শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৪ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: গত কয়েকদিনের থেমে থেমে বৃষ্টির পানি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিলেট বিভাগের বেশীর ভাগ নদ-নদী ও হাওরাঞ্চলের হু হু করে বাড়ছে পানি। সিলেট অঞ্জলে প্রতি বছর ভারতের পানিই ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তারাই ধারাবাহিকতায় এবার সেই অতীতের আতংকে রয়েছেন সীমান্ত বর্তী সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা। তবে নদ-নদীর পানি বাড়লেও আগামী ৯ জুন পর্যন্ত পানি বিপদসীমার নিচেই থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে সিলেটের গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি কতটুকু বাড়বে তার নিশ্চয়তা নেই বলেও জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে,বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র শনিবার সকাল ৯টার বুলেটিনে জানিয়েছে,গত ২৪ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে ৮৩সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৫৬সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ১৫সেন্টিমিটার, আর কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে ১২১সেন্টিমিটার,শেওলা পয়েন্টে ৯২সেন্টিমিটার,শেরপুর পয়েন্টে ৩৮সেন্টিমিটার, মার্কুলী পয়েন্টে ১৮সেন্টিমিটার,গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে এক সেন্টিমিটার বেড়েছে।
মৌলভীবাজারে মনু নদীর পানি রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে কমেছে আট সেন্টিমিটার তবে মৌলভীবাজার পয়েন্টে আট সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বেড়েছে ধলাই ও খোয়াই নদীরও। ধলাই নদীর পানি কমলগঞ্জ পয়েন্টে পাঁচ সেন্টিমিটার,খোয়াই নদীর পানি বাল্লা পয়েন্টে নয় সেন্টিমিটার, হবিগঞ্জ পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার, পুরাতন সুরমা নদীর পানি দিরাই পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
তবে সকল নদীর পানিই প্রতিদিন বাড়লেও আপাতত চিন্তার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট অফিসের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, আগামী ৯ জুনের মধ্যে সিলেটে দুদিন বৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে উজানেও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে নদীর পানি বাড়লেও বিপদসীমার নিচেই থাকবে। একই সঙ্গে বন্যার শঙ্কাও এই সময়ের মধ্যে নেই বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনযায়ী শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেট স্টেশনে ১১৪ মিলিমিটার,সুনামগঞ্জে ৪৭মিলিমিটার,শেওলায় ৬৬মিলিমিটার, মৌলভীবাজারে ৩৫মিলিমিটার,মনু রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে ৭৫ মিলিমিটার,সিলেটের কানাইঘাটে ৫৮মিলিমিটার,জকিগঞ্জে ৭৭ মিলিমিটার,লালাখালে ১০৪ মিলিমিটার এবং হবিগঞ্জ স্টেশনে ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে ভারতের শিলচর স্টেশনে ৬৯ মিলিমিটার, কৈলাশহরে ৫৫মিলিমিটার এবং তেজপুর স্টেশনে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান সরকার এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে সিলেটের নদীগুলোর পানি বাড়ছে। তবে সকল নদীর পানিই বিপদসীমার নিচে রয়েছে। আগামী ৯ জুনের মধ্যে দুদিন একটু বেশি বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে উজানের বৃষ্টি হতে পারে। তবে বৃষ্টি হলেও পানি বিপদসীমার নিচে থাকবে। কিন্তু সারি নদীর পানির হিসেব বলা যাচ্ছে না। কারণ এই নদীর পানি বৃদ্ধি মূলত উজানের ঢলের সঙ্গে সম্পর্ক। উজানের ঢলের কারণে এখানে পানি দ্রুত বাড়তেও পারে।