1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে কি চাকরী থেকে বঞ্চিত করা যায়?

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ২১৩ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনীতে চাকরির আবেদনকারী এক ব্যক্তি বলছেন, পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় সবগুলো ধাপে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও শুধুমাত্র স্থায়ী ঠিকানা না থাকা এবং ভূমিহীন হওয়ার কারণে তার চাকরি হচ্ছে না বলে তাকে জানানো হয়েছে। এই আবেদনকারীর নাম আসপিয়া ইসলাম। তার বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলায়।জেলা পুলিশ অবশ্য বলছে, নিয়োগ পরীক্ষার সব ফল এখনো তাদের কাছে আসেনি। সে কারণে কারা চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

“তবে জেলা ভিত্তিক নিয়োগের কারণে সংশ্লিষ্ট জেলায় স্থায়ী ঠিকানা থাকাটা এ চাকরির ক্ষেত্রে একটা ক্যাটাগরি,” বরিশালের পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন।ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলছেন যে স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে বা ভূমিহীন হলে সরকারি চাকরি পাবে না এমন কোন আইন দেশে নেই। “বরং এটি সংবিধানের লঙ্ঘন – যার মাধ্যমে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে” বলেন তিনি।

আসপিয়া যা বলছেন

আসপিয়া ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি এবং তাতে সব পরীক্ষাতেই তিনি উত্তীর্ণ হয়ে চাকরিরর জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ বাহিনীতে চাকরীর জন্য নিজ জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে -এমন একটি নিয়মের কারণে তার চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বরিশালের হিজলা উপজেলায় আসপিয়ার পরিবার গত প্রায় দেড় দশক বাস করলেও তাদের স্থায়ী কোন ঠিকানা নেই।

“আমাকে বলা হয়েছে যে নিজস্ব কোন জমি বা ভূমি না থাকায় আমাকে নিয়োগ দেয়ার সুযোগ নেই,” বিবিসিকে বলছিলেন তিনি।বাবা জীবিত থাকাকালে স’ মিলে কাজ করতেন এবং মা গৃহিণী। চার ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় আসপিয়া এইচএসসি পাশ করে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তার বড় কোন অনার্স পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এখন ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করছেন। বড় ভাই একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করেন আর একেবারে ছোটো বোন চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ভোলা জেলায় নিজের বাড়িঘর হারিয়ে আসপিয়ার বাবা পরিবার নিয়ে হিজলায় এসেছিলেন দেড় দশক আগে। “আমাদের কোথাও কোন স্থায়ী ঠিকানা বা জমি নেই। তবে জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে জানিয়েছে এখন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে একটি ঘর আমাদের দেয়া হবে,” বলছিলেন তিনি।

হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ্র কবিরাজ বিবিসিকে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তারা এখন আসপিয়া ইসলামের পরিবারের নামে আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে একটি ঘর বরাদ্দ দেয়ার জন্য কাজ করছেন। কিন্তু স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে সরকারি চাকরি করা যাবে না এমন কোন নিয়ম আছে কি-না – জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিচ্ছে এ প্রশ্নের জবাব তারাই দিতে পারবেন।

পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলছেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে – এটি একটি ক্রাইটেরিয়া বা মানদণ্ড।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে চূড়ান্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নিয়ম চালু আছে – যাতে স্থায়ী ঠিকানা ধরে চাকরি প্রার্থীর পরিচয় যাচাই করা হয়।

এ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ আছে।

জানা গেছে আসপিয়া ইসলামের চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে – জেলায় তার কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই অর্থাৎ তিনি স্থায়ী বাসিন্দা নন।

স্থায়ী ঠিকানা ছাড়া চাকরি হবে না- এমন কোন আইন কি আছে?

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলছেন কোন চাকরির ক্ষেত্রেই এ ধরণের কোন আইন বাংলাদেশে নেই। বরং সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন নাগরিকের সাথে বৈষম্য করা যাবে না।

মিস্টার বড়ুয়া বলেন, এটি পুলিশের ক্ষেত্রে দীর্ঘকালের একটি প্রাকটিস যা শুরু হয়েছে ব্রিটিশ আমল থেকে।

“কোন আইন নেই বরং এটা তাদের ধরে নেয়া একটি নীতি যা আইন অনুযায়ী একটি চরম বৈষম্য মাত্র। কারও ভূমি না থাকলে ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল অনুযায়ী সে সরকারের কাছ থেকে জমি পেতে পারে”।

কিন্তু ভূমিহীন বলে কোন নাগরিককে চাকরি থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ আইনে নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশের বহু জেলায় নদী ভাঙ্গনে বহু পরিবার ঘরবাড়ি হয়েছে। এসব পরিবারের অনেকে ছেলে মেয়ে পরবর্তীকালে শিক্ষিত হয়ে চাকরিও করছে। কিন্তু ভূমিহীন বলে চাকরি না হওয়ার ঘটনা তেমন একটা শোনা যায়নি।

বরিশালের পুলিশ সুপার বলছেন আসপিয়ার ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে বলা যাবে না কারণ নিয়োগ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

স্থায়ী ঠিকানা ও নাগরিক অধিকার

আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও যে কোন কিছুতে আবেদনের ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে আবেদনকারীকে আবেদন ফরমে স্থায়ী ঠিকানার ঘর পূরণ করতে হয়।

চাকরিসহ বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এর উপর ভিত্তি করে প্রার্থী সম্পর্কিত তথ্যাদি যাচাই করে পুলিশ।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলছেন, এটি মূলত আইডেন্টিটি যাচাইয়ের জন্য করা হতো আগে কিন্তু এখন জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন আছে।

তাছাড়া শিক্ষাগত সনদ এবং সামাজিক পরিচিতির উপর ভিত্তি করেই প্রার্থীকে যাচাই করা সম্ভব।

কিন্তু কোন আইন বা বিধি বলেই একজন নাগরিককে স্থায়ী ঠিকানা বা ভূমিহীন হওয়ার কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই।

“সংবিধান কোন নাগরিকের প্রতি বৈষম্য করার অধিকার কোন কর্তৃপক্ষেই দেয়নি। এ ধরণের কোন আইনও নেই। তাই যারা এগুলো করছেন তাদের উচিত প্রাচীন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা,” বলছিলেন মি. বড়ুয়া।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..