শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: সবরকম চেষ্টা বিফলে গিয়ে মধ্যরাতে বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় হালির হাওরে তলিয়ে যাচ্ছে বোরো ধান। এতে নষ্ট হয়েছে হাওরের পাকা-আধাপাকা হাজার হেক্টর বোরো ফসলি জমি।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, হালির হাওরে ৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি রয়েছে। সোমবার পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল কাটা হয়ে গেছে।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের আহসানপুর এলাকার হেরাকান্দি গ্রামে ঢলের পানির চাপে ঝুকিতে থাকা বাঁধ ভেঙে হালির হাওরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
হালির হাওরপাড়ের কৃষক মোহাম্মদ রফিজ উদ্দিন বলেন, আমার প্রায় ২৫ শতভাগ জমির ধান কাটা হয়নি। শ্রমিক নাই, ধান কাটতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। আমার দেখা মতে হওরে প্রায় ১০ শতাংশ জমির ফসল এখনও রয়েছে।
জামালগঞ্জ উপজেলার আরেকজন কৃষক মুসলিম মিয়া বলেন, আমি ধান কেটে খলায় রেখে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলাম, রাতে পানির শা শা শব্দে দৌড়ে হাওরে এসে দেখি বান ভেঙে হাওর তলিয়ে আমার খলায় রাখা কাটা ধানগুলো ভাসিয়ে নিয়ে গেছে, আমার সব শেষ, এ বছর বাচ্চাদের নিয়ে কীভাবে খেয়ে বাঁচব?
এর আগে বেহেলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত শামন্ত সরকার ফেইসবুক লাইভে এসে বলেন, আমাদের হালির হাওর রক্ষা করা সম্ভব হলো না, আমাদের সকল চেষ্টা বিফলে, হেরাকান্দি গ্রামের বাঁধ ভেঙে হালির হাওর পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। লাইভে তিনি আশপাশে যারা আছেন তাদের সবাইকে দ্রুত বাঁধটি রক্ষার জন্য আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা বলেন, ভেঙে যাওয়া বাঁধ ও হাওর ঘুরে দেখেছি। বাঁধটি দুর্বল ছিল। দুরমুজ করে নাই। লিকেজ দিয়ে পানি প্রবেশ করে একপর্যায়ে বাঁধটি ভেঙে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল হক জানান, সোমবার রাতে হাসানপুরের বাঁধ ভেঙে হালির হাওরে পানি প্রবেশ শুরু করে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে ভাঙন ঠেকানোর।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, পানি আসার সাথে সাথেই আমরা সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে এতদিন বাঁধ অক্ষত রাখতে পেরেছি। কিন্তু রাতে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে বাঁধের অক্ষত স্থান কীভাবে ভেঙে গেল বুঝে উঠতে পারছি না। এ স্থানে বাঁধ ভাঙার কথা নয়। মূল ক্লোজার এখনও অক্ষত রয়েছে।