বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোটার: কমলগঞ্জে পূর্ব শক্রুতার জের ধরে চৈত্রঘাটে নাজমুল হাসান নিহতের ঘটনায় নেপথ্যের কাহিনী তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার আজ দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব ও অনলাইন প্রেসক্লাবে পৃথক । ভুক্তভোগী আংগুরা বেগম ও তার মেয়ে নার্গিস বেগম লিখিত বক্তব্য জানান- পূর্ব শক্রুতার জের হিসাবে গত ৩১ অক্টোবর নাজমুল হাসান সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় পরদিন তার বড় ভাই শামসুল হক বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উলেখ ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা ( নং- ০১/১৮৩) দায়ের করেন। নাজমুলের মৃত্যুর পর তাদের বাহিনীর লোকজন চৈত্রঘাট বাজারে আহাদ এন্ড সন্স নামীয় দোকানে লুটপাট করে নগদ টাকা, গুদামে রক্ষিত মালামাল,কাগজপত্রসহ সব কিছু নিয়ে যায়। ঐ দিন বিকালে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, পুকুরের মাছ, লুট করে এবং পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে। ঘটনায় নার্গিস বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। বর্তমানে পিবি,আই পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছেন। পিবি,আই পুলিশের সামনে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তাদের ভয়ে কেউ এই সমস্ত ঘটনার স্বাক্ষী দিতে চায় না। পরবর্তীতে তাদের বাহিনীর লোকজন বিগত ৩ নভেম্বর রাতে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে নগদ ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা, ২৫ ভরি স্বর্ন ও মুল্যবান মালামাল লুট করে এবং মেয়েদের শীলতাহানী করে। এর পর থেকেই ভুক্তভোগী পরিবারটি বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনায় মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আংগুরা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। নিহত নাজমুলের ঘটনায় ঢাকায় ও মৌলভীবাজারে র্যাব-পুলিশের পৃথক সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল ও তার সহযোগীদের অতিথ রেকর্ড ভালো ছিলোনা মর্মে স্বীকার করেছেন। ভুক্তভোগী আরো জানান- মৃতঃ নাজমুল এর পরিবার রাজাকার পরিবার হিসাবে এলাকায় পরিচিত। যোদ্ধের সময় অনেক হিন্দুদের ঘরবাড়ি লোটপাট অগ্নিসংযোগ করে। ডাঃ মোঃ ছমরু মিয়া মুক্তিযোদ্ধা থাকার কারনে ঘর-বাড়ি ও দোকানপাট হানাদার বাহিনী নিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনা দেখে এই সময় মোঃ আয়াজ উল্যাহ হার্ড এ্যাটাক্ট করে মারা যান। নাজমুল ও তার সহযোগীরা চাঁদাবাজী, ভূমি জবরদখল, নারীদেরকে যৌন হয়রানীসহ একাধিক অপরাধের সাথে জড়িত। তাদের এহেন আচরন এলাকার লোকজনদের অতিষ্ট করে তুলেছিল। এমন কোন অপরাধ নাই যাহা তারা করেনি। রহিমপুর ইউনিয়নের কতিপয় প্রভাবশালীর ইন্দনে ও যোগসাজশে এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী দ্বারা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে জমি দখল, ধলাই নদীর বালু উত্তোলন, খুন,রাহাজানী,রক্তাক্ত আহত অবস্থায় জখম ইত্যাদি সংগঠিত করিয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রম অবনতি ঘটায়াছে। ১নং রহিমপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ পরিষদ বিগত ২১ জুন এই অবনতিশীল পরিস্থিতির উপর আলোচনা করে এক মত পোষন করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী উলেখ করে হারুনুর রশিদ, আল-আল-আমিন, রুহুল আমিন, সাইফুল ইসলাম, ওয়াশিদ মিয়া, সাজু মিয়া, শাওয়ন মিয়া, নাজমুল মিয়া, রোমান আহমদ, শামসুল মিয়া, হাছান আহমদ, শাহান মিয়া, আকলিছ মিয়া, ফারুক মিয়া, মো:মোস্তাকিনসহ ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে জরুরী ভিক্তিতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি গ্রহনের জন্য র্যব-৯ শ্রীমঙ্গল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলগঞ্জ, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমলগঞ্জ থানায় অনুরোধ করেন। নাজমুল গংদের সংঘটিত কিছু ঘটনার প্রমানসহ জানান- চাঁদার দাবীতে জালাল মেম্বারের ভাই মো: মদরিছ মিয়াকে একাধিক বার প্রাণে হত্যার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা চেয়ে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করেন। চৈত্রঘাট ধলাই নদীর আংশিক অংশ ও রাস্তা জোর পূর্বক দখল করে রেইনবো পোল্ট্রি খামার,হ্যাচারী নির্মান করার চেষ্টা করলে জেলা প্রশাসক এর নিকট মোঃ মদরিছ মিয়া আবেদন করেন। খুন করার চেষ্টার ঘটনায় ১৩জনের নাম উলেখ করে মামলা (নং- ১২৬/১৪, (কমল) হয়। পরবর্তীতে মদরিছ মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্টানে হামলা, লুটপাট ও কুপিয়ে মারাতœক জখম করার ঘটনায় নাজমুল, সামছুলসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা (নং- ১০/ ১৪ইং) দায়ের করেন।
প্রতাপীর ছালিক মিয়া গংদের প্রানে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় নাজমুল, সামছুলসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে
মামলা (নং-১১/১৪ইং) হয়। প্রতাপীর ব্যবসায়ী জিলুর রহমানকে বিগত ২৫/০৭/১৪ ইং মারাতœক জখম করে টাকা ও মোটরসাইকেল ছিনতাই এর ও আহত করার ঘটনায় নাজমুল গংদের বিরোদ্ধে মামলা (নং-২৭৫/১৪ কমলগঞ্জ)হয়। চাঁদা না দেওয়ায় সিরাজ মিয়ার ছ,মিল ভাংচুর করে তাকে প্রানে মারার চেষ্টার ঘটনায় (মামলা নং-১৬/১৫ইং) মামলা হয়। পূনরায় ১৬ইং স,মিল ও দোকান ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় নাজমুল গংদের বিরুদ্ধে (মামলা নং-১৭/১৪ইং) ও ১০৭ ধারায় মামলা হয়। এছাড়াও এই গংদের বিরুদ্ধে মারামারির ঘটনায় ১৫৯/১৪, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ১৩৫/০৮, জি,আর-২৯/১৩,জি,আর-৫৯/১৩, সি,আর-২২৩/১২ মামলা রয়েছে।
বিগত ১৩/০২/.২০২০ইং সকালে চৈত্রঘাট পুরাতন বাজার মের্সাস আব্দুল আহাদ এন্ড সন্স প্রতিষ্টানে চাঁদা চায়। ঐ দিন রাত ৮ টায় চাঁদা না দেওয়ায় আব্দুল মুমিন জুয়েল, তার ভাই রাসেল ও চাচাত্ব ভাই মাসুদকে মেরে মারাতœক ভাবে আহত করে। রাসেলকে অমানবিক ভাবে মেরে মৃত ভেবে পানিতে ফেলে দেয়। সামছুলের ভাই রাজেল তার একটি পা ছিড়ে নিতে চেষ্টা করে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় (মামলা নং-১৬) দায়ের করা হয়। বিগত ০২/০৬/২০২০ইং প্রতাপী জামে মসজিদের সামনে প্রানে হত্যার উদ্দেশ্যে আব্দুল মোমিন জুয়েলকে মেরে পঙ্গু করে দেয়। আব্দুল মুমিন জুয়েলের পা হাড় কেটে ফেলে পাত লাগানো হয়। লাগানো পাত ঢাকায় গিয়ে খোলানোর তারিখ ও পেরিয়ে যাচ্ছে। মামলায় জেলে থাকার কারনে পা টি নষ্ট হওয়ার আশংঙ্খা রয়েছে। কমলগঞ্জ থানায় মামলা নং-১,জি,আর-৯২/২০২০ইং। এছাড়াও এই গংদের উপর একাধিক চাঁদা বাজি, ভূমি জবর দখল, টেন্ডার বাজি সহ একাদিক মামলা রয়েছে। প্রতাপীর জালাল মেম্বার এর চৈত্রঘাট বাজারে স,মিল, দোকান লোটপাটের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তাহার স,মিলের মালপত্র খোলে নিয়ে যায়। তার পুত্র নুরুল মিয়া তাদের অত্যাচারে বিচার না পেয়ে অভিমানে আনুমানিক ৩ বছর পূর্বে আতœহত্যা করে। নাজমুল হত্যা মামলায় জালাল মেম্বারে ২ জামাতা তোফাজ্জল ও তাহির আহমদ তারেক কে আসামী করা হয়। তারা জেল হাজতে আছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করে বলেন- র্যাব-৯ এর গুলিতে নিহত তোফায়েল মিয়া দীর্ঘ দিন যাবৎ দক্ষিন আফ্রিকা বসবাস করে আসছিলেন। উদ্দেশ্য প্রনোনীত ভাবে তাকে মামলায় জড়ানো হয়। তার বিয়ের ১১ দিনের মাথায় নিহত হয়। অপর পুত্র আব্দুল মোমিন জুয়েল, মৃত নাজমুল ও তার সহযোগীদের নির্যাতনে পঙ্গুত্ব বরন করে বর্তমানে জেল হাজতে। নাজমুল হত্যার ঘটনায় যে বা যারা ঘটিয়েছে তার মূল কারন মৃত নাজমুলের অত্যাচারে এলাকার মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। এলাকার মানুষ তাদের চাঁদাবাজি, খুন খারাবি, জমি দখলে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল। এই বাহিনীর কাজ হলো এলাকায় কোন মারামারি বা ঝগড়া বিবাদ ঘটলে লুটপাট করা।