শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন
সৈয়দ আশফাক তানভীর :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কয়েকশত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী রাজার দিঘীর পাড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে বড়শী উৎসবে যোগ দিতে সৌখীন মৎস্য শিকারীরা জড়ো হতে শুরু করেন ।
মঙ্গলবার ভোর ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুরো দিনব্যাপী এ বড়শী উৎসবের আয়োজনে যোগ দেন সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে ৬৫ টি সৌখীন মৎস্য শিকারী দল।
সরেজমিনে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে রাজার দিঘীর পাড়ে দেখা যায়, প্রায় সাড়ে ৭ একর এলাকা জুড়ে রাজার দিঘীর পাড়ে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরী ৬৫ টি মাচাতে বসে প্রায় শতাধিক সৌখীন শিকারী পানিতে বড়শী দিয়ে মাছ ধরার জন্য বসে আছেন।
ইসমাইল হোসেন, অলিউর রহমান , জাহেদুল ইসলামসহ প্রায় ৭ জন সৌখীন শিকারীর সাথে আলাপকালে জানান, সকাল থেকে বড়শী দিয়ে মাছ ধরছেন তাঁরা। রুই, মৃগেল, কাতল, বাউশ মাছ বড়শীতে ধরা পড়লেও ওজন ও আকৃতিতে অনেক ছোট। একেকটি মাছের ওজন সর্বোচ্চ এক কেজি। সারাদিনে কেউ ১০ কেজি আবার কেউ ১৫ কেজি মাছ পেয়েছন।
তাঁরা আরো জানান, এই দিঘীটি এত বড়। আশা ছিলো ৭ থেকে ৮ কেজি ওজনের মাছ বড়শী দিয়ে ধরতে পারবো। এজন্য ভালো বড়শী ও বেশ আদার (মাছের খাবার) নিয়ে এসেছিলাম। বড়শী দিয়ে বড় মাছ শিকারের আনন্দ অন্যরকম। সেই আশা পূরণ হয়নি। দীঘিতে বড় আকৃতির মাছ তেমন নেই। যা আছে সেগুলো ছোট আকৃতির।
দিঘী লিজ গ্রহণকারী মৎস্য সমিতির পরিচালক ও বড়শী উৎসবের আয়োজক জুবের আহমদ জুয়েল জানান, এবারের বড়শী উৎসবে ৬৫ টি মাচায় সৌখিন মৎস্য শিকারী দলের শতাধিক মানুষ অংশ নিয়েছেন। প্রতিটি মাচায় দুইটি করে বড়শী দিয়ে মাছ শিকার করছেন। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে লীজ নেওয়ার দেড় বছর পর এই প্রথমবার বড়শী উৎসবের আয়োজন করি। প্রতিটি মাচার টিকেটের মূল্য ২ হাজার ৫শত টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে বছরে দুই থেকে তিনবার বড়শী উৎসবের চিন্তা ভাবনা করছি।
জুবের আহমদ জুয়েল আরো বলেন, দিঘীর পাশে গোরস্তান ও জনবসতি রয়েছে। এজন্য সংস্কারের অভাবে দিঘীর পাড় ভেঙে গেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি পাড়গুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেন তাহলে ঐতিহ্যবাহী এ দিঘীটি নষ্ট হবেনা। মৎস্য সম্পদও রক্ষা পাবে।
স্থানীয় প্রবীণ রাজনীতিবিদ কমরেড আব্দুল মালিক ও লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম রুবেল জানান, ‘ইতিহাস থেকে জানা যায় বাংলা ১২০০ শতাব্দির দিকে তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের রাজা দেও সিং এটি খনন করেছিলেন। সেই থেকে এটি রাজার দিঘী নামে পরিচিত। ’