আবিদ হোসাইন, জুড়ী:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লাঠিটিলার ডোমাবাড়ি গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা খোর্শেদ আলম। ব্যতিক্রমী সব ফসল চাষ করায় অতি আগ্রহী এক কৃষক। এবার পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো চাষ করলেন সানগোল্ড নামের আকর্ষণীয় হলুদ তরমুজ।
বীজপাতা কোম্পানির আবিষ্কৃত নতুন এই প্রজাতির তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর স্বাদ ও তেমন সুমিষ্ট। এলাকায় সাধারণ ক্রেতাদের কাছে সুস্বাদু এই ফলের চাহিদাও অনেক বেশি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে এই তরমুজ সরাসরি দেখতে এবং স্বাদ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুটে গেছেন। অনেকেই প্রথম দেখেছেন এই ফল এবং খেয়েছেনও।
তরমুজ চাষ দেখতে আসা জিল্লু আহমেদ বলেন, আমাদের উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় এমন ব্যতিক্রমী ফসলের চাষ আসলেই সুন্দর। আমি এই তরমুজ খেয়েছি, এটি দেখতে যেমন ভিন্ন তেমনি স্বাদও মিষ্টি, আমি বাড়িতেও নিয়ে যাব এই তরমুজ।
তরমুজ নিতে আসা আমিরাত প্রবাসী সাইফুল্লাহ হাসান বলেন, আমি একজন প্রবাসী। আমরা তরুণরা সবসময় চিন্তা করি কীভাবে দেশত্যাগ করা যায়, দেশে থেকে কি করব। আমি মনে করি এই মনোভাব বদলে যেকোনো তরুণ পতিত জমিতে কৃষিময় এমন নতুন নতুন উদ্যোগ নিলে আর নিজের শ্রম টুকু দিলে খোর্শেদ আলম ভাইয়ের মতো সফল হতে পারবে।
তরুণ উদ্যোক্তা ও কৃষক খোর্শেদ আলম বলেন, আমি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করি এই প্রজাতির তরমুজ। অনেক ভালো ফলনও পেয়েছি, আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে করার প্ল্যান আছে। আমাদের এই এলাকার জমিগুলো তরমুজ চাষের জন্য উপযুক্ত। আমি চাই আমার মতো তরুণরা কৃষিতে ঝুঁকুক, কৃষিখাতে পরিশ্রম করলে দেশেই অনেক কিছু করা সম্ভব। এছাড়াও এখন কৃষি অফিসও কৃষকদের সর্বদা সহযোগিতা করে, সেক্ষেত্রে নতুনরাও শিখবে এবং কৃষিখাত থেকে লাভবান হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম খান বলেন, খোর্শেদ আলম আধুনিক প্রযুক্তির যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তা অন্য কৃষকদের জন্য অনুকরণীয়। মাল্চিং পদ্ধতিতে এ চাষ লাঠিটিলায় ফলনের মান বাড়াবে, অন্যদিকে কৃষকের উৎপাদন খরচও কমাবে। এক্ষেত্রে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
জেলা উপ-পরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ ফরহাদ উদ্দিন বলেন, এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে এমন ব্যতিক্রমী সাফল্য কৃষি বিপ্লবের ইঙ্গিত বহন করছে। আমরা চাই, এ চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে পড়ুক পুরো জেলায়। এতে করে কৃষি অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।