মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক :: হ্যামিল্টনে শুরুটা দুর্দান্তই হয়েছিল বাংলাদেশের। অভিষেক ম্যাচে নাসুম আহমেদ প্রথম ওভারেই তুলে নিয়েছিলেন উইকেট। মার্টিন গাপটিলকেও নাসুম ফিরিয়েছিলেন সপ্তম ওভারেই। কিন্তু তাতে লাভ হলো না কিছুই। ডেভন কনওয়ের ৯২ রানের ইনিংসে ভর করে নিউজিল্যান্ড গড়ে ২১০ রানের বিরাট সংগ্রহ।
জবাবে লেগ স্পিনার ইশ সোধির বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। সোধির চার উইকেটে এক পর্যায়ে দুই অঙ্কের রানেই গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল বাংলাদেশের সামনে।শেষ পর্যন্ত আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের কল্যাণে সেটি হয়নি। কিন্তু তাদের ব্যাটে কেবল হারের ব্যবধানই কমেছে বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ করতে পারে ১৪৪। তাতে টাইগারদের ভাগ্যে জোটে ৬৬ রানের বড় হার।
অপরাজিত ৯২ রানের ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন কনওয়ে।
২১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নাইম শেখের ব্যাটে শুরুটা মন্দ হয়নি বাংলাদেশের। কিন্তু তৃতীয় ওভারেই টিম সাউদির বলে ফিরে যান লিটন দাস। ১১ বল পরেই লকি ফার্গুসনের শিকার হয়ে ১৮ বলে ২৭ করে ফেরেন নাইম।
বাংলাদেশের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে আসেন সোধি। আর সেই স্পেলেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাংলাদেশ দল।
চতুর্থ বলে সোধিকেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। এক বল বিরতির পর স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন মোহাম্মদ মিঠুন।
সোধির পরের ওভারে প্রথমে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন মাহমুদুল্লাহ। পরের বলে একইভাবে আউট হন মেহেদি হাসান। হ্যাটট্রিকটা হয়নি। কিন্তু ম্যাচ থেকে ততক্ষণে বাংলাদেশকে ছিটকে দিয়েছেন সোধি।
এরপর অবশ্য বাংলাদেশকে সান্ত্বনার কিছু এনে দেন আফিফ। সাইফুদ্দিনের সঙ্গে গড়েন ৬৩ রানের জুটি; নিজে করেন ৩৩ বলে ৪৫।
ফার্গুসনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে আফিফ মারেন পাঁচটি চার ও একটি ছয়।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য উইকেটে থাকেন সাইফুদ্দিন। বাংলাদেশ ইনিংস শেষ করে আট উইকেটে ১৪৪ রানে। সাইফুদ্দিন অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে ৩৪ রানে।
সোধির চার উইকেটের পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডের হয়ে একটি করে উইকেট নেন সাউদি ও হামিশ বেনেট; দুটি করে উইকেট পান ফার্গুসন।
এর আগে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামার পর প্রথম ওভারেই নাসুম উইকেট নিয়ে দারুণ সুযোগ এনে দেন বাংলাদেশকে। গাপটিল তার ২৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংসে প্রতি-আক্রমণও করেছিল নিউজিল্যান্ড। সপ্তম ওভারে নাসুম তাকেও ফেরানোর পর অবশ্য বাকিটা ইনিংস ডেভন কনওয়ের।
প্রথমে ইয়াংয়ের সঙ্গে গড়েন ৬০ বলে ১০৫ রানের জুটি। কনওয়ে অবশ্য ফিফটি ছোঁয়ার আগেই ফিরতে পারতেন।
নাসুমের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্কয়ার লেগে সেই ক্যাচ ধরতে গিয়ে বাউন্ডারিতে পা ছুঁইয়ে ফেলেন শরিফুল ইসলাম, যার আন্তর্জাতিক অভিষেকও এই ম্যাচে।
নাসুমের ঠিক উল্টো অভিষেক হয়েছে শরিফুলের। নাসুম যেখানে চার ওভারে ৩০ রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার, শরিফুল সেখানে তার চার ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান; পাননি কোনো উইকেট।
সঙ্গে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন কনওয়েকে। সেই জীবন পেয়ে আর কোনো ভুল করেননি।
দুই চার ও চার ছয়ে ৩০ বলে ৫৩ করে মেহেদির বলে আফিফ হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে ইয়াং ফেরত গেলেও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন কনওয়ে।
শেষ পর্যন্ত যখন ফিরছেন, ৫২ বলে করেছেন ৯২। তাতে চার ১১টি, ছয় তিনটি। সঙ্গে শেষ দিকে দারুণ এক ক্যামিও খেলেন ফিলিপস; করেন ১০ বলে ২৪। চতুর্থ উইকেটে তাদের জুটি ৫২ রান তোলে মাত্র ১৯ বলে।
শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান দেন ২০ রান। সব মিলিয়ে নিজেদের ইনিংস শেষে ২১০ রান তোলে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের তিন পেসারই ছিলেন খরুচে। শরিফুল রান দিয়েছেন ৫০, মুস্তাফিজ ৪৮ ও সাইফ ৪৩। নাসুম ৩০ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। এক উইকেট নিতে মেহেদি দিয়েছেন ৩৭ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড ইনিংস: ২১০/৩ (২০ ওভার)
(গাপটিল ৩৫, অ্যালেন ০, কনওয়ে ৯২*, ইয়ং ৫৩, ফিলিপস ২৪*; নাসুম ২/৩০, সাইফউদ্দিন ০/৪৩, শরিফুল ০/৫০, মোস্তাফিজ ০/৪৮, শেখ মেহেদী ১/৩৭)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৪৪/৮ (২০ ওভার)
(নাঈম শেখ ২৭, লিটন ৪, সৌম্য ৫, মিথুন ৪, রিয়াদ ১১, আফিফ ৪৫, শেখ মেহেদী ০, সাইফউদ্দিন ৩৪*, শরিফুল ৫ নাসুম ০*; সাউদি ১/৩৪, বেনেট ১/২০, ফার্গুসন ২/২৫, সোধি ৪/২৮, চ্যাপম্যান ০/৯, ফিলিপস ০/৫, মিচেল ০/২১)।
ফল: ৬৬ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড।