1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কাঠাল উৎপাদন ও অন্তবর্তী পরিচর্যা

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩
  • ১১৩ বার পঠিত

আফতাব চৌধুরী

সাধারণত লালচে মাটি ও উঁচু এলাকায় কাঁঠাল বেশি দেখা যায় । কাঁঠাল গাছ মাঝারি আকারের এবং প্রায় ৮-১০ মিটার লম্বা হয়। প্রধানম‚লী ও পার্শ্ববিস্তৃত শিকড় সাধারণত মাটির দুই . মিটারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। সাদা দুধের মতো তরুক্ষীর এ গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পাতা গাঢ় সবুজ, উপবৃত্তাকার, সরল ও একান্তভাবে সাজানো।
রোপণের ৭-৮ বছর পরেই ফল ধরা শুরু হয়। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে ফুল আসে। সহবাসী উদ্ভিদ বিধায় একই গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল পৃথকভাবে ধরে। গদাকৃতি মঞ্জুরি দÐে প্রচুর ক্ষুদ্র ফুল একত্রে থাকে। একটি কাঁঠালের মধ্যে অসংখ্য কোষ বা কোয়া থাকে। এগুলোই প্রকৃতপক্ষে ফল। কোষের চারপাশে পাতলা ফিতার মতো চিটা বা চাকি থাকে। এই চিটা ও খোসাকে একত্রে ভুতরো বা ছিবড়া বলে। খোসার উপরে ছোটো-বড়ো কাঁটা থাকে এবং কাটার সংখ্যা যত ফুলের সংখ্যাও তত হয়।
কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থাতেই খাওয়া যায়। বসন্তকাল থেকে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত কাঁচা কাঁঠাল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। পাকা ফল বেশ পুষ্টিকর, কিন্তু এর গন্ধ অনেকের কাছে ততটা আকর্ষণীয় নয়। তবু মৃদু অ¤øযুক্ত সুমিষ্ট স্বাদ ও স্বল্পম‚ল্যের জন্য অনেকে পছন্দ করেন। কাঁঠালের আঁটি তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া যায়। এর একটি সুবিধে হল, আঁটি অনেকদিন ঘরে রেখে দেওয়া যায়। পাকা ফলের কোষ সাধারণত খাওয়া হয়, এই কোষ নিঙড়ে রস বের করে তা শুকিয়ে আমসত্তে¡র মতো ‘কাঁঠালসত্ত¡ ও তৈরি করা যায়।
কাঁঠালের বেশ কিছু জাত রয়েছে। বাংলাদেশে চাষকৃত জাতসম‚হ মোটামুটি দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। গালা ও খাজা-এ দু’টি জাত ছাড়াও কাঁঠালের আরও জাত আছে।
সাধারণত কাঁঠালের বীজ থেকেই চারা তৈরি করা হয়। এর ফলে গাছের মাতৃ-বৈশিষ্ট্য বজায় না-থাকলেও ফলনে বিশেষ তারতম্য দেখা যায় না। ভালো পাকা কাঁঠাল থেকে পুষ্ট বড়ো বীজ বের করে ছাই মাখিয়ে দুই-তিনদিন ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর বীজ বপন করলে ১৫-২০ দিনে চারা গজাবে। তিন থেকে চার মাস পরে চারা সাবধানে তুলে ম‚ল জমিতে রোপণ করতে হবে। এ ছাড়া অঙ্গজ বংশবিস্তার পদ্ধতি, যেমন গুটি কলম, ডাল কলম, চোখ কলম এবং টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে কাঠালের চাষ করা যায়।
আগাছা পরিষ্কার করে ভালোভাবে গভীর কর্ষণের মাধ্যমে জমি তৈরি করতে হবে। এরপর ১২ মি. ১২ মি. দ‚রত্বে ১মি. ১মি. আকারের গর্ত খনন করতে হবে। গর্ত খনন রোপণের ৩০ দিন আগে করতে হবে।
