1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১২ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

জুড়ীর ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যানের ক্ষমতার দাপট! সরকারী বরাদ্দের অপচয়

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ জুন, ২০২১
  • ২৯০ বার পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদক : মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ। তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং সরকারি অর্থে বাগানের সংরক্ষিত এলাকায় জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করলে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বাগানের সহ¯্রাধিক শ্রমিক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ ও স্মারকলিপি শ্রমিকরা গত শুক্রবার দুপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির নিকট দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের এই প্রভাবশালী নেতার সরকারী অর্থের অপচয় ও নানা অপকর্মের প্রতিকার চেয়ে শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগী শ্রমিকরা চা বাগানে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সরেজমিন নির্মাণাধীন রাস্তা পরিদর্শণে ফুলতলা চা বাগানে গেলে শত শত শ্রমিকরা রাস্তা নিয়ে তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। শ্রমিকদের পক্ষে সর্দার বাসু দেব চাষা, ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পঞ্চায়েত সভাপতি লালা শেঠ, বর্তমান পঞ্চায়েত সভাপতি রবি বুনার্জি, সেক্রেটারি দিপচান গোয়ালা, সাবিত্রী চাষা জানান, বাগানের সংরক্ষিত এলাকা ২২ সেকশনে হঠাৎ করে গত ২৫ মে ইট ও বালু ফেলা শুরু করেন। বাগান শ্রমিকরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান সেকশনের ভেতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে এগুলো ফেলেছেন। অথচ সেকশনের ভেতর দিয়ে শ্রমিকরা পাতা তুলতে হাটাচলার রাস্তা বিদ্যমান। তিনি সেটিকে ৮ ফুট প্রশস্থ করে রাস্তা নির্মাণ করতে গেলে বাগান কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। শেষতক বাগান কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গত ৮ জুন রাস্তার প্রশস্থকরণ ও নির্মাণকাজ শুরু করলে শ্রমিকরা বাঁধা দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যানের লোকজন কাজ বন্ধ করেন।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ বন বিভাগের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে আদাবাড়ি এলাকায় লেবু বাগান করেছেন। সেই লেবু বাগানে যাতায়াতের সুবিধার্থে রাস্তাটি নির্মাণ করতে চান। শুধু তাই নয় লেবু বাগানের পাশে বনবিভাগের অনেক মূল্যবান সেগুন গাছ রয়েছে, এই রাস্তাটি হলে পরিবহনে সেখানকার গাছ পাচারের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই রাস্তাটি করতে চান। যদি এমন অসৎ উদ্দেশ্য না হতো, তাহলে খাসিয়া পানপুঞ্জি হয়ে লেবু বাগানে যাবার রাস্তাটির উন্নয়ন করতেন, এতে খাসিয়ারা উপকৃত হতেন। সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থ ও অসৎ উদ্দেশ্যে রাস্তাটি করার উদ্যোগ নিয়েছেন চেয়ারম্যান। নিজের ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে জোরপূর্বক রাস্তাট নির্মাণ করতে চান।

এদিকে শুক্রবার ১১ জুন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি নিজ নির্বাচনী এলাকা বড়লেখায় সরকারি সফরে এলে বাগানের শ্রমিকরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক আহমদের বিরুদ্ধে তাঁর কাছে ফুলতলা ও এলবিন টিলা বাগানের সহ¯্রাধিক শ্রমিক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ ও স্মারকলিপি সরাসরি মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। এসময় মন্ত্রী উপস্থিত শ্রমিকদের বক্তব্য শুনেন ও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সমাধানের আশ^াস দেন। তারপরও উদ্বিগ্ন শ্রমিকরা গতকাল শনিবার ১২ জুন চা বাগান কার্যালয়ের সম্মুখে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করেন।

ফুলতলা চা বাগানের ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম জানান, বাগানের সংরক্ষিত এলাকা দিয়ে রাস্তা করতে হলে অবশ্যই বাগানের সম্মতি নিতে হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান বাগানকে অবগত না করে, চা গাছ বিনষ্ট করে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করতে চাইলে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে কাজে বাঁধা দেয়। ২০১০ সালে চেয়ারম্যান বাগানও বনবিভাগের জায়গা জবরদখর করে এই লেবু বাগান করেন। পরে জেলা উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ও দলীয় নেতারা বসে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন। সেসময় চেয়ারম্যান বাগানের জায়গা ছেড়ে দেন এবং পরবর্তী কোনরূপ দাবি দাওয়া না করার শর্তে লিখিত দেন।

জানা গেছে, চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ ব্যক্তিগত স্বার্থে বনবিভাগের দখলীয় লেবু বাগানে যাতায়াতের সুবিধার্থে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মৌলভীবাজারের জেলা পরিষদের একটি প্রকল্পের আওতায় ইতিপূর্বে রাস্তা নির্মাণের নামে কিছু স্থানে ইট বিছানোর কাজ হয়। স¤প্রতি ইউপি কার্যালয় স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) আওতায় রাস্তা করার উদ্যোগ নেন। এদুটি প্রকল্প ছাড়াও সেখানে প্রায় দুই কিলোমিটার পল্লী বিদ্যুতের লাইন টেনে সংযোগ দিয়েছেন। পাহারাদারের ঘরে সরকারি বরাদ্দের একাধিক সোলার প্যানেল লাগিয়েছেন। গভীর নলকূপ স্থাপন ও সরকারি অর্থে একাধিক ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও বাগানের বিরুদ্ধে তিনি জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১০ জুন বৃহস্পতিবার ফুলতলা বাজারে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান ও জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ জানান, রাস্তায় কাজ হলে শুধু তাঁর ফলবাগানের নয়, চা-বাগানের শ্রমিকদেরও চলাচলের সুবিধা হতো। বাগান কর্তৃপক্ষের মদদে শ্রমিকেরা রাস্তা নির্মাণে বাধা প্রদান করেছে।

জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, তিনি ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শণ করেছেন। এটা ছাড়াও রাস্তা করার অনেক বিকল্প সুযোগ রয়েছে। বাগানের সংরক্ষিত এলাকা দিয়ে রাস্তা করা তাদের (বাগানের) নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তারপরও উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

ইউএনও আল ইমরান রুহুল ইসলাম জানান, রাস্তায় কাজ হলে সমস্যার কোনো কারণ নেই। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ কাজে বাঁধা দিয়ে ঠিক করেনি। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছেন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..