সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৭ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখায় অসচ্ছলরা সরকারি বিভিন্ন ভাতার টাকা তুলতে ব্যাংকের ভেতর-বাহিরে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তি পোয়াতেন। প্রচন্ড রোদে তাদের অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার ও বৃষ্টিতে ভিজে অসুস্থ্য হওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। কিন্ত এবার প্রথমবারের মতো বিকাশের মাধ্যমে ঘরে বসে ভাতার টাকা পেয়ে তারা অত্যন্ত খুশি। বয়স্ক ভাতাভোগী উপজেলার বর্ণি গ্রামের হতদরিদ্র আছতুরা বিবি জানান, এই পদ্ধতি চালু করায় কষ্ট করে আর ব্যাংকে যেতে হচ্ছে না, ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে না। এবার ঘরে বসে সহজেই ভাতার টাকা পেয়েছি। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই’।
বড়লেখায় এখন ঘরে বসেই বিকাশের মাধ্যমে ভাতা পাচ্ছেন বয়স্ক, বিধবা ও অসচ্ছল প্রতিবন্ধীরা। এতে তাদের আর ব্যাংকে যেতে হচ্ছে না। বিকাশের মাধ্যমে সহজে ঘরে বসেই তারা ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন। এতে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই তারা টাকা ক্যাশ আউট করে নিতে পারছেন। ফলে ভাতাভোগীরা খুব খুশি।
জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বয়স্ক, বিধবা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষাউপবৃত্তি বিকাশের মাধ্যমে (জিটুপি পদ্ধতিতে) উপকারভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় বড়লেখার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১৩৯৮৯ ভাতাভোগী রয়েছেন। এরমধ্যে ৮২৭২ জন বয়স্ক, ২৯৩৯ জন বিধবা ও ২৬০৮ জন অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ও ৯৩ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষাউপবৃত্তি ভাতা পাচ্ছেন। এবার প্রথমবারের মতো বিকাশের মাধ্যমে তাদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০ হাজার ১১ জন উপকারভোগী বিকাশের মাধ্যমে ভাতা পেয়েছেন। এরমরধ্যে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভাগেীরা ৫০০ টাকা হারে ছয় মাসে ৩ হাজার টাকা এবং অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী ৭৫০ টাকা হারে ছয় মাসে ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে পেয়েছেন। পর্যায়ক্রমে সকল ভাতাভোগীরা বিকাশের মাধ্যমে ভাতা পাবেন। কয়েকজন বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, আগে ব্যাংকের মাধ্যমে তারা টাকা তুলেছেন। এতে অনেকেই হয়রানির শিকার হয়েছেন। এছাড়া টাকা তুলতে গিয়ে লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেছেন। বিকাশের মাধ্যমে ভাতা পেয়ে তাদের ভালো হয়েছে। এতে তারা সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আগে ভাতাভোগীদের ব্যাংকের মাধ্যমে ভাতা দেওয়া হতো। অনেকেই ব্যাংকে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে টাকা তুলেছেন। এতে তাদের কষ্ট হতো। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষের অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোয়াতে হতো। এখন আর ভাতাভোগীদের কষ্ট করে ব্যাংকে যেতে হবে না। তারা ঘরে বসেই বিকাশে (জিটুপি পদ্ধতিতে) ভাতা পেয়ে যাবেন। এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে উপজেলার ১০ হাজার ১১ জন উপকারভোগী কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই বিকাশের মাধ্যমে ভাতা পেয়েছেন। প্রথমবারের মতো ঘরে বসেই বিকাশের মাধ্যমে টাকা পেয়ে ভাতাভোগীরা খুবই খুশি। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে এ কার্যক্রমের আওতায় আনার কাজ চলমান রয়েছে।