নি¤œলিখিত সারসম‚হ মাটির সাথে মিশিয়ে প্রতিটি গর্ত ভরাট করতে হবে- গোবর সার ১০০০ গ্রাম, ইউরিয়া ১০০ গ্রাম, এসএসপি ১০০ গ্রাম, এমওপি ১০০ গ্রাম। চারার শিকড় খুব দুর্বল প্রকৃতির হওয়ায় পলিথিন ব্যাগে উৎপাদিত চারা মাটিসহ গর্তে রোপণ করা হয়। এ ছাড়া গর্তপ্রতি ৩-৪টি বীজ বপন করা যায়। পরবর্তীতে এ থেকে গজানো সুস্থ সবল চারাটি রেখে বাকি চারাগুলো তুলে ফেলতে হয়। গবাদি পশু যেন রোপণকৃত চারা না খেয়ে ফেলে সেজন্য চারাকে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা উচিত। চারা রোপণের পর পানিসেচ দিতে হয়।
মাটিতে প্রয়োজনীয় রস না থাকলে সার দেওয়ার পর পানি দেওয়া উচিত। শুষ্ক মরশুমে ১০-১৫ দিন পর পর সেচ দিলে ভালো হয়। সেচ দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যেন পানি না জমে।
বর্ষা শেষে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে গাছের গোড়া ও মোটা ডাল থেকে গজানো কচি ডালপালা এবং ফলের বোঁটার অবশিষ্টাংশ প্রতি বছর কেটে বা ছেটে দিতে হবে। এই সময় রুগ্ণ ও শুকনো ডালপালা কেটে ফেলতে হবে। কাঁঠালের বিভিন্ন ধরনের রোগ সঠিক সময়ে ভালো ফলন উৎপাদনে বাধা দেয়। এজন্য রোগের লক্ষণ দেখা মাত্র ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত কাঁঠালে যে সমস্ত রোগ দেখা যায় সেগুলো হল- * গোলাপি দাগ *কাঁঠাল পচা রোগ *মুচিঝরা রোগ।
গোলাপি দাগ : পাতার নিচে গোলাপি রঙের আবরণ এবং পাতা ঝরে যায়। প্রতিকার : আক্রান্ত অংশ কেটে ফেলতে হবে। বোর্দো মিশ্রণ দিতে হবে। কাঁঠাল পচা রোগ : কচি ফলের গায়ে বাদামি রঙের দাগের সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত ফল গাছ থেকে ঝরে পড়ে। প্রতিকার: গাছের নিচে করে পড়া পাতা ও ফল পুড়ে ফেলতে হবে। ফেলিকল নামক ছত্রাকনাশক ০.০৫ শতাংশ হারে পানিতে মিশিয়ে গাছে ফুল আসার পর থেকে পনেরো দিন অন্তর অস্তর স্প্রে করতে হবে। মুচিঝরা রোগ : ছত্রাকজনিত এই রোগের আক্রমণের ফলে কাঠালের স্ত্রী পুষ্পমঞ্জরি ছোটো অবস্থায় ঝরে পড়ে।
প্রতিকার : মুচি ধরার আগে ও পরে দশদিন পর পর দুই-তিনবার বোর্দো মিশ্রণ অথবা ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম ৪৫ বা রিডোমিল এম জেড ৭৫ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। কাঁঠালের সার ব্যবস্থাপনা- নির্ধারিত সার তিন ভাগে ভাগ করে প্রতি বছর ফেব্রæয়ারি মাসে একবার, বর্ষার আগে একবার ও বর্ষার পরে আর একবার মোট তিনবার প্রতিটি গাছের চারপাশে কুপিয়ে সার ছিটিয়ে দিতে হবে।
কাঁঠালের ফলের কাঁটাগুলো ভোঁতা বা চ্যাপ্টা হয়। বসন্তের শুরু থেকে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত কাঁচা কাঁঠাল সংগ্রহ চলে। সাধারণত গ্রীষ্মের শেষ থেকে ফল পাকা শুরু হয়। ফলের বোঁটার কিছু অংশ রেখে কাÐ থেকে ফল সংগ্রহ করা হয়। ফল সংগ্রহের সময় তাপমাত্রা এমনিতেই বেশি থাকে তাই পরিণত ও পরিপুষ্ট ফল সংগ্রহের পর মেঝেতে খড় বিছিয়ে সাজিয়ে রাখলেই ৩-৭ দিনের মধ্যে পেকে যায়। সাংবাদিক-কলামিস্ট।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..