12:41 pm, Tuesday, 18 November 2025

‘বেসরকারি হাসপাতালে ৮০ শতাংশই সিজার, মেনে নেওয়া যায় না’

ডেস্ক রিপোর্র্ট:দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির সংখ্যা বাড়লেও আশঙ্কাজনক হারে সি-সেকশন (সিজার) বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে সিজারের হার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হলেও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সেটি ৮০ শতাংশের কাছাকাছি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমিয়েছি। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোয় ডেলিভারির সংখ্যা বেড়েছে। তবে আশঙ্কাজনক বিষয় হলো সি-সেকশনও অনেক বেশি মাত্রায় বেড়েছে, যার পরিমাণ বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই অনেক বেশি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী একটি দেশে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সিজার মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু এর বেশি কখনোই মেনে নেওয়ার মতো নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। একই সঙ্গে কীভাবে সিজারের পরিমাণ কমিয়ে আনা যায় তার জন্য সবরকম চেষ্টাই আমরা করে যাব।

মন্ত্রী বলেন, আমরা গত মাসে দেশের বেশকিছু হাসপাতালে ইন্সটিটিউশনাল প্র্যাকটিস (বৈকালিক সেবা) কার্যক্রম শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ কার্যক্রম আমরা শুরু করব। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ সরকারি হাসপাতালের বৈকালিক সেবায় চিকিৎসা নিচ্ছে। সেবা পেয়ে একদিকে যেমন জনগণ খুশি, অন্যদিকে যারা সেবা দিচ্ছেন তারাও খুশি।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, হাসপাতালে সেবা দিতে গিয়ে প্রায় সময়ই চিকিৎসকরা নানা সমস্যায় পড়েন। অনেক সময় রোগীর স্বজনদের মাধ্যমে হাসপাতাল ভাঙচুর হয়। এমনকি ভুল বোঝাবুঝির কারণে মারামারি পর্যন্ত হয়। এসব সমস্যার সমাধানে আমরা আগামী সংসদেই স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইনটি পাস করে ফেলার চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শুধু হাসপাতাল বানালেই হবে না, এগুলোতে দক্ষ জনবলও প্রয়োজন। বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিন লাখ লোক কাজ করে। জনবল ও সেবার দিক থেকে আমরা এখন সবচেয়ে বৃহৎ মন্ত্রণালয়। আমাদের চিকিৎসক-নার্স বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু জনবল দিয়েই হবে না, পর্যাপ্ত ওষুধও দরকার। আশার দিক হলো দেশে উৎপাদিত হচ্ছে চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ। এসব ওষুধ আমরা বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও করছি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবায় অসংখ্য হাসপাতাল করলাম কিন্তু আমাদের দেখতে হবে মানুষ সেগুলোতে পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে কি না। যদিও এ বিষয়টি কিছুটা ক্রিটিক্যাল। তারপরও আমরা সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে বেডের সংখ্যা ৬০ হাজারে উন্নীত হয়েছে কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ৫ হাজারও ছিল না।

Tag :
About Author Information

Sirajul Islam

‘বেসরকারি হাসপাতালে ৮০ শতাংশই সিজার, মেনে নেওয়া যায় না’

Update Time : 09:32:57 am, Wednesday, 12 April 2023

ডেস্ক রিপোর্র্ট:দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির সংখ্যা বাড়লেও আশঙ্কাজনক হারে সি-সেকশন (সিজার) বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে সিজারের হার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হলেও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সেটি ৮০ শতাংশের কাছাকাছি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমিয়েছি। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোয় ডেলিভারির সংখ্যা বেড়েছে। তবে আশঙ্কাজনক বিষয় হলো সি-সেকশনও অনেক বেশি মাত্রায় বেড়েছে, যার পরিমাণ বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই অনেক বেশি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী একটি দেশে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সিজার মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু এর বেশি কখনোই মেনে নেওয়ার মতো নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। একই সঙ্গে কীভাবে সিজারের পরিমাণ কমিয়ে আনা যায় তার জন্য সবরকম চেষ্টাই আমরা করে যাব।

মন্ত্রী বলেন, আমরা গত মাসে দেশের বেশকিছু হাসপাতালে ইন্সটিটিউশনাল প্র্যাকটিস (বৈকালিক সেবা) কার্যক্রম শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ কার্যক্রম আমরা শুরু করব। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ সরকারি হাসপাতালের বৈকালিক সেবায় চিকিৎসা নিচ্ছে। সেবা পেয়ে একদিকে যেমন জনগণ খুশি, অন্যদিকে যারা সেবা দিচ্ছেন তারাও খুশি।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, হাসপাতালে সেবা দিতে গিয়ে প্রায় সময়ই চিকিৎসকরা নানা সমস্যায় পড়েন। অনেক সময় রোগীর স্বজনদের মাধ্যমে হাসপাতাল ভাঙচুর হয়। এমনকি ভুল বোঝাবুঝির কারণে মারামারি পর্যন্ত হয়। এসব সমস্যার সমাধানে আমরা আগামী সংসদেই স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইনটি পাস করে ফেলার চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শুধু হাসপাতাল বানালেই হবে না, এগুলোতে দক্ষ জনবলও প্রয়োজন। বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিন লাখ লোক কাজ করে। জনবল ও সেবার দিক থেকে আমরা এখন সবচেয়ে বৃহৎ মন্ত্রণালয়। আমাদের চিকিৎসক-নার্স বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু জনবল দিয়েই হবে না, পর্যাপ্ত ওষুধও দরকার। আশার দিক হলো দেশে উৎপাদিত হচ্ছে চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ। এসব ওষুধ আমরা বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও করছি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবায় অসংখ্য হাসপাতাল করলাম কিন্তু আমাদের দেখতে হবে মানুষ সেগুলোতে পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে কি না। যদিও এ বিষয়টি কিছুটা ক্রিটিক্যাল। তারপরও আমরা সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে বেডের সংখ্যা ৬০ হাজারে উন্নীত হয়েছে কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ৫ হাজারও ছিল না।