সামনের অংশ দগ্ধ ছিল। পেটসহ অন্যান্য অংশ দগ্ধ ছিল না। ঘরের তোশক পুড়ে গিয়েছিল। এসব দেখে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পুলিশে খবর দিতে বলেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ওই বাসায় একটি আগুনের সংবাদ পাই। সেখানে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ধোঁয়া দেখতে পান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা সেখান থেকে একটি দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেন।’এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, ‘ডা. সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্টলেনের বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তিনি ফ্ল্যাটে এক তরুণীকে সাবলেট হিসেবে ভাড়া দেন। সকালে সাবলেটে থাকা তরুণী হাঁটতে বের হয়েছিলেন। হেঁটে আসার পর তিনি বাসায় ফিরে দেখেন চিকিৎসক সাবিরার রুম বন্ধ। রুমের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। পরে তিনি দারোয়ানকে ডেকে চাবি এনে রুমের তালা খুলে দেখতে পান চিকিৎসক সাবিরা ফ্লোরে পড়ে আছেন। সবাই ভেবেছিলেন, চিকিৎসক আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। পরে ডিবি পুলিশ এসে তার গলায় একটি ও পিঠে দুটি আঘাতের চিহ্ন পায়।আজিমুল হক আরও বলেন, আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি, দ্রুত রহস্য উদঘাটন করতে পারব।