রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের প্রেক্ষাগৃহে প্রভাস অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘আদিপুরুষ’ মুক্তি পেয়েছে শুক্রবারে। দক্ষিণী এ সুপারস্টারের ভক্তরা ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে সিনেমাটির জন্য অপেক্ষা করছিল। মুক্তির দিন প্রতিটি থিয়েটারের সামনে সুদীর্ঘ সারি এর প্রমাণ দেয়। পর্দায় রাম চরিত্রে প্রভাসকে দেখতে তাদের যেন আর তর সইছিল না। অনেক জায়গায় ভক্তদের এ আগ্রহ উন্মাদনায় পরিণত হয়েছে। তেলেঙ্গানার জ্যোতি সিনেমায় প্রদর্শনী শুরু হতে দেরি হওয়ায় ভক্তরা ক্ষেপে যায়। তারা সেখানে রীতিমতো ভাংচুর করে। ঘটনাটির একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কয়েকজন লোক কাচের জানালায় ঢিল ছুড়ছে। আর পেছন থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ভেসে আসছে। সাউন্ড সিস্টেমে ত্রুটির কারণে আদিপুরুষের প্রদর্শনী শুরু হতে ৪০ মিনিট দেরি হয়েছিল বলে জানা যায়। এ কারণেই ভক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাণ্ডবলীলা চালায়। এ ঘটনায় করা একটি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ। তবে প্রভাসের আদিপুরুষকে ঘিরে ভক্তদের উন্মাদনার এটি দ্বিতীয় ঘটনা। একই দিনের প্রথম ঘটনাটি আরো ভয়াবহ। আদিপুরুষ সিনেমার নেতিবাচক রিভিউ দেয়ার কারণে এক ব্যক্তি পিটিয়েছে প্রভাসের ভক্তরা। সে ব্যক্তি বলেছিল, ‘রামের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রভাস উপযুক্ত নয়।’
পৌরাণিক কাহিনীনির্ভর এ সিনেমায় আরো অভিনয় করেছেন সাইফ আলী খান ও কৃতী শ্যানন। মহাকাব্য রামায়ণকে নিজের বয়ানে উপস্থাপন করেছেন পরিচালক ওম রাউত। ৫০০ কোটি রুপি ব্যয়ে সিনেমাটি তৈরি হয়েছে। বক্স অফিসে এটি ভালো করেছে। প্রথম দিন ১৩০ কোটি রুপির বেশি আয় করার লক্ষ্য নিয়ে বক্স অফিসে যাত্রা করেছিল ‘আদিপুরুষ’। তাছাড়া ডিস্ট্রিবিউশন ও ওটিটি স্বত্ব বিক্রি থেকে এর মধ্যেই সিনেমাটি ৪৮০ কোটি রুপি আয় করেছে।
তবে ভক্তদের যতই আগ্রহ থাকুক, কিংবা বক্স অফিসে যত ভালো যাত্রাই করুক, সমালোচকদের মন জয় করতে পারেনি আদিপুরুষ। সিনেমাটিতে ভিজুয়াল ইফেক্টসের বহুল ব্যবহার হয়েছে। তা সত্ত্বেও রামায়ণের যথাযথ আবহ সিনেমাটিতে ফুটে ওঠেনি বলে সমালোচকদের অভিযোগ। মূল বইয়ে যে বীরত্ব ও ঐশ্বরিক জাদুর ছোঁয়া আছে, সিনেমাটিতে তা অনুপস্থিত। ফলে এটি দেখতে কমিক বই পড়ার মতো বলে সমালোচকরা উপহাস করেছেন। অনেকেই আবার সিনেমাটিকে ভিডিও গেমের মতো বলেছেন।
আদিপুরুষে রামায়ণের প্রধান চরিত্রগুলোর জনপ্রিয় নাম ব্যবহার করা হয়নি। পরিবর্তন করা হয়েছে। এদিকেও সমালোচকরা আঙুল তুলেছেন। সিনেমায় রামকে রাঘব, সীতাকে জানকী, লক্ষ্মণকে শেশ ও হনুমানকে বজরঙ নামে অভিহিত করা হয়েছে। এ ধরনের নামকরণ আদিপুরুষকে রামায়ণ থেকে বিচ্যুত করেছে বলে সমালোচকরা জানিয়েছেন। তবে রাবণ ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম অপরিবর্তিত আছে।
জানকী চরিত্রে কৃতী শ্যাননের উপযুক্ততাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। প্রভাস ও কৃতির মধ্যে রসায়নটাও তেমনভাবে জমেনি বলে সমালোচকদের অভিযোগ।
তবে সমালোচনা যা-ই হোক না কেন, দিনশেষে দর্শকরাই কিন্তু একটি সিনেমার নিয়তি নির্ধারণ করে দেয়। এক্ষেত্রে আদিপুরুষের কোনো ঘাটতি হবে বলে মনে হচ্ছে না।