1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

মেয়ে উচ্চ শিক্ষা নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ায় পরিবারকে ‘সমাজচ্যুত’

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৭০৬ বার পঠিত

কুলাউড়া প্রতিনিধি : পরিবারের বড় মেয়ে ঝর্ণা চৌধুরী উচ্চ শিক্ষার জন্য সম্প্রতি গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। আর এটা নিয়ে নিজ এলাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েত ও লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অপবাদ তুলে তাঁর পরিবারকে সমাজচ্যুত করার জন্য বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন। এমন ঘটনাটি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরার কৃষ্ণপুর গ্রামে।

ভুক্তভোগী ঝর্ণার পিতা হাজী আব্দুল হাই চৌধুরী এমন ঘটনা এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন থেকে রক্ষা পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাটেরার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজী আব্দুল হাই চৌধুরী (৭০)। তাঁর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। এর মধ্যে ঝর্ণা চৌধুরী দ্বিতীয় সন্তান। ঝর্ণা ২০০৮ সাল থেকে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পজেটিভ বাংলাদেশে’র সদস্য এবং ২০১৩ সাল থেকে প্রধান সমন্বয়ক ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেন স্থানীয়ভাবে। আর এজন্য এলাকার কিছু মানুষ বিষয়টিকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে নিয়েছিলেন। সিলেটে পড়াশুনার সময় এলাকার মানুষ ঝর্ণাকে নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার শুরু করেন ফেসবুকে। বিষয়টি নিয়ে সিলেটের শাহপরাণ থানায় একটি জিডি করেন ঝর্ণা। ঝর্ণা আইন বিষয়ে সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সম্পন্ন করে গত ২৬ ডিসেম্বর উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানে তাঁর সংগঠনের চেয়ারম্যান জয়তূর্য চৌধুরীসহ কয়েকজনের সাথে তোলা ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করেন। এরপর ঝর্ণার গ্রামের কিছু মানুষ তাঁর বিদেশে যাওয়া ও এমন ছবি তুলে ফেসবুকে প্রকাশ এবং তাঁর জীবনাচরণ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন ফেসবুকে। এদিকে ঝর্ণার পরিবারকে নিয়ে এলাকায় অপপ্রচার ছড়িয়ে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। এলাকার পঞ্চায়েতের লোকজন আব্দুল হাই চৌধুরীর কাছে জানতে চান তাঁর মেয়ে ঝর্ণা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে হিন্দু ছেলে জয়তূর্যর সাথে চলাফেরা এবং ছোট কাপড় কেন পরিধান করে। মেয়ের এমন জীবনাচরণের কারণে তাঁকে এক ঘরে করার হুমকিও দিতে থাকেন।

আব্দুল হাই চৌধুরী বলেন, মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শামসুল ইসলাম মাখন ও সম্পাদক আমীন আলী আমাকে গত শুক্রবার কমিটির শালিসী বৈঠকে গিয়ে আমার মেয়ের এরকম চলাফেরার জবাব দিতে বলেন। আমি অসুস্থ থাকায় বৈঠকে যেতে পারিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা আমাদেরকে সমাজচ্যুত করে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নেন। এমন সিদ্ধান্ত ও মিথ্যা অপপ্রচারের ছড়ানোয় আমরা পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

ঝর্ণা চৌধুরী মোবাইলে বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর আমি ছোট কাপড় পরছি, নাস্তিক হয়ে গেছি ফেসবুকে এমন কুৎসা রটাতে থাকে স্থানীয় একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী। স্থানীয় মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটি অনধিকার চর্চার মাধ্যমে আমার পরিবারকে সমাজচ্যুত করেছেন। এর আগেও আমাকে নিয়ে নানা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। তখন তিনি গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি ব্যবস্থা নেননি। এজন্য ওই গোষ্ঠী আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আমাদের নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করছে। এখন আমিসহ আমার পরিবার সামাজিক হেয় প্রতিপন্ন হয়েছিও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

এ ব্যাপারে কমিটির সভাপতি শামছুল ইসলাম মাখন ও সম্পাদক আমিন মিয়া মোবাইলে বলেন, ঝর্ণার এমন চলাফেরা নিয়ে পঞ্চায়েতের লোকজন আমাদেরকে চাপ দেন। আমরা কমিটির লোকজন তাঁর বাবা আব্দুল হাই চৌধুরীর কাছে দেড় মাস আগ থেকে বিষয়টি জানতে চাই। তিনি আমাদের সাথে আর কোন যোগাযোগ করেন নি। গত শুক্রবার পঞ্চায়েতের লোকজন মসজিদে বসে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি। আমরা তাঁদের সমাজচ্যুত করিনি। তিনি পঞ্চায়েতকে গুরুত্ব দেননি সেহেতু উনি উনার মতো করে চলবেন। আমরা আমাদের মতো চলবো। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি জেনে তাৎক্ষণিক মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদককে সতর্ক করে দিয়েছি। আব্দুল হাই চৌধুরীর পরিবারকে যাতে হয়রানী না করা হয়। ওসি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও নির্দেশ দিয়েছি নজর রাখতে এবং ওই পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..