বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৬ অপরাহ্ন
হাসান আল মাহমুদ রাজু: কুলাউড়া উপজেলায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা চর্মরোগে কয়েক শতাধিক গরু আক্রান্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে চলায় কৃষক ও খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, কৃষক ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলএসডি রোগটি একধরনের চর্মরোগ। এলএসডি বা লাম্পি স্কিন হলে গরুর মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু-বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরে একপর্যায়ে গরু খাওয়া বন্ধ করে দেয়। জ্বরের সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয় এবং পা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আক্রান্ত গরুর শরীরের বিভিন্ন জায়গার চামড়া পিÐ আকৃতি ধারণ করে। ক্ষত সৃষ্ট হয় এবং কোনো কোনো গরুর লোম উঠে যায় । ধীরে ধীরে এই ক্ষত শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। গরু কাঁপার পাশাপাশি ঝিম মেরে থাকে। লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হলে কিডনির ওপর প্রভাব পড়ে ফলে গরু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার পৃথিমপাশা ও কর্মধা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, অনেক কৃষকের গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়েছে। কোরবানির ঈদে গরু বিক্রির জন্য রেখেছেন দেওগাও গ্রামের কয়েছ আহমদ। এখন লাম্পি স্কিন দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। আক্রান্ত গরুকে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষক শাহিন মিয়া বলেন, ‘দুই-তিন দিন আগে আমার গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেয়। এখন চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। এখনও রোগ ভালো হয়নি।’ সুলতানপুর গ্রামের বকুল খান বলেন, ‘আমার গরুর শরীরের চামড়া ফুলে উঠে অনেকটা দাগ হয়ে গেছে। তবে কয়েক দিনের চিকিৎসায় অনেকটাই ভালো হয়ে উঠেছে। আমুলি গ্রামের সফিক মিয়া বলেন, ‘কষ্টের টাকায় কেনা গরুটির রোগ হয়েছে। এখন অনেক দুশ্চিন্তায় আছি।’
কুলাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মিঠুন সরকার জানান, ‘লাম্পি স্কিন রোগের সরাসরি কোনো প্রতিষেধক না থাকলেও ছাগলের বসন্ত রোগের প্রতিষেধক এ ক্ষেত্রে দেওয়া হয়। তাই আক্রান্ত গরুর মধ্যে এই প্রতিষেধকটির প্রয়োগ করা হচ্ছে। গরুর থাকার ঘরের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যেন মশা মাছির উপদ্রব না থাকে। এছাড়াও নিম পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে।’