1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কমলগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি সভায় বক্তারা প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষক ও কৃষির স্বার্থ উপেক্ষিত

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ জুন, ২০২১
  • ২২১ বার পঠিত

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: দেশের ইতিহাসের ৫০তম বাজেটে কৃষক ও কৃষির স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার নেতারা করোনা মহামারি মোকাবেলায় কৃষক ও কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ বরাদ্দ, বন্ধ কৃষি ভিত্তিক শিল্প কলকারখানা চালু, আধুনিকায়ন এবং যান্ত্রিকীকরণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের নামে লুটপাটের পথ বন্ধ করে প্রকৃত কৃষককে পর্যাপ্ত ভর্তুকি প্রদান ও কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে প্রদানের দাবি জানান। ০৬ জুন রবিবার সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক কৃষকসভা থেকে এই দাবি জানানো হয়। কৃষক সংগ্রাম সমিতি কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটির অন্যতম নেতা রমজান আলী পাখির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা কমিটির আহবায়ক ডা. অবনী শর্ম্মা, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট জেলা কমিটির সভাপতি শহীদ সাগ্নিক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, কৃষক সংগ্রাম সমিতি কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, মানিক পাল তাপস, ইমরান আলী, নাইওর মিয়া, সায়েক আহমেদ। সভার শুরুতে প্রবীণ শ্রমিকনেতা মনোহর আলী, কৃষকনেতা নুরুজ্জামান চুনু ও সাঈদ মিয়ার মৃত্যুতে তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সভায় এক প্রস্তাবে গত ২৮ মে রাতে সুনছড়া চা-বাগানে ম্যানেজারের মদদপুষ্ট বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হরিনারায়ন হাজরা, স্বপন নায়েকসহ চা-শ্রমিকদের উপর হামলা এবং বাড়িঘরে ভাংচুর, গবাদিপশু ও অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্থদের উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ ও গবাদিপশু উদ্ধারের দাবি জানান।
সভায় বক্তারা বলেন বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা ও করোনা মহামারিতে দেশ তথা বিশ্বব্যাপি সৃষ্ট বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা সামগ্রিক স্বার্থে কৃষি উৎপাদনের সকল উপকরণ (সার-বীজ-ডিজেল-কীটনাশক-বিদ্যুৎ) বিনামূল্যে প্রদান ও পর্যাপ্ত ধান-চালের গুদাম, সাইলো, হিমাগার, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা সৃষ্টিসহ বন্ধ কৃষি ভিত্তিক শিল্প কলকারখানাগুলি চালু ও আধুনিকায়ন করার প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত বাজেটে কোন দিক নির্দেশনা নাই। বক্তারা আরও বলেন ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটের ২ লাখ ১৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা অর্থাৎ ৩৫.৫৬ শতাংশই ঘাটতি বাজেট। আর এই ঋণ পরিশোধে দেশকে করা হবে ঋণগ্রস্থ প্রস্তাবিত বাজেটে ঋণের সুদ বাবদ ৬৮ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে; যা স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, সামাজিক কল্যাণ ও নিরাপত্তা খাতের চেয়েও বেশি । ইতোমধ্যে মাথাপিছু ঋণ ৮৫ হাজার টাকা, যা ক্রমান্বয়ে আরও বাড়ছে। নেতৃবৃন্দ করোনা মোকাবেলায় সরকারের সমালোচনা করে বলেন করোনা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার করুণ চিত্রই উন্মোচিত হয়নি সাথে সাথে সরকারের উন্নয়নের গালভরা বুলির উপরও চপেটাঘাত করেছে। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষির চেয়ে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বেশি। কৃষিখাতে ২৪ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়, যা প্রয়োজনের তুলনায় যেমন অপ্রতুল তেমনি বাজেটে বন্ধ পাটকল ও চিনিকলসহ কৃষি নির্ভর শিল্পকলকারখানা চালু ও নতুন শিল্প স্থাপনের প্রেক্ষিতে কোন দিন নির্দেশনা নাই।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন করোনাকালে কৃষি উৎপাদনে কৃষকদের নগদ প্রণোদণা, বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ প্রদান ও স্বল্পমূল্যে রেশনিং চালুর জন্য কৃষকদের দাবি উপেক্ষা করলেও সরকার ব্যবসায়ী-ধনিকগোষ্টির স্বার্থে কর্পোরেট কর ২.৫ শতাংশ হ্রাস করেছে। সরকার ধনিক গোষ্টির সুযোগ দিতে প্রত্যক্ষ আয়কর বাড়ানোর পরিবর্তে পরোক্ষ আয়কর(ভ্যাট) বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটার ব্যবস্থা করেছে। সরকারে আয় খাতের সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা আসবে মূল্য সংযোজন কর(ভ্যাট) থেকে, যা মোট আয়ের ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ। ফলে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির এই সময়ে জিনিসপত্রের মূল্য আরেক দফা বৃদ্ধি পাবে, যার চাপ পড়বে সরাসরি নি¤œআয়ের জনগণের উপর। প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় পড়বে কৃষক ও শ্রমজীবীদের জীবন ও জীবিকা। বাজেটে থোক বরাদ্দ মূলত দলীয় লুটপাট ও দূর্নীতিতে শেষ হবে, জরুরী ছিল কৃষক ও শ্রমজীবী দরিদ্র জনগণের জন্য রেশন চালুর প্রেক্ষিতে সুনির্দ্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা। বাজেট গতানুগতিক ও ধারাবাহিকতা রক্ষা করায় লাভবান হবে বা হয়ে চলেছে প্রচলিত আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার ধারক-বাহক ও কায়েমী স্বার্থবাদীরা। তার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিল ৫ জন আর বর্তমানে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র মতে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা আমানতের সংখ্যা ৯৩ হাজার ৮৯০টি। এই পরিসংখ্যান থেকে বুঝা যায় প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বাজেটের সুফল ভোগকারী কারা। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা আর দেশের ৫০তম বাজেট ৭৬৮ গুণ বৃদ্ধিতে বাজেটের আকার বাড়লেও বাড়েনি শ্রমিক-কৃষক তথা ব্যাপক জনগণের জীবন-জীবিকার মান। বাংলাদেশের মত নয়াউপনিবেশিক দেশ সমূহে বাজেট সকল সময়ই জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী হয়ে থাকে। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বসংস্থা সমূহের নীতি-নির্দেশের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে এসডিজি ঘোষণার পর থেকে আমাদের দেশের বাজেট প্রণয়ন করার ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজির সর্বোচ্চ লুন্ঠন ও তার এদেশীয় দালালদের অবাধ লুটপাটের পথকে আরো বেশি প্রশস্ত করা হয়েছে। বাজেটকে জাতীয় ও জনস্বার্থমুখী করতে জাতীয় গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অগ্রসর করার লক্ষ্যে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি জনগণের প্রতি উদাত্ত্ব আহ্বান জানান।
সভায় রমজান আলী পাখিকে আহবায়ক এবং সিদ্দিকুর রহমান যুগ্ম-আহবায়ক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কৃষক সংগ্রাম সমিতি কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..